বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বুধবার রাজ্য বিধানসভায় (State Assembly) বাংলায় বাজেট অধিবেশন নিয়ে ধুন্ধুমার। সি ভি আনন্দ বোসের (CV Ananda Bose) ভাষণ ঘিরে নজিরবিহীন বিক্ষোভে সামিল বিজেপি বিধায়করা (BJP MLA)। বাংলাকে অনেক ক্ষেত্রে ব্রাত্য রেখেছে কেন্দ্র, এমনটাই শোনা গেল রাজ্যপালের ভাষণে। রয়েছে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার নানা অভিযোগ। প্রথাগত ভাবে রাজ্য সরকারের লিখিত ভাষণ পাঠ করার প্রথা রয়েছে। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে রাজ্যপাল উপলক্ষ্য মাত্র। তবে রাজ্যপালের এই বক্তব্য নিয়েই গতকাল উত্তাল হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর।
রাজ্যের নয়া রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। এটাই বিধানসভায় তার প্রথম ভাষণ। বিধানসভায় বছরের প্রথম অধিবেশন শুরু হয় বাজেট অধিবেশনের মাধ্যমে। আর অধিবেশনের শুরু হয় রাজ্যপালের ভাষণ দিয়ে। রাজ্য সরকারের বক্তব্যই ভাষণ আকারে পাঠ করেন রাজ্যপাল। সেইমতই এদিন বিধানসভায় ভাষণ পাঠ করেন রাজ্যপাল। আর সেখানেই বিপত্তি।
বাংলায় বাজেট অধিবেশনের শুরুতেই রাজ্যপালের ভাষণকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে বিধানসভা চত্বর। তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে সরব হন বিরোধীরা। ক্রমাগত চোর ধরো জেল ভরো শ্লোগান তুলতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। প্রায় ২০ মিনিট ধরে বিধানসভার ভিতরে বিক্ষোভের পর বাইরেও চলে বিক্ষোভ। এদিন রাজ্যপালের বক্তব্যের শুরু থেকে শেষ পর্যন্তই উত্তাল থাকে বিধানসভা।
তবে কী এমন পাঠ করলেন রাজ্যপাল? যাতে এত উত্তেজিত হয়ে উঠলেন গেরুয়া বিধায়করা? রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস গতকাল তাঁর লিখিত ভাষণে বলেন , ”আমার সরকার রাজ্য পরিচালনার ক্ষেত্রে যে সমস্ত অত্যন্ত জনপ্রিয় ও জনমুখী নীতি অবলম্বন করেছে তার ফলে এই রাজ্য সাধারণ মানুষের প্রাথমিক চাহিদাগুলি মেটানোর নিরিখে দেশের মধ্যে অগ্রণী রাজ্যগুলির অন্যতম হয়ে উঠেছে।” রাজ্যপালের ভাষণে “আমার সরকার” কথাটি উচ্চারিত হয় বেশ কয়েকবার।
শুধু তাই নয়, এরপর রাজ্যপাল বলেন, “যে তিনটি ক্ষেত্রে এ বছর আমরা বিশেষ সাফল্য অর্জন করতে পারিনি সেগুলি হল — এম জি এন আর ইজিএ, গ্রামীণ আবাসন ও গ্রামীণ সড়ক। ২০২১ – ২২ সাল পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গ এই ক্ষেত্রগুলিতে প্রথম স্থানে ছিল। কিন্তু, এ বছর রাজ্য এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের কাছ থেকে তার প্রাপ্য টাকা পায়নি। ১১ হাজার ৮০০ কোটি টাকারও বেশি পাওনা বকেয়া হয়ে রয়েছে।”
কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে অর্থ বরাদ্দ না করার এই অভিযোগ অভিযোগ রাজ্যপালের মুখে শুনেই রেগে বোম হন বিজেপি বিধায়করা। রাজ্যপালের মন্তব্যের তীব্র সমালোচনায় সরব হয় বিজেপি। প্রসঙ্গত, পূর্বে অধিবেশনের আগে রাজ্যের তৈরি ভাষণের কপি ২ দফায় নবান্নের কাছে চেয়ে পাঠিয়েছিলেন তৎকালীন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যের তৈরি ভাষণ তাঁর পক্ষে ভাষণ পাঠ করা সম্ভব হবে না বলেও রাজ্যকে জানিয়েছিলেন তিনি। তবে এবার ভাষণের ছত্রে ছত্রে রাজ্য সরকারের কাজের প্রশস্তির বিষয়টি নিয়েই বিতর্কের সূত্রপাত।