বাংলাহান্ট ডেস্ক: এক গৃহবধূর বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ালো জলপাইগুড়িতে (Jalpaiguri)। সূত্রের খবর, মূলত বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের জেরেই এই ঘটনা ঘটিয়েছেন ওই গৃহবধু। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ির পূর্ব দুরামারিতে। জানা গিয়েছে, পূর্ব দুরামারির বাসিন্দা এক গৃহবধুর সঙ্গে তার স্বামীর মামাতো ভাইয়ের বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল।
কিন্তু ওই মহিলার প্রেমিকের বাড়ি থেকে তাঁদের মেনে নেওয়া হয়নি। সেই ক্ষোভে বিষ খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন তিনি। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর দুয়েক ধরে দেওরের সঙ্গে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে ছিলেন ওই গৃহবধূ। তাঁর শ্বশুরবাড়ি ও দেওরের বাড়ি একই পাড়ায়।
গত ৪ ফেব্রুয়ারি ওই গৃহবধূ শ্বশুরবাড়ি ছেড়ে প্রেমিকের বাড়িতে চলে যান। রাত ১১টা নাগাদ হঠাতই শ্বশুরবাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে যান তিনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাঁর স্বামী মহেন্দ্রনাথ রায়ের অভিযোগ, তাঁর মামাতো ভাই গৌতম রায় তাঁর স্ত্রীকে নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। এরপর গৌতমের বাড়ির লোকজন তাঁকে সরিয়ে দেন। গৃহবধূকে আবার তাঁর শ্বশুরবাড়িতে ফিরিয়ে দিতে চান।
কিন্তু মহেন্দ্রনাথ ও তাঁর বাড়ির লোকজন গৃহবধূকে ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করে। গৃহবধূও গৌতমকে বিয়ে করতে চান। সেই দাবিতে তিনি ফের গৌতমের বাড়ির সামনে চলে যান। সেখানে গিয়ে ধর্নায় বসেন তিনি। এই ঘটনায় তাঁকে গৌতমের বাড়ির লোকজন তাঁদের বাড়িতে রাখেন। সেখানে এক টানা ১৫ দিন মতো ছিলেন তিনি।
কিন্তু এরপরেও গৌতমের সঙ্গে ওই বধূর বিয়ে দিতে রাজি হননি গৌতমের বাড়ির লোক। এরপরেই সোমবার সকালে কীটনাশক খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন ওই মহিলা। তাঁকে তড়িঘড়ি বীরপাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। আপাতত সেখানেই চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে মহেন্দ্রনাথের বক্তব্য, তিনি জানেন না তাঁর স্ত্রী নিজে বিষ খেয়েছেন কি না।
একইসঙ্গে তাঁর অভিযোগ, গৌতমের বাড়ির লোকজনই তাঁর স্ত্রীকে বিষ খাইয়েছে। তাই এই ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করেছেন তিনি। পাশাপাশি, গৌতম রায়কে খুঁজে বের করার দাবিও জানিয়েছেন তিনি। গোটা ঘটনায় পুলিশি নিষ্ক্রিয়তারও অভিযোগ তুলেছেন মহেন্দ্রনাথের বাবা চিত্তরঞ্জন রায়। তাঁর অভিযোগ, বাড়ির বউমাকে গৌতম নিজের বাড়ি নিয়ে গেলে পুলিশের দারস্থ হন তাঁরা।
পুলিশ তাঁদের জিজ্ঞেস করে, গ্রামবাসীরা এই ঘটনার কথা জানেন কি না। উত্তরে চিত্তরঞ্জন বাবু জানান যে গ্রামবাসীরা এই ঘটনা প্রসঙ্গে জানেন। তখন পুলিশের তরফে তাঁদের বলা হয় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করতে। তখন তাঁরা পুলিশকে জানান যে তাঁরা জানেন তাঁদের বাড়ির বউ কোথায় আছে। তাঁরা পুলিশের পদক্ষেপ দাবি করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করতে অস্বীকার করায় তাঁরা আর থানায় অভিযোগ জানাননি।