বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: “মুধোলের প্রত্যেকটা বাড়িতেই একজন করে কুস্তিগীর জন্মায় কিন্তু নিঙ্গার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা একটু অন্যরকম ছিল কারণ ওর নিজের কোনও বাড়িই ছিল না”, এভাবেই অনূর্ধ্ব ১৭ এশিয়ান রেসলিং চ্যাম্পিয়নশিপে সোনাজয়ী তারকা নিঙ্গাপ্পা গেনান্নাভারের প্রাথমিক পরিচয় তুলে ধরলেন তার ছোটবেলার কুস্তি কোচ অরুন কুমাকোলে। তার ছাত্র তার নিজের এবং উত্তর কর্নাটকের কুস্তিপ্রেমী গ্রাম মুধোলের নাম উজ্জ্বল করেছে। এই উচ্ছ্বাসেই আপাতত ভাসছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার কিরগিজস্থানের বিশকেকে অনুষ্ঠিত এশিয়ান অনূর্ধ্ব ১৭ চ্যাম্পিয়নশিপের ৪৫ কেজি বিভাগে ইরানের আমিরমোহাদ্দেক সালেহকে পরাজিত করে সোনা জয় করেছেন কর্ণাটকের তরুণ কুস্তিগীর নিঙ্গাপ্পা। তার পারফরমেন্সে ছেড়ে ভারত জুনিয়র কন্টিনেন্টাল ইভেন্টের টেবিলের শীর্ষস্থানে থেকে প্রতিযোগিতা শেষ করেছে। হরিয়ানা উত্তরপ্রদেশ মহারাষ্ট্র বা পাঞ্জাব বাদেও ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলির কুস্তি নিয়ে আগ্রহ আছে তা প্রমাণ করে দিয়েছেন নিঙ্গা।
নিঙ্গার বাবা রমেশ একজন দিনমজুর। দিন-রাত পরিশ্রম করে পরিবারের মুখে খাবার তুলে দিতেন। তাদের নিজস্ব বাড়ি ছিল না থাকতে হতো একটি ভাড়া বাড়িতে কিন্তু কুস্তিগীরদের সম্মান দেখেছিলেন তার বাবা। তাই ছেলের কুস্তি চর্চায় কোনদিনও বাঁধা দেননি। প্রথম যখন নিঙ্গা জিমনেসিয়ামে যান তখন তার ওজন এবং খর্বকায় চেহারার জন্য তাকে জিমে ভর্তি নেওয়া হয় না। তখন কর্নাটকের গাড়িতে প্রাক্তন কুস্তিগীরদের দ্বারা পরিচালিত একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র থেকে কুস্তিতে প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করে। অরুণকুমার কালের নজরে পড়ার আগে একজন জাতীয় স্তরের অ্যাথলিট ১০ বছর বয়সী ছেলের উদ্যম লক্ষ্য করে তাকে একাডেমিতে নিয়ে ভর্তি করেন।
নিজের বাড়ি থেকে ৪ কিলোমিটার সাইকেলিং করে জয় হনুমান ব্যায়ামশালায় প্রশিক্ষণ নিতে যেতেন তিনি। নিঙ্গা নিজে জানিয়েছেন যে তার কাছে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ছিল না সেই অর্থ তাকে যোগান দিতেন তার অরুন স্যার। তিন বছর আগে সোনাপতের ন্যাশনাল সেন্টার অফ এক্সেলেন্স থেকে ডাক আসে নিঙ্গার। খরচ এবং হিন্দিতে দক্ষতার অভাবে তাকে পাঠাবে কিনা সে নিয়ে চিন্তায় ছিল তার পরিবার। ভাগ্যিস শেষ পর্যন্ত পাঠানো হয়েছিল। নয়তো আজকে এই জায়গায় থাকতেন না তিনি। খেলা থেকে তার রোজগার করা টাকা দিয়ে আপাতত নিজের বাবার দেনা শোধ করায় প্রথম লক্ষ্য নিঙ্গার। তিনি জানিয়েছেন আমার বাবাকে আমার খেলার জন্য একসময় বাধ্য হয়ে অনেক টাকা ধার করতো হয়েছিল। সেগুলি শোধ করা এবং মা-বাবার জন্য একটা বাড়ি তৈরি করা আমার প্রাথমিক লক্ষ্য।