বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিচিত্র এক অপরাধের ঘটনা ঘটল ওড়িশায় (Odisha)। সে রাজ্যের কেওনঝাড় (Keonjhar) জেলার ভূঁইয়া উপজাতির (Bhuiya Tribe) এক মহিলাকে বাড়ি থেকে বের করে দিল তাঁর স্বামী। ওই মহিলার অপরাধ, তাঁদের ১১তম সন্তানের জন্মের পর নিজের বন্ধ্যাকরণ করিয়েছিলেন। তাতেই তাঁর উপর চটে গিয়ে বাড়ি থেকেই তাড়িয়ে দিল স্বামী। তাঁর এক নবজাতককে নিয়ে টানা তিন দিন একটি গাছের নীচে কাটিয়েছেন।
শনিবার স্থানীয় এক আশা কর্মী (Asha worker) তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। ওই মহিলার স্বামী ৪০ বছর বয়সি রবি দেহুরির দাবি, তাদের উপজাতীয় ঐতিহ্য অনুসারে, বন্ধ্যাকরণের পর কোনও আচার অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না স্ত্রী জানকি। তাই তাঁকে ‘অপবিত্র’ আখ্যা দিয়ে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে সে। জানা গিয়েছে, গত ১৯ জানুয়ারি এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন জানকি দেহুরি।
তারপর একজন আশা কর্মীর বোঝানোর পর ১৪ ফেব্রুয়ারি তেলকোই হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করা হয় তাঁর। জানকি ও রবির বিয়ে হয়েছিল ১২ বছর আগে। মধ্যেই ১১ সন্তানের জন্ম দেন জানকি। তাদের মধ্যে ৫ ছেলে ও ৫ মেয়ে রয়েছে। দম্পতির এক মেয়ে কয়েক বছর আগে মারা যায়। দিমিরিয়ার আশা কর্মী বিজয় লক্ষ্মী সাহু বলেন, “এর আগে জানকির স্বামী তাঁকে অস্ত্রোপচার করতে দেয়নি। আমরা অনেকবারই তাকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলাম।”
ওই আশা কর্মীর দাবি, রবিকে তার স্ত্রীকে বাড়ি ঢুকতে দিতে রাজি করানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু উল্টে জানকিকে মারধর করে। রবি বলেছে, “আমার সম্মতি ছাড়াই ওই আশা কর্মী আমার স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে অস্ত্রোপচার করিয়েছিলেন। তাঁদের আমার সম্মতি নেওয়া উচিত ছিল। অস্ত্রোপচারের কথা শুনে আমি হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।” সমাজকর্মী নির্মল চন্দ্র নায়ক জানিয়েছেন, আদিবাসীদের মধ্যে সচেতনতার অভাবের কারণেই এই ঘটনা ঘটেছে।
কেওনঝাড়ের সাব-ডিভিশনাল ম্যাজিস্ট্রেট রামচন্দ্র কিস্কু জানিয়েছেন, তেলকোইয়ের তহসিলদার ও বিডিও-কে বিষয়টির তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন যে রবি ও গ্রামবাসীদের সংগে আলোচনা করে জানকি ও তাঁর নবজাতকের পুনর্বাসনের জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হবে। একইসঙ্গে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, এ ভাবে বারবার গর্ভধারণ করলে তা মায়ের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দেয়।