বাংলা হান্ট ডেস্ক: যত দিন যাচ্ছে ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে প্লাস্টিকের ব্যবহার। আর যার বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে পরিবেশের ওপর। দেশ তথা সমগ্র বিশ্বেই এই সমস্যা বিপুল হারে পরিলক্ষিত হচ্ছে বর্তমানে। এমনকি, প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর জন্য একাধিক সরকারি নির্দেশিকা এবং বিধিনিষেধ আরোপ করা হলেও কোনো লাভই এখনও মেলেনি। এদিকে ক্রমবর্ধমান প্লাস্টিকের ব্যবহারের ফলে মাত্রাতিরিক্ত হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে দূষণের হারও। এমতাবস্থায় এবার বর্জ্য প্লাস্টিক দিয়েই রাস্তা তৈরি করে সবাইকে অবাক করে দিল ভারত।
ইতিমধ্যেই জানা গিয়েছে, ভারতে উদ্ভাবিত এই প্রযুক্তির এবার প্রত্যক্ষ ব্যবহার করতে চায় সরকার। এছাড়াও, রাস্তা নির্মাণে প্লাস্টিক বর্জ্যের ব্যবহারের পরীক্ষাও সফল হয়েছে। এই রাস্তাগুলি আরও টেকসই, সস্তা এবং মজবুত। পাশাপাশি, একটি প্রতিবেদন অনুযায়ী জানা গিয়েছে, একাধিক সড়ক নির্মাণ সংস্থা এখনও পর্যন্ত প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে এক লক্ষ কিলোমিটারেরও বেশি রাস্তা তৈরি করেছে।
মূলত, ২০১৬ সালে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নীতিন গড়করি রাস্তা নির্মাণে কঠিন ও প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করার ঘোষণা করেছিলেন। পাশাপাশি, ওই প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, এই পাইলট প্রকল্পে ১০ কিলোমিটার জাতীয় সড়কে ১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে। এই প্রসঙ্গে সেন্টার রোড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্দেশে বলা হয়েছে, এই নির্মাণগুলিতে শতকরা ১০ শতাংশ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে এবং তাতে লাভও মিলেছে।
ইতিমধ্যেই নয়ডা সেক্টর 14A-এর মহামায়া ফ্লাইওভার পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণে ছয় টন প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, দিল্লি-মিরাট এক্সপ্রেসওয়ের ইউপি গেটের কাছেও দুই কিলোমিটার রাস্তার জন্য প্রায় ১.৬ টন প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহার করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, ভারত প্রতিদিন কমপক্ষে ২৫,৯৪০ টন প্লাস্টিক বর্জ্য তৈরি করে, যা প্রায় ৪,৩০০ টি হাতির ওজনের সমান। কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের মতে, এর মধ্যে প্রায় ৬০ শতাংশ পুনর্ব্যবহৃত হয়। বাকিগুলিকে ফেলে দেওয়া হয় বা নর্দমায় আটকে যায়। এমনকি, কিছু আবার মাইক্রো-প্লাস্টিক হিসাবে সমুদ্রে চলে যায় বা পুড়ে যায়। আবার কিছু কিছু বায়ু দূষণকেও প্রভাবিত করে। এমতাবস্থায়, দৈনিক এই বিপুলসংখ্যক প্লাস্টিকের বোঝা কমাতে প্লাস্টিক বর্জ্য দিয়েই রাস্তা তৈরির উপায় নিঃসন্দেহে নতুন এক পথ দেখাচ্ছে সবাইকে।