বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দিল্লির যন্তর মন্তরে চলেছে ভারতীয় বক্সিং ফেডারেশনের প্রেসিডেন্ট তথা বিজেপি সাংসদ ব্রিজভূষণ সিংহের গ্রেপ্তারের দাবিতে, কুস্তিগীরদের একটা বড় অংশের আন্দোলন। এই আন্দোলনকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন সাক্ষী মালিক, বজরঙ্গ পুনিয়া, ভিনেশ ফোগাত সহ দেশের প্রথম সারীর কুস্তিগীররা। ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এক নাবালিকা এবং একাধিক মহিলা কুস্তিগীরকে ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি করার অভিযোগ তুলেছেন তারা। শাসকদল ঘনিষ্ট হওয়ার কারণে সমস্ত রকম আইনি শাস্তির হাত থেকে রেহাই পান ব্রিজভূষণ এমনটাই দাবি তাদের।
কিন্তু এই প্রতিবাদ চলাকালীন গত রবিবার আন্দোলনরত কুস্তিগীরদের ওপর নেমে আসে পুলিশের অত্যাচার। বলপ্রয়োগের মাধ্যমে দাঙ্গা বাঁধানোর কাঁধে চাপিয়ে গ্রেপ্তার করা হয় সাক্ষী মালিক, ভিনেশ ফোগাতদের। প্রসঙ্গত সেইদিনই দিল্লির বুকে যখন দেশকে বিভিন্ন প্রতিযোগিতা থেকে পদক এনে দেওয়া কুস্তিগীরদের ওপর অত্যাচার চলছিল, ঠিক সেই সময়ে জাঁকজমক পুর্ণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বহাল তবিয়তে উপস্থিত ছিল সেই ব্রিজভূষণই।
আজ নিজেদের প্রতিবাদকে আরো একধাপ উঁচুতে নিয়ে যাবার পরিকল্পনা করেছিলেন কুস্তিগীররা। হরিদ্বারের গঙ্গায় দেশের হয়ে জেতা সেই পদকগুলি বিসর্জন দেবেন বলে ঠিক করেছিলেন সেই কুস্তিগীররা। সুনীল ছেত্রীর মতো অভিজ্ঞ তারকা ফুটবলার এবং ভারতীয় অধিনায়ক আগেই তাদের স্বপক্ষে মুখ খুলে ছিলেন। সম্প্রতি প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক অনিল কুম্বলেও তাদের সমর্থনে পাশে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রেখেছেন।
তবে শেষপর্যন্ত ভারতীয় কিষান ইউনিয়নের জাতীয় সভাপতি চৌধুরী নরেশ টিকায়েত সহ আরো অনেকের অনুরোধে আপাতত এই পদক ভাসিয়ে দেওয়ার বিষয়টি মুলতুবি রেখেছেন কুস্তিগীররা। তারা কেন্দ্রকে এবং বক্সিং ফেডারেশনকে বিষয়টি নিয়ে বিবেচনা করার জন্য আর পাঁচ দিন সময় দিয়েছেন। এই পাঁচ দিনে কোনও আশার আলো না দেখলে তারপর চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেবেন বলে স্থির করেছেন কুস্তিগীররা।
অনেকেই সাক্ষী, বজরঙদের এই আন্দোলনের পেছনে রাজনৈতিক স্বার্থ ও আরও অন্যান্য নানা কারণ খুঁজে বার করে দেখার চেষ্টা করছেন। কিন্তু ব্যাপারটা হলো এটাই যে সেই ব্যাপারগুলি যদি সত্যিও হয় তাহলেও রাস্তায় ফেলে তাদেরকে যেভাবে হেনস্থা করা হয়েছে, এই ব্যাপারটি কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না।