বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বিশ্বে এমন অনেক ছোট বড়ো জিনিস আছে যেগুলি সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই ধারণাই নেই। এই যেমন, আমাদের দেশেই এমন এক গ্রাম (Village) রয়েছে যেখানে কোন মানুষ পায়ে জুতো (Shoe) পরেননা। ছোট বাচ্চা থেকে বয়স্ক, কারো পায়েই কখনও জুতো ওঠেনি। নগ্ন পায়ে ঘোরাফেরা করাই এখান কার রীতি। মাইলের পর মাইল তারা খালি পায়েই হাঁটাচলা করেন।
অন্ধ্রপ্রদেশের (Andhra Pradesh) এই গ্রামটির নাম ভেমানা ইন্দলু (Vemana Indlu)। খুব ছোট সাজানো গোছানো ছবির মতো এক গ্রাম। এই গ্রামের মানুষ জুতো থেকে থাকেন শতহস্ত দূরে। এমনকি বাইরের কেউ এই গ্রামে এলে তাকেও গ্রামের বাইরে জুতো খুলে আসতে হয়। অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্যিই যে, এটাই এই গ্রামের ঐতিহ্য। আর এর পেছনের কারণটাও বড়ো রহস্যময় বটে।
জানা গেছে ভেমানা ইন্দলুর প্রতিষ্ঠিত দেবতা ভেঙ্কটেশ্বর স্বামী। আর পাছে দেবতা রুষ্ট হন সেই কারণেই গ্রামবাসীরা জুতো পায়ে দেন না। এই নিয়মের বেড়াজাল এতটাই কড়াকড়ি যে, পাছে নিয়মভঙ্গ হয় তাই বাইরের মানুষকে সেভাবে ঢুকতেও দেওয়া হয়নান। বিবিসি-র রিপোর্ট অনুযায়ী, ভেমানা ইন্দলুর মানুষজনও গ্রাম থেকে বিশেষ বার হননা। কোন কাজে বাইরে এলেও তারা বাইরের মানুষজনকে এড়িয়ে চলেন।
যদি কোন কারণে বাইরের কারোর ছোঁয়া লেগে যায় তাহলে আর রক্ষে নেই। স্নান করে কাচা জামাকাপড় পরে তবেই বাড়িতে প্রবেশ করতে পারেন তারা। এমনিও গ্রামের বাইরে গেলেই স্নান করে ঘরে ঢোকার রীতি রয়েছে এই গ্রামে। ভাবতেই অবাক লাগে যে তিরুপতি শহর থেকে মাত্র ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম বাইরের জগত থেকে নিজেদের সম্পূর্ণ আলাদা করে রেখেছে।
ছোট এই গ্রামে যেখানে সুযোগ-সুবিধাও খুব কম। কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়ারও রেওয়াজ নেই। তাদের মূল পেশা হলো কৃষিকাজ ও ছাগল পালন। যে গুটিকয়েক মানুষ লেখাপড়া শিখেছেন তারা চেষ্টা করছেন এইসব প্রথা ভাঙতে। পাশাপাশি প্রচার চালাচ্ছে প্রশাসনও। তবে এখানকার মানুষজনের বিশ্বাস, তাদের পূর্বপুরুষদের দেওয়া বিধিনিষেধ অক্ষরে অক্ষরে পালন করা উচিত।