বাংলা হান্ট ডেস্ক: সময়টা মোটেও ভালো যাচ্ছে না পাকিস্তানের (Pakistan)। শুধু তাই নয়, যত দিন এগোচ্ছে ততই একাধিক সঙ্কটের সম্মুখীন হচ্ছে শরীফের দেশ। এমনিতেই সে দেশে এখন নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম হু হু করে বেড়েই চলেছে। এমনকি, খাদ্যদ্রব্যের দামও নাগাল ছড়িয়েছে সাধারণ মানুষের। তার সাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ ঘাটতি। অবস্থা এতটাই বেগতিক হয়েছে যে, পরিস্থিতি সামাল দিতে এবার বিয়েবাড়ির পাশাপাশি মল, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন দফতরে বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রেও কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে।
ঠিক এই আবহেই এবার পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ারও ক্রমশ কমে আসছে। তবে, এবার আরও একটি নতুন নজির তৈরি হল সে দেশে। জানা গিয়েছে, বর্তমানে ডলারের তুলনায় পাকিস্তানি রুপির দাম এক ধাক্কায় অনেকটাই কমে গিয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত বুধবার পাকিস্তানে ১ ডলারের মূল্য ছিল ২৩০ পাকিস্তানি রুপি। যদিও, মাত্র ২৪ ঘণ্টা পরেই সেই দাম নেমে গিয়েছে ২৫৫ পাকিস্তানি রুপিতে।
যার জেরে এখন ১ হাজার পাকিস্তানি রুপির পরিবর্তে ৪ ডলারও মিলবে না। এমতাবস্থায়, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার ভাঁড়ার ক্রমশ তলানিতে এসে ঠেকায় খাদ্যদ্রব্যেরও দাম ক্রমশ উর্ধ্বমুখী হয়ে গিয়েছে। শুধু তাই নয়, রফতানির পরিমানও অনেকটাই কমে যাওয়ায় নির্ভর করতে হচ্ছে আমদানির উপরেই। আর তখনই যেটি প্ৰধান বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে সেটি হল বৈদেশিক মুদ্রার ভান্ডার।
বর্তমানে পাকিস্তানের কোথাও কোথাও এক বস্তা আটার দাম পৌঁছে গিয়েছে ৩ হাজার টাকাতে। যদিও, ওই দামেও আটা সংগ্রহের জন্য পদপিষ্ট হওয়া জোগাড় সাধারণ মানুষের। তবে, এরই মধ্যে আবার সুদের হার বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে পাকিস্তানের রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ২৪ বছরে ওই হার সর্বোচ্চ জায়গায় পৌঁছে গিয়েছে। এদিকে, দেশে চলা তীব্র অর্থনৈতিক সঙ্কটের প্রসঙ্গে অবশ্য পূর্বের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেই দায়ী করছেন শাহবাজ শরিফ। যদিও, ইমরানের দিকে আঙুল তুললেও এই পরিস্থিতি থেকে কিছুতেই বেরিয়ে আসতে পারছে না শরিফ।
কেন পাকিস্তানি রুপির দামে পতন ঘটল: এই প্রসঙ্গে জানিয়ে রাখি যে, ইতিমধ্যেই পকিস্তানকে ৬ বিলিয়ন ডলার বেল আউট প্যাকেজ দিচ্ছে IMF। এমতাবস্থায়, সেই বেল আউট পেতে IMF-এর দেওয়া কড়া শর্ত মেনে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শরিফ। আর ওই ঘোষণার পরই রুপির দামে এহেন পতন পরিলক্ষিত হয়েছে। মূলত, IMF শর্ত দিয়ে জানিয়েছে যে, রুপির দামের উপরে পাকিস্তান কোনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। অর্থাৎ, তা ছেড়ে দিতে হবে বাজারের হাতে। তবে মনে করা হচ্ছে যে, IMF-এর কাছ থেকে ওই অর্থ পেলে অবস্থার কিছুটা উন্নতি হবে পাকিস্তানের।