বাংলা হান্ট ডেস্ক: এবার একটি চাঞ্চল্যকর ঘটনার প্রসঙ্গ সামনে এসেছে। এই প্রসঙ্গে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী জানা গিয়েছে যে, দেশের সবচেয়ে বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেসে (Tata Consultancy Services, TCS) ঘুষের পরিবর্তে চাকরি দেওয়ার মতো ঘটনা ঘটেছে। স্বাভাবিকভাবেই এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর সংশ্লিষ্ট কোম্পানিতে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি হয়।
এই প্রসঙ্গে “মিন্ট”-এর একটি রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে, TCS-এর কিছু সিনিয়ার আধিকারিক তাঁদের প্রার্থীদের চাকরি দেওয়ার পরিবর্তে স্টাফিং ফার্মগুলির কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন। পাশাপাশি, ওই রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে যে, বেশ কয়েক বছর ধরেই এই ঘটনা চলে আসছিল।
এদিকে, বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিয়েছে টাটা গ্রুপের কোম্পানি TCS। শুধু তাই নয়, সংস্থাটি তার রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ (RMG) থেকে চারজন আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে এবং তিনটি স্টাফিং ফার্মকে নিষিদ্ধ করেছে বলেও জানা গিয়েছে।
বিষয়টি কিভাবে প্রকাশ পেল: রিপোর্ট অনুসারে, এই পুরো বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে যখন একজন হুইসেলব্লোয়ার (যিনি গোপন তথ্য ফাঁস করেন) কোম্পানির CEO এবং COO-কে চিঠি লিখে দাবি করেন যে RMG-র গ্লোবাল হেড ইএস চক্রবর্তী, ক্যান্ডিডেটদের চাকরি দেওয়ার জন্য ওই সমস্ত স্টাফিং ফার্মগুলির কাছ থেকে ঘুষ নিচ্ছেন যাঁরা কোম্পানির জন্য প্রার্থীদের নিয়োগ করে। এদিকে, এই বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পর, আইটি প্রধান অভিযুক্তের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তের জন্য তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেন। যেখানে প্রধান তথ্য নিরাপত্তা অফিসার অজিত মেননও অন্তর্ভুক্ত ছিলেন।
১০০ কোটি টাকা আয় করার অনুমান: এদিকে, তদন্তের পরে, TCS তার রিক্রুটমেন্ট প্রধানকে ছুটিতে পাঠিয়েছে এবং ৪ জন RMG আধিকারিককে বরখাস্ত করেছে। পাশাপাশি, অভিযুক্ত ইএস চক্রবর্তীকে অফিসে আসতে বাধাও দেওয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি ওই বিভাগের আরেক অধিকারিক অরুণ জিকে-কেও কোম্পানি থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
এক আধিকারিককে উদ্ধৃত করে ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, গত তিন বছরে কোম্পানিটি কন্ট্রাক্টর সহ ৩ লক্ষ ৫০ হাজার প্রার্থীকে নিয়োগ করেছে। পাশাপাশি, তিনি আরও অনুমান করছেন যে, এই কেলেঙ্কারিতে জড়িতরা কমিশনের মাধ্যমে কমপক্ষে ১০০ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন।
TCS-এ রয়েছে ৬ লক্ষেরও বেশি কর্মী: উল্লেখ্য যে, গত মার্চের ত্রৈমাসিকের ফলাফলের ভিত্তিতে, সংস্থাটি জানিয়েছিল যে তারা FY23-তে ২২,৬০০ কর্মী নিয়োগ করেছে। এমতাবস্থায়, ৩১ মার্চ, ২০২৩ পর্যন্ত কোম্পানির কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৬,১৪,৭৯৫ জন। অপরদিকে, গত ডিসেম্বরের ত্রৈমাসিকের ফলাফলে, সংস্থাটি জানায় যে, তাদের কর্মচারীর সংখ্যা ছিল ৬,১৩,৯৭৪। এদিকে, ওই ত্রৈমাসিকের ফলাফলের পরে, কোম্পানির চিফ এইচআর অফিসার মিলিন্দ লাক্কড় বলেছিলেন যে, “বিগত কয়েক ত্রৈমাসিকে, আমাদের ফোকাস হল বৃহৎ পরিসরে নতুন প্রতিভা নিয়ে আসা এবং তাদের নতুন প্রযুক্তির প্রবণতার মাধ্যমে প্রোডাক্টিভ করে তোলা।”