বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্কঃ বিরাট কোহলি (Virat Kohli) এই প্রজন্মের সেরা ব্যাটার, এটা তার অতি বড় নিন্দুকরাও মেনে থাকেন। কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে ম্যাচ জেতানো একাধিক ইনিংস আজ তাকে সেরার আসনে বসিয়েছে। বর্তমানে ভারতের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের সাথে সাক্ষাৎ কম হয়ে থাকে, কারণ দুই দেশ এখন আর দ্বিপাক্ষিক সিরিজে অংশগ্রহণ করে না। কিন্তু তাও বহুদলীয় টুর্নামেন্টগুলিতে পাকিস্তানের শক্তিশালী বোলিংয়ের বিরুদ্ধেও বরাবর জ্বলে উঠেছে বিরাট কোহলির ব্যাট। আজকের এই প্রতিবেদনে আমরা ফরম্যাট নির্বিশেষে দেখে নেব পাকিস্তানের বিরুদ্ধে খেলা বিরাট কোহলির সেরা ৫টি ইনিংস।
◆ ৪৯ (২০১৬ এশিয়া কাপ): সেই বছর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের আয়োজিত এশিয়া কাপটি খেলা হয়েছিল বাংলাদেশে। মিরপুরের মাঠে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল ভারত এবং পাকিস্তান। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৮৫ রানের টার্গেট ভারতের সামনে রাখতে পেরেছিল আফ্রিদিরা। কিন্তু রান তারা করতে নামা ভারতকে বেকায়দায় ফেলে দেন মহম্মদ আমির। প্রথম ওভারেই দুটি দুর্দান্ত ডেলিভারিতে রোহিত এবং রাহানেকে ড্রেসিংরুমের রাস্তা দেখিয়ে দেন তিনি। এরপর যুবরাজ সিং-কে সঙ্গে নিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে লড়াই আরম্ভ করেন বিরাট কোহলি। শেষ অবধি তিনি ক্রিজে থাকতে পারেননি ঠিকই, কিন্তু ৫১ বলে তার খেলা ৪৯ রানের ইনিংসটি ভারতকে সেদিন এক অকল্পনীয় হারের গ্রাস থেকে উদ্ধার করেছিল।
◆ ৫৫* (২০১৬ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ): এখানেও পরিস্থিতিটা কিছুটা একই রকম হয়েছিল। বিশ্বকাপে কলকাতার মাটিতে হাইভোল্টেজ ভারত পাকিস্তান ম্যাচে ১৮ ওভারের খেলায় ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল ১১৯। কিন্তু রান তারা করতে নেমে ফিরে একবার দ্রুত ফিরে গিয়েছিলেন রাহানে, ধাওয়ান এবং রায়না। ফের একবার যুবরাজ সিং-কে সঙ্গে নিয়ে ভারতকে কঠিন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করেন কোহলি। নিজের ৩৭ বলে ৫৫ রানের ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন এবং ভারতকে একটি দুর্দান্ত জয় উপহার দেন।
◆ ১২২* (২০২৩ এশিয়া কাপ): বৃষ্টিবিঘ্নিত এশিয়া কাপের সুপার ফোর পর্যায়ের ম্যাচে শুভমান গিল এবং রোহিত শর্মার মধ্যে দুর্দান্ত পার্টনারশিপ হওয়ার পর পরপর তুই ওভারে দুই উইকেট তুলে দুর্দান্তভাবে ম্যাচে ফেরে পাকিস্তান। এই সময়ের প্রয়োজন ছিল ঠান্ডা মাথার ইনিংসের। লোকেশ রাহুলকে সঙ্গে নিয়ে ঠিক এমনই একটা ইনিংস খেলেন বিরাট কোহলি। যদিও অর্ধশতরান সম্পূর্ণ হওয়ার পর তার রুদ্ররূপ দেখতে পায় পাকিস্তান। একাধিক দৃষ্টিনন্দন শট খেলে মাত্র ৯৪ বলে ১২২ রানের তার এই অপরাজিত ইনিংসটির দৌলতে ম্যাচে ২২৮ রানের ব্যবধানে জয় পায় ভারত।
◆ ৮২* (২০২২ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ): ভারতের সামনে লক্ষ্য ছিল ১৬০ রান। আর রান তাড়া করতে নেমে ৩১ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে রীতিমতো সঙ্গীন অবস্থা হয়েছিল ভারতীয় দলের। এখনো অবস্থা থেকে হার্দিক পান্ডিয়াকে সঙ্গে নিয়ে দলের হাল ধরেন কোহলি। প্রায় অসম্ভব হয়ে যাওয়া পরিস্থিতি থেকে ভারতীয় দলকে তিনি ম্যাচে ফেরান। এই ম্যাচে পাকিস্তানের ফাস্ট বোলার হ্যারিস রাউফকে মারা তার দুটি ছক্কা ইতিহাসের পাতায় চিরস্থায়ীভাবে জায়গা করে নিয়েছে। শেষপর্যন্ত ৮২ রানে অপরাজিত থেকে ভারতকে জয় পেতে সাহায্য করেন কোহলি।
◆ ১৮৩ (২০১২ এশিয়া কাপ): নাসির জামশেদ ও মহম্মদ হাফিজের শতরান এবং ইউনিস খানের হাফ সেঞ্চুরিতে ভর করে ভারতের সামনে জয়ের জন্য ৩৩০ রানের টার্গেট রেখেছিল পাকিস্তান। প্রথমে সচিন টেন্ডুলকার এবং পরবর্তীতে রোহিত শর্মার সঙ্গে জুটি বেঁধে এই অসম্ভবকে সম্ভব করার লক্ষ্যে নামেন বিরাট কোহলি। ১৪৮ বলে ১৮৩ রানের একটি মারাত্মক ইনিংস খেলেন যা তার কেরিয়ারের অন্যতম সেরা ইনিংস বলে মনে করেন অনেকে। ১৫ বল বাকি থাকতে জয় পায় ভারত।