রেশন নিয়ে রণক্ষেত্র হাসনাবাদে গুলিবিদ্ধ ১, দোকানে আগুন, ঘটনাস্থলে র‍্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ রেশন (Ration) বণ্টন নিয়ে দুই পাড়ার সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে উঠল উত্তর ২৪ পরগনার হাসনাবাদ (Hasnabad)। সংঘর্ষে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন এক ব্যক্তি। আহত দশ জন। বেশ কয়েকটি দোকান ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ, র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।

বসিরহাট মহকুমার হাসনাবাদ থানার মাখালগাছা গ্রাম পঞ্চায়েতের পাটকেলপোতা গ্রামে রেশনের চাল-ডাল বিলি করা নিয়ে এদিন সরদারপাড়া ও পাটকেলপোতার মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে গত তিন দিন ধরে একটি রেশন দোকানের বাইরে ইট, ব্যাগ, বোতল প্রভৃতি নিয়ে লোকে লাইন দিতে থাকেন। নির্দিষ্ট দূরত্ব মেনে লোকে এসব রাখতে থাকায় প্রায় দু’কিলোমিটার লম্বা লাইন পড়ে। লাইনে চারশো জন মতো লোক দেখে রেশন ডিলার জানিয়ে দেন অত লোককে দেওয়ার মতো জিনিস তাঁর দোকানে নেই। এনিয়েই প্রথমে বচসা ও তা থেকে মারামারি শুরু হয়।

773915 rationshop

শুক্রবার বেলা বারোটা নাগাদ সরদারপাড়ার একদল দুষ্কৃতী আচমকাই গুলি বোমা ও বন্দুক নিয়ে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। বেশ কয়েকটি বাড়ি ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। স্থানীয় কয়েক জন দোকানদারকে মারধর করে। বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। গুলিও চলে। গুলিতে আইজুল গাজি (Azizul Gazi) নামে এক গ্রামবাসী গুরুতর আহত হয়েছেন। হামলার ঘটনায় এক মহিলা-সহ দশ জন আহত হয়েছেন।

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে হাসনাবাদ থানার বিশাল পুলিশবাহিনী। তাঁরাই আগুন নেভান। জানা গেছে সাইফুল মণ্ডল নামে এক ব্যবসায়ীর দোকানে আগুন লাগিয়ে দিলে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার জিনিস পুড়ে নষ্ট হয়ে যায়। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের শিক্ষা ও ক্রীড়া বিভাগের কর্মাধ‍্যক্ষ ফিরোজ কামাল গাজি (Feroz Kamal Gazi) অভিযোগ করেন, তৃণমূলের সুষ্ঠু রেশন বণ্টনকে বানচাল করতে সিপিএম পরিকল্পিত ভাবে হামলা করেছে। এজন্য তিনি বসিরহাট উত্তরের সিপিএম নেতৃত্বের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, “সিপিএমের এই আচরণের নিন্দা করছি। পুরো ঘটনার তদন্ত করে অবিলম্বে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা প্রশাসনকে জানাচ্ছি।” যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। উত্তর ২৪ পরগনার সিপিএম জেলা সম্পাদক মৃণাল চক্রবর্তী বলেন, “এটা তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ফল। এর সঙ্গে সিপিএমের কোনও যোগাযোগ নেই। রেশনের লুঠের চাল ভাগ বাঁটোয়ারা নিয়ে নব্য তৃণমূল ও পুরনো তৃণমূলের গণ্ডগোল।”

মাথায় গুলি লেগে গুরুতর আইজুল গাজিকে প্রথমে বসিরহাট জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় সেখান থেকে তাঁকে কলকাতায় স্থানান্তরিত করা হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় টহল দিচ্ছে বিশাল পুলিশ বাহিনী, র‌্যাফ ও কমব্যাট ফোর্স।


সম্পর্কিত খবর