বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ক্ষমতার বশবর্তী এবং লোভের শিকার হয়ে চীন (China) বর্তমানে নিজেদের সবথেকে শক্তিশালী দেশ গণ্য করে সমগ্র বিশ্বে নিজেদের কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছে। বর্তমান বিশ্বে সবথেকে বেশি জনসংখ্যার দেশ হল এই চীন। যেখানে প্রায় ১.৪০৪ বিলিয়ন মানুষের বাস এবং ৯৬ লক্ষ স্কোয়ার কিমির দেশ হল চীন, যা আমেরিকার থেকেও আয়তনে বৃহৎ।
কিন্তু এতকিছু থাকা সত্ত্বেও কেন চীন বিশ্বের সমস্ত দেশের উপর নিজের আধিপত্য বিস্তার করতে চায়? তাঁর কারণ হল খনিজ পদার্থ। যেসব দেশে খনিজ পদার্থ বেশি পরিমাণে উত্তোলন করা হয়, চীন সেই সব দেশকে নিজের টার্গেট হিসাবে ধরে নেয়। তাঁদেরকে বোঝানোর চেষ্টা করে প্রাচীনকালে এটি তাদেরই অংশ ছিল।
তিব্বত– ভারত, নেপাল এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক যুক্ত এই তিব্বত (Tibet) দেশের জল পরিষেবা অনেক উন্নতমানের। এমনকি সেখানে হাজার বছর পুরোন মনুমেন্ট রয়েছে। তাই চীন দীর্ঘ সময় ধরে এই ঐতিহাসিক স্থানে নিজের আধিপত্য বিস্তারে সচেষ্ট রয়েছে। আবার তিব্বতের থেকে নির্গত দুই নদী থেকেই চীনে জল সরবহার হয়। অন্যদিকে চীন ভালোভাবেই জানে তিব্বত যদি এখন ভারতের অধীনে চলে যায়, তাহলে তাঁদের অবস্থা ক্রমশই খারাপ হয়ে যাবে। তাই যে করেই হোক চীন সরকার তিব্বতের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব ফলাতে চাইছে।
অরুণাচল প্রদেশ– ভারতের এই অংশটিকে চীন সর্বদা তাঁদের নিজেদের দখলে আনার চেষ্টা করে। কারণ এই অংশে প্রাকৃতিক খনিজ পদার্থ অর্থাৎ প্রচুর পরিমাণে সোনা এবং লিথিয়াম রয়েছে। প্রায় ৬০ বিলিয়ন অর্থের সম্পদ রয়েছে সেখনে।
আকসাই চীন– ১৯৬২ সালে ভারত- চীনের যুদ্ধে দুর্বল ভারতকে মাত দিয়ে এই অংশকে চীন নিজেদের দখলে করে নিয়েছিল। ভূমি থেকে ১৭০০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত এই এলাকা থেকে যুদ্ধকালীন সময়ে চীন নিরাপত্তা বোধ করে।
দক্ষিণী চীন সাগর– বহু বছর ধরে চীন এই সমুদ্রের উপর নিজেদের কর্তৃত্ব করে আসছে। এই অঞ্চলের মাধ্যমেই চীন এশিয়া, ইউরোপ এবং আফ্রিকার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ব্যবসায়িক বৃদ্ধি করে চলেছে। আবার এই অংশ তেল, গ্যাসের ভাণ্ডার এবং সামুদ্রিক খাবারে ভরপুর। সেই কারণে চীন চায় সেখানে তাঁদের কর্তৃত্ব ফলাতে।
তাইওয়ান– ১৬৮৩-১৮৯৫সাল পর্যন্ত চীনের পূর্বপুরুষরা তাওয়ানের উপর রাজ করলেও, বর্তমানে একটি আলাদা লোকতান্ত্রিক দেশ হিসাবে পরিচিত। আজকের দিনে তাইওয়ানের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে সেনা এবং যুদ্ধের অস্ত্রশস্ত্র রয়েছে। আমেরিকার থেকে প্রাপ্ত আধুনিক মানের অস্ত্র এবং কম্পিউটার নির্মাণে বিশ্বে প্রথম স্থান দখল করায় চীন সর্বদাই তাওয়ানের উপর নিজের শাসন কায়েম রাখতে চায়। এবং নিজেদের অংশ বলেই মনে করে।
হংকং– বর্তমানে চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জারী থাকলেও, হংকং-এর উপর চীন নিজের শক্তি বৃদ্ধি করতে চায়। ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত হংকং ব্রিটিশ শাসনের অধীনে থাকলেও, চীনকে তাঁদের অধিকার দেওয়া হয়। কিন্তু হংকংবাসী আগামী ৫০ বছর অবধি নিজেদের মর্জির মালিক থাকতে চাইলেও, চীন তাঁদের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করেই চলেছে।