বাংলাহান্ট ডেস্ক: নাশকতার ছক দেশের একাধিক শহরে! অস্ত্র চালান করতে গিয়ে গুজরাতে (Gujarat) ধৃত তিন। অভিযোগ উঠছে আইএসের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে ভারতের একাধিক শহরে হামলার ছক কষছিল তিন সন্দেহভাজন ব্যক্তি। রবিবার তাঁদের গ্রেফতার করল গুজরাত পুলিশের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। আহমেদাবাদ থেকে ধরা পড়া ওই তিন অভিযুক্তের নাম আহমেদ মহিউদ্দিন সইদ, মহম্মদ সুহেল এবং আজ়াদ। পুলিশের অভিযোগ, অস্ত্র চালানের উদ্দেশ্যেই তাঁরা গুজরাতে পৌঁছেছিলেন। গত এক বছর ধরে এই তিনজনের গতিবিধির উপর নজর রাখছিল গুজরাত এটিএস। অবশেষে অস্ত্র লেনদেনের সময় হাতেনাতে ধরা পড়েন তাঁরা।
গুজরাতে (Gujarat) এটিএস-এর জালে তিন সন্দেহভাজন
সংবাদ সংস্থা এএনআই সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে ধৃত তিনজনই জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের কাছ থেকে একাধিক ফোন, ল্যাপটপ ও সন্দেহজনক নথি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। কোন কোন শহর তাঁদের নিশানায় ছিল, তা এখনও জানা না গেলেও এটিএসের মতে, দেশের কয়েকটি বড় শহরে ভয়াবহ হামলার ছক ছিল তাঁদের মাথায়। গুজরাত (Gujarat) এটিএসের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “ধৃত তিনজন আইএসের নির্দেশেই ভারতের বিভিন্ন শহরে সন্ত্রাসমূলক হামলার পরিকল্পনা করছিল। তাঁরা গোপনে অস্ত্র ও বিস্ফোরক জোগাড় করছিলেন।” সূত্রের খবর, এই তিনজনের মাধ্যমে গোয়েন্দারা এখন আইএসের ভারতের শাখার মূল মাথার হদিশ খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। ধৃতদের জেরা করে জানা গিয়েছে, গত কয়েক মাস ধরে পাকিস্তান ও আফগানিস্তান থেকে অনলাইনের মাধ্যমে তাঁদের নির্দেশ দেওয়া হচ্ছিল। টেলিগ্রাম ও সিগন্যালের মতো এনক্রিপটেড চ্যানেলে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন তাঁরা।
আরও পড়ুন:CAA আবেদন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত, ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির আশ্বাস কেন্দ্রের!
এর আগে কয়েক মাস আগে গুজরাত (Gujarat) এটিএস আল কায়েদার পাঁচ সদস্যকে গ্রেফতার করেছিল, যাঁদের মধ্যে বেঙ্গালুরুর এক মহিলাও ছিলেন। অভিযোগ, ওই মহিলা পাকিস্তানি জঙ্গিদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে অনলাইনে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে মদত দিচ্ছিলেন। এবার আইএস জঙ্গি সংযোগে তিনজনের গ্রেফতারি সেই তৎপরতারই ধারাবাহিকতা বলে মনে করছে গোয়েন্দারা।
গুজরাত (Gujarat) পুলিশের এক সিনিয়র আধিকারিক জানিয়েছেন, “এই তিনজনের গ্রেফতারি বড় সাফল্য। তাঁদের পরিকল্পনা সফল হলে ভয়াবহ বিপর্যয় ঘটতে পারত।” তিনি আরও জানান, তদন্তে যদি আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংস্থার আরও যোগ মেলে, তবে ন্যাশনাল ইনভেস্টিগেশন এজেন্সি (এনআইএ)-র হাতে তুলে দেওয়া হতে পারে মামলা।

আরও পড়ুন:CAA আবেদন নিয়ে বড় সিদ্ধান্ত, ১০ দিনের মধ্যে নিষ্পত্তির আশ্বাস কেন্দ্রের!
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে ভয়াবহ জঙ্গি হামলায় ২৬ জন নিহত হয়েছিলেন। সেই ঘটনার নেপথ্যে পাকিস্তানের ভূমিকা প্রমাণিত হওয়ার পর থেকেই সারা দেশে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলি বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি চালিয়ে জঙ্গি চক্রের গতিবিধির উপর কঠোর নজর রাখছে। গুজরাতেও (Gujarat) সেই মতোই নজর রাখছিল পুলিশ।
তদন্তকারীদের মতে, পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই আইএস ও অন্যান্য জঙ্গি সংগঠন ভারতের শহরগুলিতে নতুন করে হামলার চেষ্টা চালাচ্ছে। গুজরাতে ধৃত তিনজন সেই বৃহত্তর নেটওয়ার্কের অংশ হতে পারেন বলেই মনে করা হচ্ছে। দেশজুড়ে সতর্কতা বাড়ানো হয়েছে, বিশেষ করে বড় শহরগুলিতে নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘেরাটোপ আরও কঠোর করা হচ্ছে। এই ঘটনায় গুজরাত (Gujarat) এটিএসের দ্রুত পদক্ষেপে সম্ভাব্য সন্ত্রাসের বড় ছক নস্যাৎ হয়ে গেল বলে মনে করছে গোয়েন্দা মহল।












