‘আমি ফুরিয়ে যাইনি’, বিধ্বংসী ইনিংস খেলে সমালোচকদের কড়া জবাব ঋদ্ধিমান সাহার

বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: গতকালের ইনিংসের পর থেকেই শিরোনামে রয়েছেন বঙ্গ উইকেটরক্ষক ব্যাটার ঋদ্ধিমান সাহা। মরশুমের শুরুর দিকে সুযোগ পাননি। ভারতের সবচেয়ে দক্ষ উইকেটরক্ষকের বদলে অস্ট্রেলিয়াকে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল জেতানো উইকেটরক্ষক ম্যাথু ওয়েড-কেই বেশি যোগ্য বলে বিবেচনা করেছিলেন গুজরাট টাইটান্স কোচ গ্যারি কার্স্টেন এবং অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়া। খুব খারাপ খেললেনি ওয়েড, কিন্তু অত্যাশ্চর্য কিছুও করে দেখাতে পারেননি। ফলে পাঁচ ম্যাচ শেষে দুই বিদেশি পেসারকে দলে জায়গা দেওয়ার জন্য বাদ দেওয়া হয় ওয়েড-কে। দলে সুযোগ পান ঋদ্ধিমান।

প্রথম ম্যাচ চেন্নাই সুপার কিংসের বিরুদ্ধে। দীর্ঘদিন ম্যাচ প্র্যাকটিসে না থাকা ঋদ্ধিমান ব্যাটে বলে টাইমিং করতেই সমস্যায় পড়লেন। ফিরলেন ১৮ বলে ১১ রান করে। দ্বিতীয় ম্যাচে প্রতিপক্ষ নিজের শহরের দল কলকাতা নাইট রাইডার্স। এই ম্যাচেও ওপেন করলেন। দুরন্ত ফর্মে থাকা উমেশকে ২ টি চার ও ১ টি ছক্কা মারলেও ২৫ বলে ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি। এরপরে ধেয়ে এলো বিতর্ক এবং সমালোচনা। দিন ফুরিয়েছে, কোনওদিনই ভালো ব্যাটার নয়, এমন কত দাবি উঠলো তার ঠিক নেই। এসবের মাঝে সুযোগ মিলল তৃতীয় ম্যাচেও। প্রতিপক্ষ পুরোনো দল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। গুজরাট টাইটান্সের ফেসবুক পেজ ফলো করলে বোঝা যায় যে রশিদ খানের কৃপায় লক্ষ লক্ষ আফগানিস্তানি মানুষ পেজটি ফলো করেন। রশিদের পাশাপাশি তাদের দাবি, সুযোগ দেওয়া হোক গুজরাটের দলে থাকে আফগান উইকেটরক্ষক ব্যাটার রহমতউল্লা গুরবাজ-কে। ঋদ্ধিমানকে ছাপার অযোগ্য সমস্ত বিশেষণে ভরিয়ে দেওয়ার প্রথা গত দুই ম্যাচ ধরেই চলে আসছিল, কিন্তু ক্রিকেটপ্রেমীরা জানেন যে ঠান্ডা মাথার ঋদ্ধি এইসব ব্যাপার নিয়ে কখনোই মাথা ঘামান না।

ঋদ্ধিমানের গতকালের ইনিংসের শুরু থেকেই তিনি ছিলেন আক্রমণাত্মক। অফসাইডে টাইমিংয়ে সমস্যা এই মরশুমে শুরু থেকেই হচ্ছে, তাই থার্ড ম্যান থেকে কভার অঞ্চল বাদ দিয়ে বাকি সব জায়গায় সাবলীলভাবে বোলারদের আক্রমণ করতে শুরু করেন পাপালি। ইনিংসে তার ছিল কেবল একটি ছয়। বাকি সময় এমনকি পাওয়ার প্লে শেষ হওয়ার পরেও খুঁজে গেছেন এমন জায়গা যেখানে ফিল্ডার ৩০ গজ বৃত্তের ভেতরে আছেন। ওয়াশিংটন সুন্দরকে এগিয়ে এসে মিড-উইকেট দিয়ে উড়িয়ে দেওয়াই হোক বা বিরাট-রোহিতকে চলতি মরশুমে হার মানানো মার্কো জেন্সনকে অফ স্টাম্পে ওঠে এসে লফ্টেড অন-ড্রাইভে বাউন্ডারিতে পাঠানোই হোক, ঋদ্ধির প্রতিটি টাচ যেন তার হয়ে সমালোচকদের বার্তা দিচ্ছিলো।

এই রাজকীয় ইনিংসের পর ম্যাচে নিজের কিছু ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে ঋদ্ধি জানিয়েছেন যে তিনি এখনও ফুরিয়ে জাননি। ভক্তরা আশা করবেন বাকি মরশুমেও তার ব্যাট এভাবেই কথা বলতে থাকুক। কারণ ক্রিকেটের বড় মঞ্চে অদূর ভবিষ্যতে আর কোনও বাঙালির হয়ে করতালি শোনার সুযোগ এরপর আর পাওয়া যাবে বলে আশঙ্কা করাটা হয়তো একটু হঠকারিতাই হয়ে যাবে।


Reetabrata Deb

সম্পর্কিত খবর