উচ্চতা মাত্র ৩ ফুট! MBBS পড়ার জন্য ছুটতে হয়েছে আদালতেও, আজ চিকিৎসক হয়ে নজির গড়লেন গণেশ

বাংলা হান্ট ডেস্ক: আমাদের চারপাশে এমন অনেকেই থাকেন যাঁরা তাঁদের অদম্য জেদ এবং সাহসের ওপর ভর করে তৈরি করেন সফলতার (Success Story) অনন্য নজির। এমনকি, কিছুজন আবার শারীরিক প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করেও নিজের লক্ষ্যে অবিচল থাকেন। বর্তমান প্রতিবেদনেও আজ আমরা ঠিক সেইরকমই একজনের প্রসঙ্গ উপস্থাপিত করব। যাঁর সম্পর্কে জেনে অবাক হবেন প্রত্যেকেই। মূলত, আজ আমরা আপনাদের কাছে যাঁর সম্পর্কে জানাবো তিনি হলেন গণেশ বারাইয়া (Ganesh Baraiya)।

তিনি যখন মেডিকেল কলেজে ভর্তি হতে চেয়েছিলেন, তখন মেডিকেল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (MCI) বিশ্বাস করেনি যে তিনি ডাক্তার হতে সক্ষম। কারণ তাঁর উচ্চতা ছিল মাত্র ৩ ফুট। যদিও, MCI-এর প্রত্যাখ্যান তাঁকে প্রভাবিত করতে পারেনি। সবথেকে উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, আজ তিনি MBBS-এর একজন ইন্টার্ন। জানিয়ে রাখি যে, যখন তিনি ২০১৮ সালে মেডিকেল কোর্সের জন্য আবেদন করেছিলেন, তখন MCI কমিটি তাঁর শারীরিক অবস্থার উল্লেখ করে অনুমতি প্রত্যাখ্যান করেছিল।

PTI-এর মতে, বারাইয়া জানিয়েছেন যে, “কমিটি জানায় আমি আমার উচ্চতার কারণে জরুরি বিষয় পরিচালনা করতে পারব না।” এদিকে, তিনি তাঁর স্কুলের প্রিন্সিপাল এবং অন্যান্য শুভাকাঙ্ক্ষীদের সাথে পরামর্শ করেছিলেন। তাঁরা তাঁকে এই সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। শুধু তাই নয়, এই মামলাটি গুজরাট হাইকোর্ট থেকে সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিল। যেখানে ২০১৮ সালে বারাইয়ার পক্ষে রায় আসে। তারপর তাঁকে ভাবনগরে সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির অনুমতি দেওয়া হয়।

আরও পড়ুন: চলমান টেস্ট সিরিজের মাঝেই অবসর ঘোষণা এই ভারতীয় খেলোয়াড়ের! নিয়েছেন ৫৪২ টি উইকেট

তিনি জানান, “২০১৯ সালের ১ অগাস্ট আমি মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি হয়েছিলাম এবং এইভাবে আমার MBBS সফর শুরু হয়। আমি সম্প্রতি আমার কোর্স শেষ করেছি এবং MBBS ডিগ্রি অর্জন করেছি। আমি এখন ভাবনগরের স্যার টি জেনারেল হাসপাতালে কাজ করছি।” এদিকে, ভাবনগর মেডিক্যাল কলেজের ডিন, ডঃ হেমন্ত মেহতা জানিয়েছেন, এটি তাঁর জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে বারাইয়া কোর্স শেষ করে ইন্টার্নশিপ করছেন।

আরও পড়ুন: টালমাটাল অর্থনীতি! তবুও, প্রতিরক্ষা খাতে ভারতের চেয়ে ৩ গুণ বেশি অর্থ বরাদ্দ চিনের, চমকে দেবে অঙ্ক

উল্লেখ্য যে, গণেশ প্রতিটি পরিস্থিতিতে সঠিক রাস্তা খুঁজে বের করতেন। ডাঃ মেহতা বলেন, “গণেশ মাঝে মাঝে তার সমস্যাগুলো আমাদের বলত এবং আমরা সেগুলো সমাধানের জন্য যথাসাধ্য চেষ্টা করতাম। তার বন্ধু, সহপাঠী এবং ব্যাচমেটরা অবশ্যই তাকে সবচেয়ে বেশি সাহায্য করেছে। কারণ তারা সবসময় তার সাথে ছিল। শিক্ষকরাও তাকে সাহায্য করেছিলেন। কারণ পুরো ক্লাসে তার ওপর সবচেয়ে বেশি মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজন ছিল।”


Sayak Panda
Sayak Panda

সায়ক পন্ডা, মেদিনীপুর কলেজ (অটোনমাস) থেকে মাস কমিউনিকেশন এবং সাংবাদিকতার পোস্ট গ্র্যাজুয়েট কোর্স করার পর শুরু নিয়মিত লেখালেখি। ২ বছরেরও বেশি সময় ধরে বাংলা হান্ট-এর কনটেন্ট রাইটার হিসেবে নিযুক্ত।

সম্পর্কিত খবর