বাংলা হান্ট ডেস্ক : আজ শুক্রবার দু’দিনের সফরে রাজ্যে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) এই সফরে সাংগঠনিক বৈঠক থেকে দক্ষিণেশ্বরে পুজো দেওয়ার মতো একাধিক কর্মসূচি থাকলেও তাঁর মূল লক্ষ্য বীরভূমের সিউড়িতে শুক্রবারের সমাবেশ। তিহাড় জেলে বন্দি তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) জেলায় শাহের এই সফরের কারণ নিয়ে অনেক জল্পনা থাকলেও আসলে অঙ্ক কষেই বীরভূমে (Birbhum) সভার আয়োজন বিজেপির (BJP)।
২০২২ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলায় ১৯টি হেরে যাওয়া আসনে আগামী লোকসভা নির্বাচনে ভাল ফল করার লক্ষ্য নির্ধারণ বেছেছিল বিজেপি। রাজ্য নয়, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই বেছে নেন সেই আসনগুলি। সেই সংখ্যাটা প্রথমে ছিল ১৯। পরে তা বাড়িয়ে ২০ করা হয়। শুধু বাংলায় নয়, গোটা দেশে প্রথমে ১৪৪ আসন বেছেছিল বিজেপি। পরে তা বেড়ে ১৬০ হয়। এই আসনগুলিতে গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি বা শরিক দল জেতেনি। ২০১৯ সালে দেশে বিজেপি জিতেছিল মোট ৩০৩টি আসনে। হেরে যাওয়া আসনের থেকে আবার বাদ দেওয়া ‘অতি কঠিন’ কিছু আসন। তেমন এই রাজ্যেও রয়েছে।
প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে জেতে ১৮টি আসন। তার মধ্যে আসানসোল ইতিমধ্যেই হাতছাড়া। ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহও তৃণমূলে চলে গিয়েছেন। খাতায়কলমে ১৭টি আসন এখনও বিজেপির দখলে রয়েছে। তবে বিজেপির নতুন লক্ষ্যে আসানসোল বা ব্যারাকপুর নেই। বাকি আসনের মধ্যে ‘অতি কঠিন’ হিসাবে চিহ্নিত মুর্শিদাবাদের বহরমপুর, জঙ্গিপুর এবং মুর্শিদাবাদ, উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাট এবং বারাসত। এর বাইরে যে ২০টি আসন রয়েছে, সেগুলির দায়িত্ব আবার ভাগ করে নিয়েছেন দলের দুই শীর্ষ নেতা— শাহ এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডা।
প্রাথমিক ভাবে এই আসনের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয় ১৩ জন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উপরে। আসনগুলিতে সংগঠনের অবস্থা জানতে সফর চালান ওই মন্ত্রীরা। তাঁদের থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পর ১০টি আসনে নড্ডা এবং ১০টি আসনের দায়িত্ব শাহ নেবেন বলে বিজেপি সূত্রে জানা যায়। ২০১৯ সালের ফলাফলের হিসাবে এর মধ্যে যেই আসনগুলি তুলনামূলক ভাবে বিজেপির জয়ের জন্য ‘সহজ’, সেগুলি দিয়েই শুরু হবে নড্ডা ও শাহের সফর।
এর আগে, তিনটি কেন্দ্রে সভা করে গেছেন নড্ডা। সেগুলি হল কৃষ্ণনগর, বর্ধমান পূর্ব এবং কাঁথি। কৃষ্ণনগর আসনে ১৯৯৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির টিকিটে সদ্যপ্রয়াত সত্যব্রত মুখোপাধ্যায় জিতেছিলেন। সে বার তৃণমূলের সঙ্গে জোট ছিল বিজেপির। গত লোকসভা নির্বাচনে বিজেপির প্রার্থী কল্যাণ চৌবে তৃণমূলের মহুয়া মৈত্রের কাছে হেরেছিলেন ৬৩,২১৮ ভোটে। তবে তেহট্ট, কৃষ্ণনগর উত্তর, কৃষ্ণনগর দক্ষিণ আসনে এগিয়ে ছিল বিজেপি।