বাংলাহান্ট ডেস্ক: অশান্তির আবহে দেশ ত্যাগের হিড়িক। গ্রিসে আটক ৪৩৭ জন বাংলাদেশী অভিবাসী (Bangladeshi Immigrants)। ইউনূস জমানায় বাংলাদেশে মৌলবাদী তৎপরতা চরমে পৌঁছেছে বলে অভিযোগ উঠছে বিভিন্ন মহলে। রাজনৈতিক অস্থিরতা, হিংসা ও নিরাপত্তাহীনতার আবহে সুস্থ ও নিরাপদ জীবনের আশায় ইউরোপে পাড়ি দেওয়ার প্রবণতা বাড়ছে বাংলাদেশিদের মধ্যে। সেই চিত্রই আবার সামনে এল গ্রিসে। অবৈধভাবে সমুদ্রপথে ইউরোপে প্রবেশের চেষ্টা করার সময় ৪৩৭ জন বাংলাদেশি-সহ মোট ৫৩৯ জন অভিবাসীকে আটক করেছে গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী। গ্রিসের দক্ষিণাঞ্চলের গাভদোস দ্বীপ সংলগ্ন সমুদ্র থেকে একটি মাছ ধরার নৌকা থেকে তাঁদের উদ্ধার করা হয়।
গ্রিসে আটক শতাধিক বাংলাদেশি অভিবাসী (Bangladeshi Immigrants)
গ্রিসের প্রশাসন জানিয়েছে, উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের (Bangladeshi Immigrants) সংখ্যাই সবচেয়ে বেশি। গত শুক্রবার, ১৯ ডিসেম্বর ভোররাতে আগিয়া গ্যালিনির দক্ষিণে বিপদগ্রস্ত নৌকাটির খোঁজ পায় হেলেনিক কোস্ট গার্ড। পরে নৌকা থেকে সকলকে উদ্ধার করে ক্রিট দ্বীপের রেথিম্নো শহরের কিত্রেনোসি ভবনে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে উপকূলরক্ষী বাহিনীর তত্ত্বাবধানে তাঁদের নিবন্ধন ও পরিচয় যাচাইয়ের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়।
আরও পড়ুন:দু’বার ব্যর্থতা, তৃতীয় চেষ্টায় বাজিমাত, মোটা মাইনের চাকরি ছেড়ে IAS হলেন বিশাখা
প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে চারজন মহিলা ও দু’টি শিশু রয়েছে। বাকিরা মূলত প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ। রেথিম্নোর কোস্টগার্ড প্রধান কিরিয়াকোস পাত্তাকোস জানান, মানবপাচার চক্রের সঙ্গে যুক্ত দালালদের চিহ্নিত করাই এখন প্রশাসনের প্রধান লক্ষ্য। একই সঙ্গে উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের দ্রুত অন্যত্র স্থানান্তরের ব্যবস্থাও করা হচ্ছে, যাতে স্থানীয় এলাকায় অতিরিক্ত চাপ না পড়ে।
এই ঘটনায় চাপের মুখে পড়েছে স্থানীয় প্রশাসনও। রেথিম্নো পুরসভার ডেপুটি মেয়র (নাগরিক সুরক্ষা) ইয়োরগোস স্কোরদিলিস জানিয়েছেন, একসঙ্গে এত বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে রাখার মতো পর্যাপ্ত পরিকাঠামো তাদের নেই। কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে সমন্বয়ের অভাব পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে। প্রশাসনিক বৈঠকের পর সিদ্ধান্ত হয়েছে, সোমবার ৩০০ জন অভিবাসীকে অন্যত্র স্থানান্তর করা হবে এবং বাকিদের আগামী সপ্তাহে ধাপে ধাপে সরিয়ে নেওয়া হবে।

উদ্ধার হওয়া অভিবাসীদের মধ্যে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি রয়েছেন ৪৬ জন পাকিস্তানি, ৩৪ জন মিসরীয়, ১২ জন ইরিত্রীয় ও সোমালি এবং সুদান, ইয়েমেন ও ফিলিস্তিনের ৫ জন নাগরিক। প্রাথমিক অনুমান, মানবপাচারকারীদের সহায়তায় তাঁরা লিবিয়ার পূর্বাঞ্চল থেকে প্রায় ৩৬ ঘণ্টার ঝুঁকিপূর্ণ সমুদ্রযাত্রা করে গ্রিসে পৌঁছনোর চেষ্টা করছিলেন। তবে নৌকাটি ঠিক কোথা থেকে যাত্রা শুরু করেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে গ্রিসের উপকূলরক্ষী বাহিনী। এই ঘটনায় গ্রিসে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাসের পক্ষ থেকেও এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া মেলেনি।












