বাংলা হান্ট ডেস্কঃ কিছুদিন আগেই কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেছিলেন বিজেপির সাংসদ তথা চুঁচুড়া বিধানসভার বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছিলেন, রাজ্যে যখন দলীয় কর্মীরা আক্রান্ত, মহিলারা নির্যাতিত। তখন আমার কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা নিয়ে ঘোরার কোনও মানেই হয়না। আগে ওদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা হোক, তারপর না হয় আমাদেরটা দেখে নেওয়া যাবে। এবার লকেটের পর বিজেপির আরও তিন বিধায়ক কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা প্রত্যাহার করলেন।
নির্বাচনের আগে সিপিএম ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন দুঁদে বাম নেতা শঙ্কর ঘোষ। তিনি জানিয়েছিলেন যে, বিধানসভায় জয়লাভ করলেও তিনি নিরাপত্তা ব্যবহার করবেন না। ওনার মতে স্কুটিতে ঘোরাফেরা করতেই স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন তিনি। আরেকদিকে, উত্তর বঙ্গের আরও দুই বিজেপি বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ এবং শিখা চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন যে, এলাকার মানুষ খুবই সাধারণ এবং প্রায় বেশীরভাগই আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া। সেই কারণে তাঁরা যদি নিরাপত্তা নিয়ে ঘোরে, তাহলে এলাকার মানুষ আতঙ্কে ভুগবেন। তাঁরা নিজেদের সমস্যার কথা জানানোর বদলে দূরে দূরে থাকবেন, সেই কারণে তাঁরা নিরাপত্তা নিতে পারবেন না।
উল্লেখ্য, একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির ৭৭ জন প্রার্থী জয়লাভ করেছেন। তাঁদের মধ্যে দুজন আবার পদত্যাগ করেছেন। কারণ তাঁরা বিধায়ক হওয়ার পাশাপাশি সাংসদও। আর নিজেদের সাংসদ পদ ধরে রাখতেই তাঁরা বিধায়ক পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। জয়লাভের পর কেন্দ্রের তরফ থেকে সমস্ত বিজেপি বিধায়কদের নিরাপত্তা দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু প্রথমেই অনেক বিজেপির বিধায়ক নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেন।
নিরাপত্তা প্রত্যাহারের পিছনে দুটি কারণ দেখিয়েছিলেন বিজেপির বিধায়করা। তাঁদের মতে, ২ মে ফলাফল ঘোষণা হওয়ার পর রাজ্যজুড়ে তাঁদের কর্মীদের উপর অত্যাচার করা হচ্ছে। অনেকেই ভিটেমাটি ছেড়ে ভিন রাজ্যে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছেন। আবার অনেকের রাজনৈতিক হিংসায় প্রাণও গেছে। তাই কর্মীদের নিরাপত্তা দিতে না পাড়ার কারণে তাঁরা নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে।
আরেকদিকে, আরেকটিও যুক্তি দেওয়া হয়। দ্বিতীয় যুক্তিটি অনুযায়ী, কেন্দ্রের দেওয়া নিরাপত্তায় চারজন রক্ষী থাকবেন। তাঁদের থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা বিধায়কদের নিজেদেরই করে দিতে হবে। এই করোনা পরিস্থিতিতে অনেকেরই অভাবে সংসার চলছে। আবার অনেকের বাড়িতে এতলোক রাখার জায়গাও নেই, সেই কারণে তাঁরা নিরাপত্তা প্রত্যাহার করেন।