কেন পালিত হয় মকর সংক্রান্তি? এর পেছনে থাকা কারণগুলি জানলে চমকে উঠবেন

বাংলা হান্ট ডেস্ক: হিন্দুদের (Hindu) কাছে নতুন বছরেই যে পার্বণটি সবার প্রথমে আসে সেটি হল মকর সংক্রান্তি (Makar Sankranti)। যেটি পৌষ সংক্রান্তি হিসেবেও সমধিক পরিচিত। এই সময়ে বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠানের পাশাপাশি বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের দিকে বহু মেলা বসে। এই বছর ১৫ জানুয়ারিতে পড়েছে মকর সংক্রান্তি। তবে, এই দিনটির বিশেষ কিছু তাৎপর্যও কিন্তু রয়েছে। অনেকেই সেগুলি সম্পর্কে জানেন না। বর্তমান প্ৰতিবেদনে এই প্রসঙ্গে বিস্তারিত তথ্য উপস্থাপিত করা হল। প্রথমেই জানিয়ে রাখি যে, মকর সংক্রান্তির দিন গ্রহদের রাজা সূর্য দেবতা ধনু রাশি থেকে বেরিয়ে মকর রাশিতে প্রবেশ করেন।

এমতাবস্থায়, এক রাশি থেকে অন্য রাশিতে সূর্যের এহেন পরিবর্তনকে বলা হয় সংক্রান্তি। এদিকে, একটি সংক্রান্তি থেকে শুরু করে অন্য সংক্রান্তির মধ্যবর্তী সময়টিকে সৌর মাস হিসেবে বিবেচিত করা হয়। সমগ্ৰ বছরে এমন মোট ১২ টি সংক্রান্তি থাকলেও মকর সংক্রান্তিকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। পৌষ মাসে উত্তরায়ণের পর যখন সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে সেই সময়টিতেই মকর সংক্রান্তি ঘটে।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, সাধারণভাবে চন্দ্রের গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে ভারতীয় ক্যালেন্ডারের সমস্ত তারিখ নির্ধারিত হলেও মকর সংক্রান্তি এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম। কারণ, এই সংক্রান্তি সূর্যের গতিবিধির ওপর ভিত্তি করে নির্ধারিত হয়। এই বিশেষ দিনটিতে পবিত্র নদীতে স্নান করার পরে কোনো কিছু দান করা শুভ বলে মনে করা হয়। এর পাশাপাশি মকর সংক্রান্তির দিনে খরমাস শেষ হয় এবং এক মাসের জন্য নিষিদ্ধ শুভ কাজগুলি আবার শুরু হয়।

Why is Makar Sankranti celebrated

তবে, শুধু ধর্মীয় দিক থেকেই নয়, বরং বিজ্ঞানেও মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব অপরিসীম। মূলত, পৃথিবীর অক্ষ ২৩.৫ ডিগ্রি হেলে থাকার কারণে, সূর্য ছয় মাস পৃথিবীর উত্তর গোলার্ধের কাছে এবং বাকি ছয় মাস দক্ষিণ গোলার্ধের কাছে থাকে। এমতাবস্থায়, মকর সংক্রান্তির আগে, সূর্য দক্ষিণ গোলার্ধের কাছাকাছি তথা উত্তর গোলার্ধ থেকে অপেক্ষাকৃত দূরে থাকে। যার ফলে উত্তর গোলার্ধে রাত দীর্ঘ হয় এবং দিন ছোট হয়। অর্থাৎ, এটি শীতকাল হিসেবে বিবেচিত হয়। অপরদিকে, মকর সংক্রান্তি থেকে, সূর্য উত্তর গোলার্ধের দিকে অগ্রসর হতে শুরু করে। তাই এই দিন থেকে উত্তর গোলার্ধে রাতগুলি ক্রমশ ছোট এবং দিন দীর্ঘ হতে শুরু করে। ফলে ঠান্ডা কমতে শুরু করে।

আরও পড়ুন: ভারত-মালদ্বীপ বিতর্কের আবহেই ভাইরাল ধোনির ভিডিও, কোথায় বেড়াতে যেতে চান জানিয়ে দিলেন মাহি

মকর সংক্রান্তির গুরুত্ব: মকর সংক্রান্তির আয়ুর্বেদিক গুরুত্বও রয়েছে। এই বিশেষ দিনটিতে প্রধানত চাল, তিল ও গুড় দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া হয়। এমতাবস্থায়, তিল এবং গুড় থেকে তৈরি খাবারগুলি স্বাস্থ্যের উন্নতি করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।

আরও পড়ুন: ভারতের এক সিদ্ধান্তেই ঘুম উড়েছে কাঙাল পাকিস্তানের! হাহাকার পড়শি দেশের জনগণের মধ্যে

মকর সংক্রান্তির ধর্মীয় তাৎপর্য: এবারে আসি মকর সংক্রান্তির অন্যতম দিক তথা ধর্মীয় তাৎপর্যের বিষয়ে। এই দিনে গঙ্গা স্নান সহ সূর্যের পুজো এবং তীর্থস্থানে দান করা বিশেষভাবে শুভ বলে মনে করা হয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বাস অনুযায়ী এই দিনের প্রদত্ত অনুদান শতগুণ হয়ে ফেরত আসে। এদিকে, মকর সংক্রান্তির দিনে তিলের বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। বলা হয় যে, তিল মিশিয়ে জলে স্নান করলে এবং তিলের তেল দিয়ে শরীরে মালিশ করলে পুণ্য হয় এবং পাপও ক্ষয় হয়।

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর