বাংলাহান্ট ডেস্ক : ঘরে রয়েছে স্বামীসহ দুই সন্তান। তবুও পরপুরুষের প্রেমে মজেছেন স্ত্রী। আর স্ত্রীর এই পরকীয়ায় (Extramarital affair) বাধা দিতে গিয়ে ঘটে গেল বড়সড় অঘটন। ‘স্বামী’ নামক পথের কাঁটাটিকে সরাতে প্রেম দিবসের দিনে ভয়াবহ কান্ড ঘটিয়ে ফেললেন স্ত্রী। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ডালের মধ্যে ঘুমের ওষুধ মেশানোর পাশাপাশি অণ্ডকোষ টিপে শ্বাসরোধ করে স্বামীকে খুন (Murder) করার অভিযোগ উঠল বধূ ও তার প্রেমিকের বিরুদ্ধে। নৃশংস এই হত্যাকাণ্ডটি ঘটেছে পূর্ব মেদিনীপুরের (East Midnapore) ময়নায়। ইতিমধ্যেই, পুলিশ দুই অভিযুক্তকে হাতে নাতে গ্রেপ্তার করেছে।
মৃত যুবক তুষারকান্তি বেরার (৪৯) বাড়ি ময়না থানার রায়চক এলাকায়। দীর্ঘদিন ধরে কারখানায় কাজ করার জন্য বছর সাত আগে তুষারকান্তির টিবি। সেই সময় থেকেই চিকিৎসকের কথা মত, স্বামীর সাথে একই খাটে থাকতেন না স্ত্রী তনুশ্রী বেরা। তবে অসুস্থ স্বামীর পরিচর্চার পাশাপাশি তনুশ্রী সেইসময় বাড়িতেই একটি গ্রামীণ ব্যাংকের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্র খোলেন। এরপর, পাশের গ্রাম শ্রীধরপুরের যুবক শ্যামল বেরার সেখানে আগমন ঘটে।
গত দু’বছর ধরেই তনুশ্রী ও শ্যামলের মধ্যে অন্তরঙ্গতা বাড়তে থাকে। দিনের পর দিন মেলামেশা করার সুবাদেই তাদের মধ্যে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক তৈরি হয়। কিন্তু এই সম্পর্কের মাঝে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিলেন তনুশ্রী স্বামী তুষারকান্তি। তবে, কথায় বলে প্রেম কোন বাধাই মানে না। তাই, শ্যামলের প্রেমে মজে স্বামীকে খুনের চক্রান্ত করে অভিযুক্ত ওই গৃহবধূ। যদিও, তুষারকে খুন করার বিষয়ে তনুশ্রীকেও সঙ্গ দিয়েছিল প্রেমিক শ্যামল।
জানা গিয়েছে, পরিকল্পনামাফিক ডালে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তা স্বামীকে খেতে দেয়। এরপর তনুশ্রী রাত প্রায় দুটো নাগাদ প্রেমিক শ্যামলকে বাড়িতে ডেকে এনে স্বামীর বুকের ওপর হাঁটু চেপে বসে মুখে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা করে। এই ঘটনার সময় বিছানার উপর থেকে স্বামী-স্ত্রী দুইজনেই ছিটকে মাটিতে গেলেই আরোও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে ওই বধূ। ঘুমন্ত স্বামীর মৃত্যু একেবারে নিশ্চিত করতে শ্বাসরোধের পাশাপাশি বাম হাতে অণ্ডকোষ চেপে ধরে স্ত্রী।
এদিকে, সকালে মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে আসতেই তোলপাড় শুরু হয় এলাকায়। প্রথমে স্বামীর হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয়েছে বললেও ময়নাতদন্ত করার প্রসঙ্গ উঠতেই বেঁকে বসেন তনুশ্রী। প্রতিবেশীদের সন্দেহ আরও গাঢ় হতেই খবর যায় পুলিশের কানে। মৃতদেহটি উদ্ধার করে তমলুক জেলা হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায় ময়না থানার পুলিশ। এরপর সেই সঙ্গে তনুশ্রীকে জেরা করতেই প্রকাশ্যে আসে গোটা ঘটনা। মৃতের ভাই শিশিরকান্তি ধৃতদের কঠোর শাস্তির দাবি করেছেন।