৭ নভেম্বর, ২০২৫
বাংলা হান্ট ডেস্কঃ আজ ৭ নভেম্বর, সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক ও ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Abhishek Banerjee) জন্মদিন। কলকাতা সহ রাজ্যজুড়ে দলের নেতা-কর্মীরা তৃণমূল ‘সেনাপতির’ জন্মদিন উদযাপন করছেন। ডায়মন্ড হারবারে মধ্যরাতেই সাড়ম্বরে উদযাপিত হয় অভিষেকের জন্মদিন। একাধিক কর্মসূচি পালিত হয়।
রাতে যেমন কর্মসূচির অংশ হিসেবে কাটা হয় বিশাল কেক, আতশবাজির ঝলকানিতে আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে সাংসদের জন্মদিন, একইসাথে চিত্রশিল্পীদের তুলিতে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলা হয় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতিচ্ছবি। নেতার জন্মদিনের মূল চমক ২০,০০০ বর্গফুটের এক বিশাল ৩ডি রঙোলি শিল্পকর্ম। যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত যুব তৃণমূল।
জগদ্ধল টাউন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সভাপতি অভিমন্যু তিওয়ারি, ও তৃণমূলের অসংখ্য ছাত্র ও যুব কর্মীদের নেতৃত্বে ২০,০০০ বর্গফুটের ৩ডি রঙোলি এক নতুন বিশ্বরেকর্ডও স্থাপন করেছে বলে দাবি তৃণমূলের। তাদের দাবি এই রঙোলি তৈরিতে টানা ৭৮ ঘণ্টা সময় লেগেছে।
তৃণমূল কংগ্রেসের অফিসিয়াল পেজ থেকে বলা হয়েছে “এই বিশেষ দিনে শিল্পী শিখা শর্মা ও তাঁর দল মিলে তৈরি করেছেন মাননীয় সাংসদের এক বিশাল ত্রিমাতৃক প্রতিকৃতি। যা শ্রী অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লড়াইয়ের মতোই অনন্য এক শ্রদ্ধার্ঘ্য!” ইতিমধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল এই রঙোলি। শিল্পীদের অপরূপ হাতের কাজ ভরে ভরে প্রশংসা পেয়েছে সমাজমাধ্যমে। এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। তবে তৃণমূল তরফে আরও দাবি করা হচ্ছে, অভিষেকের ২০,০০০ বর্গফুটের এই থ্রিডি রঙ্গোলি প্রতিকৃতি গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে স্থান পেয়েছে। আর এখানেই শুরু বিতর্ক।
কেন বিতর্ক? কি এই গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস?
জানিয়ে রাখি, গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস একটি ভুয়ো প্রতিষ্ঠান। ২০১৯ সালে এমনটাই দাবি করা হয়েছে ‘The Free Press Journal’ এর রিপোর্টে। গুগুল দ্বারা প্রাপ্ত তথ্য বলছে, “গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস’ একটি কেলেঙ্কারী।
এই প্রতিষ্ঠান যথাযথ যাচাই বা বিশ্বাসযোগ্যতা ছাড়াই সার্টিফিকেট এবং রেকর্ডের জন্য অর্থ আদায় করে।” অর্থাৎ টাকার বিনিময়ে কাজ করে এই সংস্থা।
‘Nai Duniya News Network’ বলছে, এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতার নাম থেকে শুরু করে বিদেশী ঠিকানা সব কিছুই ভুয়ো। অন্য কোনও দেশে এর কোনও অস্তিত্ব নেই। ইন্দোর পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চের তদন্তে এই বিস্ফোরক তথ্য সামনে এসেছে। গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস আসলে একটি দোকানের মতো একক ব্যক্তির দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এক সংস্থা।
আরও পড়ুন: SIR আবহে নবান্ন তরফে কড়া নির্দেশ
গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের মালিক মনীশ বিষ্ণোই। ক্রাইম ব্রাঞ্চের কাছে দেওয়া তার জবানবন্দিতে, বিষ্ণোই নিজেই স্বীকার করেছেন ওয়েবসাইটে গোল্ডেন বুকের চেয়ারম্যান এবং প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে তাকে তিনি চেনেনও না বা তার সাথে কোনও যোগাযোগও নেই। এ হল ২০২০ সালের তথ্য। এবার ২০২৫ সালে এসে তৃণমূল তরফে দাবি করা হচ্ছে, অভিষেকের ২০,০০০ বর্গফুটের এই থ্রিডি রঙ্গোলি প্রতিকৃতি গোল্ডেন বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে (যা ভুয়ো বলে গণ্য) স্থান পেয়েছে। এই নিয়েই জোর চর্চা শুরু হয়েছে।












