অশান্তির ঘটনায় কড়াকড়ি কেন্দ্রের, বঙ্গ BJP-র ও বড় দাবি! বোস সিদ্ধান্ত নিলে কী হতে পারে বাংলায়?

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ রামনবমীর শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার রাজ্যে বিভিন্ন এলাকায় অশান্তির সৃষ্টি হয়। পাশাপাশি একদিন আগেও শোভাযাত্রা ঘিরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হুগলীর রিষড়া অঞ্চল। যা নিয়ে তোলপাড় রাজ্য-রাজনীতি। অভিযোগ, পাল্টা-অভিযোগে উত্তপ্ত বাংলা। গতকাল রাজ্যের সাম্প্রতিক অশান্তির ঘটনায় রাজভবনে দরবার করে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপের দাবি জানিয়েছে বঙ্গ বিজেপি (Bengal BJP)। এবার রাজ্যের পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসের (Governor CV Ananda Bose) কাছে ৩৫৫ অনুচ্ছেদ (Article 355) জারির আর্জি জানিয়েছে রাজ্য বিজেপি।

মমতা শাসনকালে পূর্বে বহুবার রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির আবেদন জানিয়েছে এসেছে রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। তবে এ বার আর ৩৫৬ নয়, রাজ্যপাল বোসের কাছে ৩৫৫ অনুচ্ছেদ জারির আর্জি বঙ্গ বিজেপির। তবে জানা গিয়েছে, গোটা রাজ্যে নয় এই ধারা জারির আর্জি জানাবো হয়নি, বর্তমান পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র অশান্ত হাওড়ার শিবপুর এবং হুগলি জেলার রিষড়া থানা এলাকায় তা জারির আবেদন করা হয়েছে।

বিজেপি সূত্রে খবর, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যের এই দু’টি এলাকায় সংবিধানের ৩৫৫ অনুচ্ছেদ জারির জন্য কেন্দ্রকে যাতে রাজ্যপাল চিঠি পাঠান, সেই দাবিই তুলে ধরেছে। এই বিষয়ে রাজভবন থেকে বেরিয়ে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘সাংবিধানিক প্রধান তাঁর সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রয়োগ করে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে রিপোর্ট না চেয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য দিল্লিকে জানান। শিবপুর থানা, রিষড়া থানা এলাকায় ৩৫৫ ধারার আওতায় ‘উপদ্রুত’ ঘোষণা করা হোক। আগামী দেড় মাসের জন্য ওই থানাগুলিকে আধা সামরিক বাহিনীর হাতে তুলে দেওয়া হোক। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকে রাজ্যপাল এই প্রস্তাব দিন। তা হলে বুঝব, উনি কিছু করে দেখাতে চাইছেন।’’

শুভেন্দুর এই দাবির পর মুখ খোলেন রাজ্যপাল। মঙ্গলবার সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘‘এটা তো একটা দাবি। বিরোধী দলনেতার এই ধরনের দাবি করার অধিকার আছে। বিরোধীদের কাজই হল বিরোধিতা করা। তাই বিরোধী দলনেতা কিছু দাবি করছেন, এটা গণতন্ত্রে খুব স্বাভাবিক। রাজ্যপাল হিসাবে আমি সংবিধানের পথেই হাঁটব।’’

cv bose

প্রসঙ্গত,হাওড়ায় অশান্তির পরই রাজ্যপালকে ফোন করে ঘটনার কথা শুনেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। শাহর কথা হয় সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গেও। বিজেপি নেতৃত্ব দাবি করছে ৩৫৫ এর? তবে রাজ্যের কিছু ‘বাছাই’ করা জায়গায় কী তা প্রয়োগ করা সম্ভব? প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি এমন করার সংস্থান সংবিধানে রয়েছে। এই বিষয়ে অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির কথায়, “এমনটা করা যায়। তবে সবটাই নির্ভর করছে রাজ্যপাল কেমন রিপোর্ট দিচ্ছেন তার উপরে।’’

তবে সাধারণভাবে এমন হয় না বলেই জানান তিনি। বিচারপতির মতে, “ওই অনুচ্ছেদ অনুসারে কোনও বিশেষ অংশে ৩৫৫ জারি করা যায়। এই অনুচ্ছেদ অনুসারে রাজ্যের সরকারকে ভেঙে না দিয়ে প্রশাসন যাতে সংবিধান মেনে চলে, তা নিশ্চিত করতে কিছু কিছু নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।’’ অর্থাৎ বাখ্যা অনুসারে, ৩৫৬ প্রয়োগ করে যেমন কোনও প্রাদেশিক সরকারকে ফেলে দেওয়া যায়৷ অন্যদিকে, ৩৫৫ অনুচ্ছেদ হল ‘ঢাল’, যা অরাজক পরিস্থিতি থেকে রাজ্য সরকারকে রক্ষার জন্য কেন্দ্রের সরকারকে দায়বদ্ধ করে তোলে৷


Sharmi Dhar
Sharmi Dhar

শর্মি ধর, বাংলা হান্ট এর রাজনৈতিক কনটেন্ট রাইটার। উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর। বিগত ৩ বছর ধরে সাংবাদিকতা পেশার সঙ্গে যুক্ত ।

সম্পর্কিত খবর