বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আমরা একবিংশ শতাব্দীতে এসে পৌঁছালেও বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এমন বহু ঘটনার সাক্ষী থাকতে হয়, যা আমাদের মধ্যযুগীয় বর্বরতার সাক্ষী করে তোলে। জীবনের প্রতি পদে আমরা মহিলাদের সমান অধিকারের দাবি তুললেও এখনো পর্যন্ত এমন বহু নিম্ন মানসিকতার মানুষ বসবাস করে চলেছেন এই সমাজে, যাদের দ্বারা ক্রমাগত অসম্মান এবং বঞ্চনার শিকার হতে হয় আট থেকে আশি সকল মহিলাদেরই।
সম্প্রতি কেতুগ্রামে সরকারি চাকরি পাওয়ার কারণে স্ত্রীয়ের হাত পর্যন্ত কেটে দিতে দেখা যায় তার স্বামীকে আর সেই ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই এবার ডেবরায় অপর এক ঘৃণ্য কাজের সাক্ষী থাকলো সকলে। শুধুমাত্র বাড়ির বাইরে কাজ করতে যাওয়ার কারণে এক গৃহবধূকে শাস্তিস্বরুপ ন্যাড়া করল গ্রামের কিছু মানুষ। বর্তমানে ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে গোটা এলাকায় এবং সম্পূর্ণ ঘটনায় এক প্রকার অপমানিত হয়েই এলাকা ছেড়েছেন ওই গৃহবধূ।
সূত্রের খবর, পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরার মলিঘাটি গ্রাম পঞ্চায়েতের চকঅনন্ত গ্রামের এক মহিলাকে সম্প্রতি শাস্তিস্বরুপ ন্যাড়া করার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামের কয়েকজন মোড়ল। জানা গিয়েছে, বেশ কয়েক বছর আগে দাসপুরের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় ওই মহিলার এবং এরপর দুই সন্তান নিয়ে কোনো মতে সংসার চলত তাদের। সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্যই বাইরে কাজ করতে যায় ওই মহিলা; তবে তার ফল যে এতো মারাত্মক হবে, তা ঘুণাক্ষরেও টের পাননি তিনি। কেন বাড়ির বাইরে কাজ করতে গিয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলে শাস্তিস্বরূপ তাঁর মাথা ন্যাড়া করার সিদ্ধান্ত নেয় গ্রামের কয়েকজন মোড়ল। সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো, তাদের এই সিদ্ধান্তে একমত পোষণ করে বেশ কিছু মহিলা এবং পরবর্তীকালে এহেন ঘটনায় এক প্রকার অপমানিত হয়েই এলাকাছাড়া হন ওই মহিলা।
বর্তমানে ঘটনাটি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার পর সমালোচনার ঝড় উঠে গিয়েছে। গতকাল স্থানীয় থানায় গৃহবধূটির নিখোঁজ হওয়ার অভিযোগ করতে যান তাঁর মা। সেই অভিযোগ পেয়ে আপাতত তাঁর উদ্দেশ্যে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ। তবে বাংলায় একের পর এক এহেন নৃশংস ঘটনায় মহিলা সুরক্ষার বিষয়টি তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।