বাংলাদেশের টাকায় মুজিবুরের ছবিতে ঘটবে পরিবর্তন? সীমান্তে মাথায় হাত মানি এক্সচেঞ্জারদের, হবে বিপুল ক্ষতি

বাংলা হান্ট ডেস্ক: বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে তুমুল বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছে বাংলাদেশ (Bangladesh)। তবে, চলতি সপ্তাহের শুরুতে রীতিমতো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে প্রতিবাদ। এমনকি, পরিস্থিতি এতটাই বেগতিক হয়ে যায় যে ইস্তফা দিয়ে দেশ ছাড়তে বাধ্য হন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তারপরেই বাংলাদেশের (Bangladesh) গণভবনে শুরু হয় লুটপাঠ। এমনকি, বিক্ষোভকারীদের কবল থেকে রেহাই পাননি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও। তাঁর একের পর এক মূর্তি ভেঙে ফেলা হয়। ইতিমধ্যেই এই সংক্রান্ত একাধিক ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তবে, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে শুরু হয়েছে নতুন চিন্তাও। মূলত, ভারতের মানি এক্সচেঞ্জারদের এবার ঘুম উড়েছে।

বাংলাদেশের (Bangladesh) টাকায় মুজিবুরের ছবিতে ঘটবে পরিবর্তন:

এই প্রসঙ্গে দ্য প্রসঙ্গে ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, পেট্রাপোল স্থলবন্দর যাওয়ার পথে মানি এক্সচেঞ্জারের কাজের সাথে যুক্ত ৩০ বছর বয়সী অচিন্ত্য মন্ডল অভিযোগ করেন যে, গত সোমবার থেকে তাঁদের ব্যবসা “শূন্য” হয়ে গেছে। বাংলাদেশের (Bangladesh) প্রতিষ্ঠাতা শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সম্বলিত বাংলাদেশি টাকা প্রত্যাহার করে পরিবর্তন করা হতে পারে বলেও আশঙ্কা করেন তিনি।

   

তাঁর মতে, “আমি টিভিতে দেখেছি কিভাবে বিক্ষোভকারীরা শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি ভেঙে ফেলছে। এটি আমাদের জন্য একটি বড় উদ্বেগের বিষয়। যদি বাংলাদেশ (Bangladesh) সরকার নোটগুলি প্রত্যাহার করার সিদ্ধান্ত নেয় তবে আমাদের বড় সমস্যা হবে।” এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, পেট্রাপোল স্থলবন্দরে ১০০ টিরও বেশি মানি এক্সচেঞ্জ শপ বা কাউন্টার রয়েছে।

Will there be any change in the money of Bangladesh?

এমতাবস্থায়, অচিন্ত্য জানিয়েছেন যে, “আমাদের এখানে লাইসেন্সকৃত প্রতিটি মানি এক্সচেঞ্জ দোকানে ভালো টাকা মজুত রয়েছে। কিন্তু এখন কোনও গ্রাহক নেই। অন্যান্য সাধারণ দিনে, আমি প্রায় ৬০ থেকে ৭০ জন গ্রাহক পাই। তবে, বাংলাদেশে (Bangladesh) বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পর থেকে ব্যবসা স্তব্ধ হয়ে পড়েছে। সোমবার থেকে তেমন কিছুই হয়নি।”

আরও পড়ুন: এবারে আসল খেলা দেখাবেন আম্বানি! প্রস্তুত ২০০৪০০০ কোটির কোম্পানি, করলেন বড় ঘোষণা

অচিন্ত্যের মতোই পেট্রাপোলের আরেকটি মানি এক্সচেঞ্জ দোকানের কর্মী অঞ্জন বৈদ্য জানিয়েছেন, “গত সোমবার থেকে, আমার মাত্র ১ জন গ্রাহক ছিল। অন্যান্য দিনে হাজার হাজার জন্য সীমান্ত অতিক্রম করেন এবং আমরা ব্যস্ত থাকি। আমি প্রতিদিন কমপক্ষে ৮০ জন গ্রাহক পেতাম। তবে এখন আমরা জানি না কবে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।” তিনি আরও বলেন, “পেট্রাপোলের পাশাপাশি কলকাতার অনেক দোকানেও কোটি কোটি বাংলাদেশী টাকা আছে। ওই দোকানের মালিকরা এখন দু’টি চিন্তার সম্মুখীন। প্রথমত, কোনও গ্রাহক নেই, এবং দ্বিতীয়ত বাংলাদেশে (Bangladesh) এই টাকা প্রত্যাহারের ভয়।”

আরও পড়ুন: ট্যাক্স দেওয়ার ক্ষেত্রে শীর্ষে পৌঁছল Reliance! ১.৮৬ লক্ষ কোটির কর দিয়ে চমকে দিলেন আম্বানি

এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, মানি এক্সচেঞ্জাররা ভারতীয় রুপিকে বাংলাদেশি টাকায় রূপান্তর করেন (বর্তমান বিনিময় হার: ১০০ রুপিতে ৭০ টাকা) এবং তাঁরা ডলারও এক্সচেঞ্জ করে থাকেন। এদিকে, বাংলাদেশের (Bangladesh) বিক্ষোভের পর সীমান্তে রেস্তোরাঁ থেকে শুরু করে চায়ের স্টলগুলিও রীতিমতো খালি রয়েছে। গত সোমবার বিকেল ৩ টে থেকে বাণিজ্য বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার থেকে পেট্রাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্যবাহী যান চলাচল শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। বিষয়টির পরিপ্রেক্ষিতে, পেট্রাপোল ক্লিয়ারিং এজেন্ট স্টাফ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি কার্তিক চক্রবর্তী জানিয়েছেন যে, “স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষ এবং BSF-এর অনুমতির পর, আমরা বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বাণিজ্য শুরু হওয়ার আশা করছি।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর