বাংলা হান্ট ডেস্কঃ দিনের বেলায় বাসের দেখা কম আর রাতে সেই দশা আরও বেহাল। একটু রাত হলেই যেন উধাও বাস। এদিকে বিকল্প পরিবহন হিসেবে অটোর ভাড়াও অনেক বেশি চাওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরই মাঝে হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ কার্যকর হয়েছে। যার জেরে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে শহর কলকাতায় (Kolkata) পরিস্থিতি আরও করুণ হওয়ার আশঙ্কা। ভোগান্তি বাড়বে সাধারণ মানুষের।
গণ পরিবহণে বড়সড় ধাক্কা
রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রতিদিন শহর কলকাতায় কম-বেশি ৩৫০০ বাস চলাচল করে। তবে ২০২৫ সালের মধ্যেই কলকাতা থেকে উধাও হয়ে যেতে পারে প্রায় ১৫০০ বাস। হাইকোর্টের নির্দেশে আগামী বছরই ১৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে এই বাসগুলির। আদালতের নির্দেশ মতো গত ১ অগস্ট থেকেই ১৫ বছরের পুরনো বাস রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার নির্দেশ কার্যকর করে পরিবহণ দফতর (15 year old vehicles)। যার জেরে এখনও পর্যন্ত রাজপথ থেকে উধাও হয়েছে মোট ৫৬৫টি বাস।
হঠাৎ করে এভাবে বাস কমতে থাকায় একদিকে যেমন চিন্তায় পড়েছেন বাস মালিকরা, তেমনই চিন্তা বাড়ছে রাজ্যের পরিবহন দফতরের। নিত্যদিন সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে যাত্রীদের। এই পরিস্থিতিতে সমস্যার কথা জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বেসরকারি মালিক সংগঠনগুলির নেতারা। বাসের বয়সসীমা পনেরো বছর থেকে বাড়ানোর পক্ষপাতী রাজ্য সরকারও।
প্রসঙ্গত, কিছু বছর আগে পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের করা মামলার ভিত্তিতে কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) নির্দেশ ছিল, ১৫ বছরের বয়ঃসীমা পেরিয়ে গেছে এমনি কোনও বাস আর কলকাতা শহর কলকাতা মিউনিসিপ্যাল ডেভেলপমেন্ট অথিরিটি (কেএমডিএ)-র এলাকায় চালানো যাবে না। গ্রিন ট্রাইবুনালের নির্দেশ অনুযায়ী, ১৫ বছরের পুরনো বাস বা বাণিজ্যিক পরিবহণ আর চালানো যায়না।
পরে এই নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় বাসমালিকদের সংগঠন। যদিও তাতে হস্তক্ষেপ করেনি শীর্ষ আদালত। বিষয়টি ফের কলকাতা হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। হাইকোর্টের নির্দেশ মতো গত অগস্ট থেকেই ১৫ বছরের পুরনো বাস তুলে নেওয়া হচ্ছে। যার জেরে ঘোর সমস্যায় পড়েছেন বাস মালিকরা। তাদের অভিযোগ, একেই ভাড়া বৃদ্ধি না হওয়ার কারণে বাস ব্যবসায় খুব একটা লাভ হয়না। তার উপর এই পরিস্থিতিতে নতুন বাস কেনার সামর্থ্য তাদের নেই।
রাজ্যের পরিবহণ দফতরের তথ্য বলছে, করোনার আগে শহরের (Kolkata) রাজপথে ৪ হাজার ৮৪০ টি বেসরকারি বাস চলত। এখন তা কমে হয়েছে মোটে ৩ হাজার ৬১৫। কোভিডের আগে মিনিবাস চলত ২ হাজার ৬৪। বর্তমানে তার পরিমাণ হয়েছে ১ হাজার ৪৯৮। এদিকে গত তিন মাসে পনেরো বছরের গেরোয় আরও পাঁচশোর বেশি বাস বসে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: কিস্তিতে মেটানো হবে বকেয়া DA-র টাকা, মহার্ঘ ভাতা নিয়েও বড় ঘোষণা রাজ্যের
রাজ্য পরিবহণ দফতরের আধিকারিকদের মতে, এই নিয়ম ঠিক নয়। যদি কোনও গাড়ির অবস্থা ভাল হয়, তা হলে তা ১৫ বছরের পুরনো হলেও সেই গাড়ি চালানো যেতে পারে। আবার আরেক আধিকারিক জানান , বাসের ক্ষেত্রে এই ১৫ বছরের নির্দেশে শুধুমাত্র কলকাতা ও দিল্লিতে লাগু রয়েছে। দেশের আরও কোথাও এই নির্দেশ নেই। বাস মালিক সংগঠনগুলির দাবি, হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫ বছর বলা হলেও, মাঝে কোভিডের কারণে ২ বছর সেভাবে বাস চলেনি। তাই করোনার ওই দুই বছর মুকুব করা হোক।