বাংলাহান্ট ডেস্কঃ মাতা পার্বতী এবং পিতা মহাদেবের চার সন্তানের মধ্যে গণেশ (Gonesha) ছোটবেলা থেকেই একটু চঞ্চল প্রকৃতির। পুরাণ মতে, গণেশের মস্তক ছিন্ন হয়ে যাওয়ার পর তাঁকে হাতির মাথা ধারণ করতে হয়। এই কারণে দেবতা মহলে সামান্য জটিলতা সৃষ্টি হওয়ায়, মহাদেব বলেন এবার থেকে জগত সংসারে গণেশের পূজাই আগে করা হবে। তারপর অন্য দেবতারা পূজা পাবেন। তাই প্রতি বছর গণেশ পূজা দিয়ে পূজা পার্বনের সূচনা হয়।
বিভিন্ন অঞ্চলের মতো এখন কলকাতায়ও ধুম ধাম করে পালন করা হয় গণেশ চতুর্থী। গণেশ দেবতার আরাধ্যে মেতে ওঠে কলকাতাবাসী। দেবতাকে প্রসন্ন করে তাঁর থেকে ভালো বর লাভের আশায় সকলেই তাঁর সেবা করেন। তবে মন দিয়ে সিদ্ধিদাতা গণেশের পূজো করলে, তিনি সকলের মনস্কামনা পূর্ণ করেন। তাই ভক্তি ভরে গণেশের পূজো করলে, ভগবান তাঁকে দুহাত তুলে আশির্বাদ করেন।
ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ ওঁ শ্রী গণেশায় নমঃ’ বা ‘ওঁ গাং গণেশায় নমঃ গণেশ পূজা মন্ত্র একদন্তং মহাকায়ং লম্বোদর গজাননম। বিঘ্নবিনাশকং দেবং হেরম্বং পনমাম্যহম।।
কথিত আছে প্রতি বুধবার করে গণেশ পূজা করলে ধনপ্রাপ্তি ও সৌভাগ্য লাভ হয়। এই পূজা সঠিক ভাবে করলে রিদ্ধি ও সিদ্ধির সঙ্গে ঘরে আসেন গণেশ দেবতা। তাই প্রতি বুধবার সকালে স্নান সেরে উঠে ১১ টি দূর্বা ঘাস অর্পন করতে হয় গণেশ দেবতাকে। গণেশ ঠাকুর কিন্তু আবার খেতে খুবই ভালো বাসেন। তাই পেট পূজো করিয়ে তাঁকে সন্তুষ্ট করা কিন্তু খুবই সহজ। গনেশ ঠাকুর মুগের লাড্ডু এবং মোদক খেতে খুবই ভালো বাসেন। তাই দোকান থেকে না কিনা যদি আপনি হাতে বানিয়ে তা ভগবানের উদ্দ্যেশ্যে অর্পন করেন, তাতে ভগবান আরও বেশি প্রসন্ন হবেন।
ধ্যান মন্ত্র – ওঁ খর্বং স্থূলতনুং গজেন্দ্রবদনং লম্বোদরং সুন্দরং প্রস্যন্দম্মদগন্ধলুব্ধ মধুপব্যালোলগন্ডস্থলম্ । দন্তাঘাত বিদারিতারিরুধিরৈঃ সিন্দুরশোভাকরং , বন্দেশৈল সুতাসুতং গণপতিং সিদ্ধিপ্রদং কামদম্ ।।
গণেশ ঠাকুরের কিন্তু মূর্তি পূজাই প্রচলিত আছে। তবে সেক্ষেত্রে এক সঙ্গে অনেক মূর্তি নয়, একটি মূর্তি রেখেই পূজো করতে হয়। বাজারে নানান রঙের গণেশ ঠাকুরের মূর্তি পাওয়া যায়। তবে বাস্তুবিদরা মনে করেন সাদা বা হলুদ রঙের গণেশ মূর্তি পূজো করলে, সংসারে শ্রীবৃদ্ধি হয় এবং ধনরত্নে ভরে যায়। তবে গণেশ মূর্তি পূজোর সময় কিন্তু বাড়ির উত্তর-পূর্ব দিক বা একেবারে পশ্চিমদিকে রেখে পূজো করলে তা শুভ মনে করা হয়।
আবার গণপতি বাপ্পার মাথায় লাল রঙের সিঁদুর লাগালে, তিনি ভক্তের উপর সন্তুষ্ট হন। সংসার এবং অফিস থেকে সমস্ত অশান্তি দূর হয়ে গিয়ে শান্তি ফিরে আসবে। ভগবানকে প্রসাদ নিবেদনের সময় যদি তামার পাত্রে না দিয়ে প্রসাদ বা পূজার সামগ্রী রূপোর পাত্রে নিবেদন করা হয়, তাতে সিদ্ধিদাতা গণেশের আশির্বাদ সর্বদা সেই পরিবারের উপর বজায় থাকে। ভোগের প্রসাদে শুদ্ধ ঘি ও গুড়ের ভোগ দিলে, ধনপ্রাপ্তির পথের সকল বাঁধা দূর হয়ে যাবে।