বাংলাহান্ট ডেস্কঃ ‘এষ দীপ ওম ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ।’ এবং ‘এষ ধুপঃ ওঁ ক্রীং কাল্ল্যৈ নমঃ।’- মা কালীর (Ma Kali) প্রদীপ প্রদান এবং ধূপকাঠি প্রদানের মন্ত্র। সাধক বামাক্ষ্যাপা (Bamakhepa) ছিলেন কালী মায়ের সাধক। তাঁর দুর্বল সময়ে মা তারা তাঁকে অনেক শক্তি জুগিয়ে তাঁর পাশে ছিলেন। সেই থেকে দুর্বল সময়ে একমাত্র ভরসা তারা মা। বিপদে আপদে তাই সবাই তারা মায়ের শরণাপন্ন হন। মা তারা জীবনের প্রতিটি মুহুর্তে তাঁর ভক্তের পাশে থেকে জীবনকে সুন্দর এবং মার্যিত করে তোলে। তাই জগত সংসারে মা তারার মহিমা অসীম।
হিন্দু দেব দেবীদের মধ্যে অন্যতম প্রধান একজন দেবী হলেন মা কালী (Maa Kali)। এই দেবীর অন্য নাম শ্যামা বা আদ্যাশক্তি। মা কালীর বিভিন্ন রুপের মধ্যে বাঙালি হিন্দু সমাজে বিশেষত কালীর মাতৃরূপের পূজা বিশেষ জনপ্রিয়। পুরাণ ও তন্ত্র সাহিত্য অনুসারে মা কালীর বিভিন্ন রূপের বর্ণনা পাওয়া যায়। দক্ষিণাকালী, ভদ্রকালী, সিদ্ধকালী, গুহ্যকালী, শ্মশানকালী, মহাকালী, রক্ষাকালী,কৃষ্ণকালী ইত্যাদি হল মা কালীর বিভিন্ন রূপ। বিভিন্ন সময় দুষ্টের দমনে মা এক এক বার এক এক রকম রূপ ধারণ করেছিলেন। মায়ের যেমন রূদ্রমূর্তি পূজিত হয়, তেমনই কালী মায়ের মমতাময়ী রূপও পূজিত হয়। “ব্রহ্মময়ী”, “ভবতারিণী”, “আনন্দময়ী”, “করুণাময়ী” ইত্যাদি নামে কালী মায়ের বিভিন্ন রূপ পূজিত হয়।
মা কালীর সমস্ত রূপের মধ্যে তাঁর দক্ষিণাকালীর বিগ্রহই সর্বাধিক পরিচিত ও পূজিত। এই রূপে মা চতুর্ভূজা। মায়ের চার হাতে থাকে খড়্গ, অসুরের ছিন্ন মুণ্ড, বর ও অভয়মুদ্রা। এবং গলায় থাকে গহনার বদলে নরমুণ্ডের মালা। মায়ের এই রূপ কিন্তু কালো রঙের। ক্ষিপ্ত মায়ের মাথায় আলুলায়িত চুল। এবং সর্বপোরি তিনি মহাদেব শিবের বুকে ডান পা আগে রেখে দণ্ডায়মান বস্থায় থাকেন।
মা কালী জীবনের সবক্ষেত্রে তাঁর ভক্তদের পাশে থাকেন। তাঁকে সাহায্য করেন। ভক্তের যে কোন পরিস্থতিতে মা তারা তাঁর সহায় হন। সমস্ত শক্তির (Power) উৎস তিনি। মায়ের স্থান তারপীঠ (Tarapith), দক্ষিণেশ্বর (Dakshineswar), কালীঘাট সকল হিন্দুদের কাছে মহান পবিত্রভূমি। বহু মানুষ এখানে সাধনার জন্য আসেন। মায়ের কাছে পুজো দিয়ে পূন্যার্জনের উদ্দ্যেশ্যে বহু ভক্ত প্রতিদিন এইসব তীর্থক্ষেত্রে আসেন। মাই পারেন তাঁর সকলকে ভক্তকে সব বিপদ থেকে রক্ষা করতে।
জীবনের চরমতম মূহুর্তে মা তাঁর ভক্তদের পাশে এসে দাঁড়ান। সমস্ত শক্তির উৎস তিনি। যখন সংসারের মা, বাবা, ভাই, বোন সবাই মুখ ফিরিয়ে নেয়, তখন তারা মা তাঁকে আশ্রয় দেয়। তারা মা তাঁকে শক্তি যোগায়। জীবনে আবার নতুন করে উঠে দাঁড়াতে সহায়তা করে। হেরে যাওয়ার পরেও জীবনে ভালো কিছু করার ইচ্ছাকে জাগিয়ে তোলে।
মন্দিরের পাশাপাশি গৃহেও মা পূজিত হন। যাদের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত কালীপ্রতিমা রয়েছে, তারা নিত্যপূজা করেন। এছাড়াও বিশেষ বিশেষ স্থানে, বিশেষ বিশেষ তিথিতেও কালীপূজা করা হয়। সাড়ম্বরে আলোকসজ্জা সহকারে পালিত হয় মায়ের পূজার উৎসব। ভক্তিভরে মাকে ডাকলে, মা সকলের ডাকে সাড়া দেন।