পকেটে ছিল মাত্র ৩০০ টাকা! দুর্দান্ত প্ল্যান নিয়ে ব্যবসা শুরু করে আজ কোটিপতি এই যুবক

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের দেশের বর্তমান প্রজন্ম সময়ের সাথে সাথে অনেক বেশি স্মার্ট এবং পরিশ্রমী হয়ে উঠেছে। পাশাপাশি প্রথাগত ভাবে চাকরির পথে না হেঁটে বিভিন্ন যুগোপযোগী স্টার্ট-আপের মাধ্যমে তাঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন সফলতার চূড়াতেও। শুধু তাই নয়, তাঁদের এই সাফল্য অনুপ্রাণিত করছে বাকিদেরও। বর্তমান প্রতিবেদনেও আমরা ঠিক সেইরকমই এক লড়াকু যুবকের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব যিনি আজ তাঁর স্টার্ট-আপের মাধ্যমে তৈরি করেছেন এক উত্তরণের কাহিনি।

১৯৯৪ সালে সিকিমের গ্যাংটকে জন্মগ্রহণ করেন রিওয়াজ ছেত্রী। তিনি অরুণাচল প্রদেশের নর্থ ইস্টার্ন রিজিওনাল ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি থেকে বনবিদ্যায় স্নাতক করেছেন। তাঁর প্রয়াত পিতা ছিলেন একজন পোল্ট্রি চাষী এবং তাঁর মা হলেন একজন গৃহিণী। খুব কম বয়সেই তিনি তাঁর স্টার্ট-আপ NE Taxi শুরু করেছিলেন। যা বর্তমানে বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে পড়াকালীনই এই ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি।

এই প্রসঙ্গে রিওয়াজ জানিয়েছেন, “আমি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে NE Taxi-র পথচলা শুরু করি। তাই শুরুতে অনেক চ্যালেঞ্জ ছিল। ৩০০ টাকায় একটি ডোমেইন কিনে এই ব্যবসা শুরু করেছিলাম আমি। প্রথম দিন থেকেই বুঝতে পেরেছিলাম যে, আমার কোম্পানিকে আমি যেখানে নিয়ে যেতে চাই সেখানে যেতে হলে তার জন্য আমাকে কঠোর পরিশ্রম করতে হবে। আমি এটি ২০১৩ সালে শুরু করি এবং ২০১৭ সালে অ্যাপ তৈরি করে তা চালু করি।”

তবে, তাঁর এই কাজে তাঁকে প্রতি পদে পদে বাধার সম্মুখীন হতে হয়েছে। সাধারণত উত্তর-পূর্বের মানুষ প্রথমে গাড়ি ভাড়ার এই কোম্পানিকে বিশ্বাস করেনি। এমনকি, বেশ কয়েকজন ট্রাভেল এজেন্ট তাঁকে বিভ্রান্ত করারও চেষ্টা করেন। তবে, রিওয়াজ তাঁর লক্ষ্যে অবিচল ছিলেন।

যদিও, রিওয়াজ গীত গেরাকে বোর্ডে অন্তর্ভুক্ত করার পরই তাঁকে আর ব্যবসা নিয়ে পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তিনি তাঁর ব্যবসায়িক পরিকল্পনার জন্য YLC থেকে ৫ লক্ষ টাকা নগদ পুরস্কারও পেয়েছেন। সেই অর্থ অ্যাপ্লিকেশনটি তৈরি করতে ব্যয় করেছিলেন তিনি। ব্যবসার প্রথম দিন থেকেই কমিশনের ভিত্তিতে ব্যবসা শুরু হয় তাঁদের।

মাত্র ৩০০ টাকা দিয়ে এই ব্যবসা শুরু করেন রিওয়াজ। আজ তাঁদের মূল দলে পাঁচজন সদস্য এবং পাঁচটি শাখায় মোট ২৬ জন কর্মচারী কাজ করছেন। বর্তমানে NE Taxi-র বার্ষিক টার্নওভার প্রায় ৯০ লক্ষ টাকা৷ গ্যাংটক, দার্জিলিং, তাওয়াং, গুয়াহাটি এবং শিলং-এ এর পাঁচটি শাখা রয়েছে।

Rewaj Success 272x300 1

এই প্রসঙ্গে রিওয়াজ জানিয়েছেন, “আমি গ্যাংটকে বড় হয়েছি। মূলত সিকিমের লজিস্টিক সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলাম আমি। যাতায়াতের সময় এখানকার মানুষদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়। আমি যখন অরুণাচল প্রদেশে পড়তাম, তখন গুয়াহাটি থেকে যাতায়াতের একমাত্র উপায় ছিল বাস। একদিন আমার মাথায় একটা চিন্তা এলো যে আমাদের এলাকায় যাতায়াতের জন্য বিলাসবহুল যানবাহনের ব্যবহার শুরু করা যেতে পারে। আর এভাবেই আমার যাত্রা শুরু হল। আমি এখনও এলাকার পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছি।”

Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর