বাংলাহান্ট ডেস্ক: হাবরার কুমড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের কামদেবকাঠি নবপল্লীতে থাকত ২২ বছরের সায়ন। ছোট থেকেই তাঁর পাহাড়ের প্রতি খুব প্রেম ছিল। সেখান থেকেই ট্রেকিংয়ের সখ হয়েছিল তাঁর। কিন্তু সেই সখই কাল হল। বন্ধুদের সঙ্গে উত্তরাখণ্ডের ব্রহ্মতালে গিয়ে বাড়ি ফেরা হল না তাঁর (Uttarakhand Trekking Accident)। চার বন্ধু মিলে গিয়ে বাড়ি ফিরল কেবল সায়নের নিথর দেহ। ঘটনার জেরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে সায়নের পরিবার সহ গোটা এলাকায়।
জানা গিয়েছে, আরজিকর হাসপাতালের মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র ছিল সায়ন। পরিবার সূত্রে খবর, গত ১১ তারিখ বাড়ি থেকে উত্তরাখণ্ডে ট্রেকিংয়ে যাওয়ার কথা বলে বেরিয়েছিল সায়ন। তারপর সেই রাতে হোস্টেলে থেকে ১২ তারিখ সায়ন-সহ আরও তিন জন রওনা দেয় উত্তরাখণ্ডের উদ্দেশ্যে। তাঁদের পরিকল্পনা ছিল ব্রহ্মতাল লেকে ট্রেক করার।
পরিকল্পনা মাফিক চার জন ১৯ জানুয়ারি ট্রেক করে ১২ হাজার ফিট উচ্চতায় উঠেছিলেন। কিন্তু এখানেই ঘটে বিপত্তি। হঠাৎ অক্সিজেনের অভাব অনুভব করে অসুস্থ হয়ে পড়ে সায়ন মণ্ডল। বন্ধুর শারীরিক অবস্থার এমন অবনতি দেখে তাঁকে তড়িঘড়ি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় বাকি তিন জন। সায়নকে সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় স্থানীয় দেওয়াল গভর্নমেন্ট হাসপাতালে।
কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা সায়নকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। হাবরায় সায়ন মণ্ডলের বাড়িতে এই খবর পৌঁছতেই কান্নায় ভেঙে পড়েন পরিজনরা। শুধু পরিবারই নয়, সায়নের মৃত্যুর ঘটনায় শোকাহত প্রতিবেশীরাও। এলাকায় সায়নের বেশ ভাল নামডাক ছিল বলে জানা গিয়েছে। এলাকার দুঃস্থ মানুষের বিনামূল্যে চিকিৎসা করত ওই হবু ডাক্তার।
সায়নের বাড়িতে তার মা, বাবা ও দাদা রয়েছেন। ছেলে ও ভাইয়ের মৃত্যুর খবর পেয়ে তাঁরা সকলেই ভেঙে পড়েছেন। উত্তরাখণ্ড থেকে সায়নের দেহ নিয়ে আসা হয়েছে হাবরার বাড়িতে। তার তিন বন্ধুই ফিরিয়ে এনেছে বন্ধুর মৃতদেহ। তবে ঠিক কী কারণে সায়নের মৃত্যু হল, তা এখনও জানা যায়নি। যদিও বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক সময়েই বেশি উচ্চতায় গিয়ে শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতির ফলে শ্বাসকষ্টজনিত রোগের কারণে মৃত্যু হতে পারে। এছাড়াও বেশি উচ্চতায় ‘অল্টিটিউড সিকনেস’এর কারণেও এমন হয়ে থাকতে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।