বাংলা হান্ট ডেস্ক: একটা সময়ে সমগ্ৰ দেশজুড়েই ৫ টাকার পুরোনো মোটা কয়েনের (5-Rupee Coin) বহুল ব্যবহার পরিলক্ষিত হয়েছে। এমনকি, কয়েক বছর আগে পর্যন্তও বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে দেখা মিলত এই কয়েনের। কিন্তু, বর্তমান সময়ে এই কয়েন আর চোখে পড়েনা বললেই চলে। এদিকে, এই কয়েনের “উধাও” হয়ে যাওয়ার পেছনে রয়েছে এক চাঞ্চল্যকর কারণও। মূলত, কিছু অসাধু ব্যক্তি এই কয়েনের অপব্যবহার শুরু করে।
এমতাবস্থায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক (Reserve Bank Of India) এই বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে এই কয়েনটিকে বন্ধ করে দেওয়াটাই ঠিক বলে মনে করে। তবে, এখন প্রশ্ন উঠতেই পারে, ঠিক কি এমন ঘটেছিল যে, পুরোনো ৫ টাকার কয়েনকে রীতিমতো বন্ধই করে দিতে হল? বর্তমান প্রতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল।
উল্লেখ্য যে, ৫ টাকার পুরোনো কয়েনগুলি ছিল বেশ মোটা এবং সেগুলি তৈরিতে বেশি ধাতু ব্যবহার করা হত। পাশাপাশি, ওই কয়েনগুলিকে বলা হত Cupro-Nickle সার্কুলার কয়েন। এমতাবস্থায়, এগুলির ওজন ছিল ৯ গ্রাম। এদিকে, যে ধাতু থেকে এই মুদ্রাগুলি তৈরি করা হত, সেই ধাতু থেকেই শেভ করার জন্য যে ধারালো ব্লেড ব্যবহার করা হয় সেগুলিও তৈরি করা যায়। আর এই কারণেই কিছু অসাধু ব্যক্তি এই কয়েনকে ভুলভাবে ব্যবহার করতে শুরু করে। জেনে অবাক হবেন যে, একটিমাত্র কয়েন থেকেই ৬ টি ব্লেড তৈরি করা সম্ভব। যেগুলির প্রতি পিস ২ টাকায় বিক্রি হত।
৫ টাকার পুরোনো কয়েনের অবৈধ পাচার: মূলত, বেশি পরিমাণে ধাতব সামগ্রীর কারণে, এই ৫ টাকার কয়েন অবৈধভাবে পাচার করে বাংলাদেশে পাঠানো হচ্ছিল। সেখানে এই কয়েন গলিয়ে ওই ধাতু দিয়ে ব্লেড তৈরি করা হত।
এই সিদ্ধান্ত নেয় RBI: এমতাবস্থায়, যখন এই কয়েনগুলি হঠাৎ করেই বাজার থেকে কমতে শুরু করে তখন সরকার এই পুরো বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়। তারপরেই রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ৫ টাকার কয়েনগুলিকে আগের থেকে অনেকটাই পাতলা করে দেয়। পাশাপাশি, বাংলাদেশিরা যাতে ব্লেড তৈরি করতে না পারে সেজন্য কয়েন তৈরিতে ব্যবহৃত ধাতুও পরিবর্তন করা হয়।
এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, যেকোনো কয়েনের মূল্য সারফেস ভ্যালু এবং মেটাল ভ্যালুর মাধ্যমে দু’টি উপায়ে মূল্যায়ন করা হয়। মুদ্রায় লেখা মান হল সারফেস ভ্যালু। পাশাপাশি, মেটাল ভ্যালু হল মুদ্রা তৈরিতে ব্যবহৃত ধাতুর মূল্য। এমতাবস্থায়, ৫ টাকার পুরোনো কয়েন গলানোর সময় তার মেটাল ভ্যালু সারফেস ভ্যালুর চেয়ে বেশি ছিল। যার সুযোগ নিয়েছিল কিছু অসাধু ব্যক্তি ও চোরাকারবারিরা।