বাংলা হান্ট ডেস্ক: বর্তমানে বাংলার রাজনীতি কার্যত উত্তাল হয়ে উঠেছে বগটুই-কান্ডে। এদিকে, এই কাণ্ডে এক্কেবারে প্রথম থেকেই তৃণমূল নেতা তথা ব্লক সভাপতি আনারুল হোসেনের দিকেই আঙুল তুলছিলেন আক্রান্তদের পরিবার। শুধু তাই নয়, আনারুলের নির্দেশেই আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলেও অভিযোগ ওঠে।
তবে, এবার বগটুইর ঘটনাস্থলে গিয়ে আনারুল হোসেনকে গ্রেফতার করার নির্দেশ দিলেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে গিয়ে আক্রান্তদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। আর তারপরই আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন তিনি। পাশাপাশি, এই ঘটনায় এসডিপিও ও আইসি-র গাফিলতি ছিল বলেও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
এছাড়াও, আনারুল যদি ওই পরিবারগুলির আর্জি শুনে পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার ব্যবস্থা করতেন, তাহলে হয়ত এই ঘটনা এড়ানো যেত বলেও দাবি করেছেন মমতা। এদিকে, আনারুলের গ্রেফতারের প্রসঙ্গ তুলে মুখ্যমন্ত্রী জানান যে, “আনারুল আমাদের ব্লক প্রেসিডেন্ট। তাঁর কাছে অভিযোগ জানিয়েছিল ওরা। কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই আনারুলকে গ্রেফতার করা হবে।”
এদিকে, বগটুই-কান্ডে অভিযুক্তদের তালিকায় প্রথমে রয়েছে আনারুল হোসেনের নাম। কিন্তু, কে এই আনারুল? জানা গিয়েছে যে, বীরভূমের রামপুরহাট শহরের কাছে সন্ধিপুর এলাকার বাসিন্দা হলেন আনারুল। এক সময় রাজমিস্ত্রির কাজ করতেন তিনি। পাশাপাশি, প্রথমে তিনি কংগ্রেসের সমর্থক থাকলেও তৃণমূল তৈরি হওয়ার পর থেকে আনারুল যোগ দেন ঘাসফুল শিবিরে।
পাশাপাশি, রাজনীতির ময়দানে নেমে দক্ষ সংগঠক হিসাবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। যার ফলে রামপুরহাটের বিধায়ক তথা রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী ও বিধানসভার বর্তমান ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ হয়ে ওঠেন আনারুল। এছাড়াও, তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলেরও পরিচিত ছিলেন তিনি।
এমতাবস্থায়, তাঁকে রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের সভাপতি নির্বাচিত করে তৃণমূল। এক কথায় আনারুলের আওতাতেই ছিল বগটুই গ্রাম। এককালে রাজমিস্ত্রি থেকে বর্তমানে রীতিমত তৃণমূলের দোর্দণ্ডপ্রতাপ নেতায় পরিণত হয়েছিলেন আনারুল। যদিও, দলের লোক হলেও বৃহস্পতিবার বগটুই গ্রামে উপস্থিত হয়ে সেই আনারুলের বিরুদ্ধেই একরাশ ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।