বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভবিষ্যতে সমগ্র বিশ্বের ‘ক্রিকেট ইতিহাস’ নিয়ে যদি কোনরকম বই লেখা হয়, তবে সেখানে যুবরাজ সিংহের নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। যুবরাজ সিংহ নামটি শুনলেই আমাদের প্রথমেই মাথায় আসে 2007 ও 2011 সালের ওয়ার্ল্ড কাপের কথা। প্রতিটি ম্যাচে চার ও ছয়ের বন্যা হোক, কিংবা 2007 সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ছয় বলে ছটা ছয়ের স্মরণীয় মুহূর্ত, ইতিহাসের পাতায় নাম করে নিয়েছে যুবরাজ সিংয়ের অসংখ্য কীর্তি।
2011 সালে যেভাবে ক্যানসারকে সঙ্গী করে ভারতকে বিশ্বকাপ জেতাতে সাহায্য করেছিলেন যুবরাজ, তা হয়তো সারা জীবনেও কোনদিন ভুলতে পারবে না ভারতের অসংখ্য ক্রিকেট ফ্যান। পরবর্তীতে, ক্যানসারকে হারিয়ে ভারতীয় টিমে তাঁর স্বপ্নের প্রত্যাবর্তনও ঘটে। তবে এত ভালো মুহূর্ত মাঝেও কি ভারতীয় দলের অধিনায়ক না হওয়ার আফসোস রয়ে গেছে যুবরাজের?
একটা সময় যখন সৌরভ গাঙ্গুলী ও রাহুল দ্রাবিড়ের অধিনায়কত্ব যাওয়ার পর সবাই আশা করেছিল যে যুবরাজ সিংহের হাতেই হয়তো উঠতে চলেছে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন্সি, সেই মুহূর্তেই চমকপ্রদভাবে তাঁকে সেই সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়! কিন্তু এর পিছনে আসল রহস্য কি, তা কারো জানা নেই আর এবার সেই রহস্য উন্মোচন করে অবশেষে নিজের মুখ খুললেন ভারতীয় দলের সর্বকালের অন্যতম শ্রেষ্ঠ অলরাউন্ডার।
এদিন যুবরাজ সিংহ বলেন, “আমার মনে হয়েছিল যে, আমি ভারতীয় দলের অধিনায়ক পদ সামলানোর জন্য প্রস্তুত। কিন্তু গ্রেগ চ্যাপেল কোচ থাকাকালীন দলের মধ্যে একটি সমস্যা তৈরি হয়। সেই সময় আমাকে বলা হয় যে, চ্যাপেল কিংবা শচীন তেন্ডুলকরের মধ্যে যে কোন একজনকে বাছতে, কিন্তু আমি সেই সময় আমার সতীর্থর পাশেই দাঁড়াই আর সেই কারণেই সম্ভবত বোর্ড আধিকারিকদের এই বিষয়টি পছন্দ হয়নি। যদিও আমি এই সম্পর্কে আসল সত্য কি, তা জানিনা। কিন্তু আমার মনে হয়, এই কারণেই হয়তো আমি অধিনায়ক পদ থেকে বঞ্চিত থাকি।”
আপনাদের বলে রাখি, 2005 থেকে 2007 সালে কোচ থাকাকালীন গ্রেগ চাপেলের সঙ্গে সৌরভ গাঙ্গুলী এবং শচীন তেন্ডুলকরের সমস্যা বাঁধেম পরবর্তীকালে সৌরভ গাঙ্গুলী থেকে শুরু করে একাধিক খেলোয়াড়রা গ্রেগের বিরুদ্ধে মুখও খোলে। এমনকি শচীন তেন্ডুলকর তাঁর বায়োপিকে বলেন, “গ্রেগ চ্যাপেল গোটা ভারতীয় টিমকে বিপর্যয়ের মধ্যে ফেলে দেন। বিশ্বকাপের আগে যেভাবে ব্যাটিং অর্ডারে উনি পরিবর্তন এনেছিলেন, তা দলকে কঠিন সমস্যায় ফেলে দেয়।”
এদিন যুবরাজ সিংহ বলেন, “গ্রেগ চাপেল কবহ থাকাকালীন সময় আমার এখনো মনে আছে। আমাকে তখন বলা হয়েছিল, কোচ কিংবা শচীনের মধ্যে যেকোনো একজনকে বেছে নিতে। কিন্তু আমি আমার সতীর্থকেই সমর্থন করি।” তিনি আরো বলেন, “ভারতীয় দলে তখন ওডিআই দলে রাহুল দ্রাবিড় অধিনায়ক ছিলেন এবং আমি ছিলাম সহ অধিনায়ক। এরপর ইংল্যান্ড সফরে বীরেন্দ্র সহবাগ দল থেকে বাদ পড়ে। ফলে আমি ভেবেছিলাম রাহুল দ্রাবিড়ের অনুপস্থিতিতে আমাকে হয়তো অধিনায়ক করা হবে, কিন্তু সেখানে হঠাৎ ধোনিকে ক্যাপ্টেন্সি দেওয়া হয়। এই সিদ্ধান্ত আমার বিরুদ্ধে গেলেও আমার কোন আফসোস নেই। পরবর্তীকালে ধোনি অধিনায়ক পদ খুব ভালোভাবে সামলায়। তাছাড়া অধিনায়কত্ব সবসময় বিরাট সম্মানের ব্যাপার। কিন্তু আমি সেইসময় আমার সতীর্থের পাশে থাকাকেই শ্রেয় মনে করি। কারণ যদি আমার সঙ্গীর বিরুদ্ধে তার চরিত্র নিয়ে খারাপ কোন কথা বলা হয়, তাহলে আমি কখনোই পিছু হাটবো না এবং সেই সময়ও তাই আমি সতীর্থের পাশে থাকারই সিদ্ধান্ত নি।”