বাংলা হান্ট ডেস্ক: বাংলাদেশের (Bangladesh) রাজনীতিতে ফের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। আসলে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা পুনরুদ্ধারে রাজনৈতিক সমীকরণ পাল্টে যাচ্ছে বলে মনে করা হচ্ছে। ১৯৯০ সালে যেভাবে স্বৈরাচারী শাসক হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়েছিলেন, এখন আবারও সেই একই অবস্থার পুনরাবৃত্তি হতে পারে। তবে, এবার টার্গেট হলেন নোবেল বিজয়ী ও বাংলাদেশের বর্তমান প্রধান উপদেষ্টা মোহাম্মদ ইউনূস।
বাংলাদেশে (Bangladesh) ফের ঘটবে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি?
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত বছরের ৫ অগাস্ট শেখ হাসিনার দেশত্যাগের পর, বাংলাদেশ (Bangladesh) জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আশা করেছিল যে দেশের লাগাম থাকবে বেগম খালেদা জিয়া বা তাঁর ছেলে তারেক রহমানের হাতে। কিন্তু মোহাম্মদ ইউনূস প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণ করার পর সামগ্রিক পরিস্থিতি পাল্টে যায়। এমতাবস্থায়, ইউনূসের বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক নির্বাচন সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে জন্য ক্রমাগত অজুহাত তৈরি এবং ক্ষমতায় নিজের দখল জোরদার করার অভিযোগ সামনে আনা হচ্ছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশের জনগণের একটি বড় অংশ বিশ্বাস করে যে, “তাঁরা সিলেক্টেড গভর্মেন্ট নয় বরং ইলেক্টেড গভর্মেন্ট চান।” যার ফলে বর্তমানে বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে অসন্তোষ ক্রমশ গভীর হচ্ছে এবং প্রতিবাদ বাড়ছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, শীঘ্রই নির্বাচন না হলে মোহাম্মদ ইউনূসও এরশাদের মতো ক্ষমতার ওপর পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারেন।
এরশাদ কে ছিলেন এবং কিভাবে ক্ষমতাচ্যুত হলেন: জানিয়ে রাখি যে, ১৯৮২ সালে, জেনারেল হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদ একটি সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে বাংলাদেশের (Bangladesh) ক্ষমতা দখল করেন এবং নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেন। তাঁর শাসন মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং গণতন্ত্র দমনের জন্য কুখ্যাত ছিল। কিন্তু, 1990 সালে, শেখ হাসিনা (আওয়ামী লীগ) এবং বেগম খালেদা জিয়া (বিএনপি) ব্যাপক জনসমর্থনের সাথে এরশাদের বিরুদ্ধে একটি বড় আন্দোলন শুরু করেন। এমতাবস্থায়,তাঁদের যৌথ বিক্ষোভ, সাধারণ ধর্মঘট এবং আন্তর্জাতিক চাপের কারণে এরশাদকে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পদত্যাগ করতে হয়। বাংলাদেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য এটি ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত।
আরও পড়ুন: ২০২৬-এর ফুটবল বিশ্বকাপে খেলবেন না নেইমার? রাখঢাক না রেখে নিজেই দিলেন বড় প্রতিক্রিয়া
শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া কি আবার একত্র হবেন: এদিকে, বর্তমান পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া আবারও একই মঞ্চে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। চিকিৎসার জন্য লন্ডনে অবস্থানরত খালেদা জিয়া সেখান থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। বাংলাদেশের বাইরে অবস্থান করে তিনি আন্দোলনকে একটি কৌশলগত প্রান্ত দিতে পারেন। অন্যদিকে, শেখ হাসিনার জন্য ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর অনুমতি দিয়ে ভারত স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দিয়েছে যে তারা বাংলাদেশের (Bangladesh) গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে সমর্থন করে। ভারতের এই পদক্ষেপকে মোহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে স্পষ্ট বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
আরও পড়ুন: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে স্টেডিয়ামের অসম্পূর্ণ কাজ নিয়ে সাফাই দিল পাকিস্তান! করে ফেলল বিরাট দাবি
বাংলাদেশে ফের ঘটতে পারে ইতিহাস: বাংলাদেশের (Bangladesh) বিশাল জনগোষ্ঠী গণতান্ত্রিক সরকার চায়। জনগণের ক্ষোভ এবং রাজনৈতিক দলগুলির চাপ মোহাম্মদ ইউনূসের ক্ষমতায় থাকাকে চ্যালেঞ্জ করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া ঐক্যবদ্ধ হয়ে আবারও প্রতিবাদ করলে বাংলাদেশে ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে। এদিকে, আন্তর্জাতিক সমর্থন, জনসংহতি এবং রাজনৈতিক দলগুলির শক্তিই ঠিক করবে বাংলাদেশ একনায়কতান্ত্রিক শাসন নাকি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের দিকে এগোবে!