হঠাৎই অরুণাচলে কেন সীমান্ত টপকে ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে পড়ল চিনের লাল ফৌজ? জেনে নিন আসল কারণ

বাংলাহান্ট ডেস্ক : উত্তপ্ত অরুণাচল প্রদেশের ভারত-চিন সীমান্ত (Indo – China Border)। এই এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে স্পর্শকাতর থাকলেও, ১৯৬২ সালের পর অরুণাচল সীমান্ত টপকে ভারতীয় জমিতে প্রবেশের সাহস দেখায়নি লাল ফৌজ। কিন্তু গত ৯ ডিসেম্বরই বদলে যায় সব কিছু। রাতের অন্ধকারে চোরের মতো তাওয়াংয়ে প্রবেশ করে প্রায় ৩০০ চিনা সেনা। বেশ কয়েক দিন আগে থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় তৈরি ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীও। অনুপ্রবেশের কড়া জবাব দেয় তারা। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে শুরু হয় সংঘর্ষও। তবে এই মুহুর্তে সীমান্তে পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে বলেই জানানো হয়েছে দুই দেশের বিদেশ মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। তবে এটপরই প্রশ্ন উঠছে হঠাৎ কী কারণে সংঘর্ষ হল ভারত-চিনে সেনার মধ্যে? কেনই বা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা লঙ্ঘন করল চিন?

ভারতীয় সেনা সূত্রে চিনের অনুপ্রবেশের কারণ নিয়ে এখনও অবধি কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে বিশেষ সূত্রে জানা যাচ্ছে, অরুণাচল প্রদেশে বিগত কয়েক বছর ধরে পর্যটক ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের যাতায়াত বৃদ্ধি পায়। যা চিনের অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াংয়েই রয়েছে তিব্বতী বৌদ্ধদের পবিত্র ধর্মীয় স্থান ইয়াৎসে। এই জায়গা পর্যটকদের কাছে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছেই অবস্থিত এই ধর্মীয় স্থানে যাতায়াতের সুবিধার জন্য ভারত সরকার পরিকাঠামোর উন্নয়নও করতে শুরু করে। এরপরই চিনের কপালে ভাঁজ পড়ে। গত ৯ ডিসেম্বরের অনুপ্রবেশের অন্যতম কারণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহল।

1234.png

ভারতীয় সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, চিনের পিপলস লিবারেশন আর্মির পরিকল্পনা ছিল প্রবল ঠাণ্ডার সুযোগ নিয়ে বরফ আবৃত ইয়াৎসে পোস্ট দখল করে নেওয়ার। ২০১৫ সাল অবধি এই অঞ্চলে শীতকালে কড়া নজরদারি না থাকলেও, বিগত কয়েক বছর ধরে চিনের আগ্রাসন নীতির কারণেই প্রবল ঠাণ্ডার মধ্যেও সেনা মোতায়েন রাখা হচ্ছে সীমান্তে। ৯ ডিসেম্বরের রাতে চিনের ৩০০ সেনা যখন অনুপ্রবেশের চেষ্টা করেছিল, সেই সময় সীমান্তে এত সংখ্যক ভারতীয় সেনা যে উপস্থিত থাকবে, তা বোধও ধারণাও করতে পারেনি চিন। সূত্রের খবর, ইয়াৎসের কাছে অবস্থিত চুমি ঝর্ণার কাছে চিন সিসিটিভি ক্যামেরা, প্রজেক্টর ও বড় স্ক্রিন লাগানোর চেষ্টা করেছিল।

প্রসঙ্গত, ২০০৮ সালে ইয়াৎসে প্রদেশেই চিন একটি বুদ্ধের মূর্তি ভেঙে দেয়। এর পরই দুই দেশের মধ্যে পরিস্থিতি অত্যন্ত খারাপ জায়গায় চলে যায়। কয়েক বছর আগে তাওয়াংয়ে একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠানে উপস্থিত হন তিব্বতী ধর্মগুরু দলাই লামা। দলাই লামার সেই সফর নিয়ে তীব্র আপত্তি ছিল বেজিং-এর। এরপর ভারত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা লাগোয়া অরুণাচল প্রদেশের ওই অংশে রেল যোগাযোগের কথা ঘোষণার করে। সেই বিষয়েও আপত্তি তোলে চিন।


Sudipto

সম্পর্কিত খবর