বাংলাহান্ট ডেস্ক: বীরভূম (Birbhum) থেকে বিপুল পরিমানে উদ্ধার জিলেটিন স্টিক। দিল্লি বিস্ফোরণের পর থেকেই দেশজুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। বাংলাতেও জারি করা হয়েছে রেড অ্যালার্ট। রাজ্যের সমস্ত থানাকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছে প্রশাসন। জোর দেওয়া হয়েছে নাকাতল্লাশি ও নজরদারিতে। সেই নির্দেশ মেনেই মঙ্গলবার রাতে নলহাটিতে নাকাতল্লাশি চালায় বীরভূম জেলা পুলিশ। আর সেখানেই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরকসহ একটি গাড়ি আটক করা হয়। উদ্ধার হয়েছে প্রায় ২০ হাজার জিলেটিন স্টিক। ইতিমধ্যে এই ঘটনায় একজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ, তবে বিস্ফোরকগুলির গন্তব্য কোথায় ছিল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
বীরভূম (Birbhum) থেকে উদ্ধার ২০ হাজার জিলেটিন স্টিক:
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূমের (Birbhum) নলহাটি থানার অন্তর্গত সুলতানপুর–নলহাটি রোডে মঙ্গলবার রাতে নিয়মিত নাকাতল্লাশি চলছিল। ঠিক তখনই ঝাড়খণ্ডের পাকুর দিক থেকে আসা একটি সন্দেহজনক গাড়িকে আটকায় পুলিশ। গাড়িটিতে থাকা ব্যক্তির হাবভাব দেখে সন্দেহ হওয়ায় গাড়িটি তল্লাশি করতে শুরু করেন আধিকারিকরা। মুহূর্তের মধ্যেই চমকে ওঠেন তাঁরা— গাড়ির ভেতরে স্তূপ করে রাখা রয়েছে প্রায় ৫০টি বস্তা, আর প্রতিটি বস্তাতেই ভর্তি জিলেটিন স্টিক।
বীরভূম (Birbhum) পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, উদ্ধার হওয়া জিলেটিন স্টিকের সংখ্যা প্রায় ২০ হাজার। এগুলি বিপজ্জনক বিস্ফোরক পদার্থ হিসেবে গণ্য। পুলিশের দাবি, গাড়িটির কোনও বৈধ কাগজপত্র ছিল না, এমনকী এই বিস্ফোরক পরিবহনের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমতিও দেখাতে পারেননি ধৃত ব্যক্তি। প্রাথমিক জেরায় সে জানিয়েছে, ঝাড়খণ্ডের দিক থেকে এই জিলেটিন স্টিক আনা হচ্ছিল। তবে কোথায় তা পৌঁছে দেওয়া হত, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানাতে পারেনি সে।
তদন্তকারীরা মনে করছেন, এর পিছনে একটি বড় আন্তঃরাজ্য চক্র কাজ করছে। দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনার পর যেভাবে বাংলায় নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে, তাতে এই বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক ধরা পড়ায় প্রশাসন আরও সতর্ক হয়ে উঠেছে। ধৃত ব্যক্তিকে জেরা করে জানা হচ্ছে, এই বিস্ফোরকগুলি কোনো নাশকতার উদ্দেশ্যে আনা হয়েছিল কিনা, নাকি বীরভূমের (Birbhum) পাথর খাদান এলাকায় ব্যবহারের জন্যই তা পরিবহন করা হচ্ছিল। কারণ, অতীতে পাথর বিস্ফোরণের কাজে জিলেটিন স্টিক ব্যবহারের নজির রয়েছে।

আরও পড়ুন:আরও সহজ হল পরিষেবা! পোস্ট অফিস লঞ্চ করল ‘Dak Seva 2.0’ অ্যাপ, বাড়িতে বসেই হবে প্রতিটি কাজ
বীরভূম (Birbhum) পুলিশের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, “প্রতিটি বস্তা আলাদা করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে, এই বিস্ফোরকগুলি অবৈধভাবে সংগ্রহ করা হয়েছিল। তদন্তে দেখা হচ্ছে এর সঙ্গে কোনও জঙ্গি সংগঠন বা আন্তঃরাজ্য নেটওয়ার্ক যুক্ত আছে কিনা।”
এদিকে, দিল্লির ভয়াবহ বিস্ফোরণের জেরে যেখানে এখনও পর্যন্ত ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে, সেখানে এই ঘটনায় নতুন করে নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। গোটা রাজ্যে পুলিশের তৎপরতা বেড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মোড়, রেলস্টেশন ও সীমান্তবর্তী এলাকায় নাকাতল্লাশি আরও জোরদার করা হয়েছে। বীরভূমের (Birbhum) ঘটনায় রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগও তদন্তে নেমেছে। রাজ্যজুড়ে এখন একটাই প্রশ্ন— এত বিপুল পরিমাণ বিস্ফোরক বাংলায় ঢুকল কীভাবে, আর তার পিছনে কারা?












