বাংলা হান্ট নিউজ ডেস্ক: ছিলেন না নীরজ চোপড়া। কমনওয়েলথ থেকে বাদ পড়েছিল শুটিং, আর্চারি, কাবাডির মতো খেলাগুলি যেগুলো থেকে ভারত একাধিক পদক পেয়ে থাকে। অনেকেই সন্দিহান ছিলেন এই নিয়ে ভারত ৫০ পদকের গণ্ডি অতিক্রম করতে পারবে কিনা। কিন্তু তাদের সকলকে ভুল প্রমাণিত করে ভারতীয় ক্রীড়াবিদরা মোট ৬১ টি পদক জিতে ২২ তম কমনওয়েলথ গেমসে চতুর্থ স্থানে শেষ করেছে। কিন্তু এই কমনওয়েলথ গেমসে একটা বেশ আশ্চর্য ব্যাপার চোখে পড়েছে সকলের। ভারতীয় আর্মির সাথে জড়িত বেশকিছু ক্রীড়াবিদ এই কমনওয়েলথ গেমস থেকে পদক এনে দিয়েছেন দেশকে। এদের মধ্যে অনেকের নামই ভারতীয়রা আগে খুব একটা শোনেনি। আজকের এই প্রতিবেদন তাদের সম্মান জানিয়েই।
• সুবেদার অমিত পাঙ্গাল (বক্সিং): পুরুষদের ৪৮-৫১ কেজি বিভাগে সোনা জিতেছিলেন বক্সার অমিত পাঙ্গল। ইংল্যান্ডের মাটিতেই ব্রিটিশ প্রতিপক্ষ কাইরান ম্যাকডোনাল্ডকে ৫-০ ফলে ফাইনালে পরাজিত করে তিনি দিনের এবং বক্সিংয়ে তখনকার মতো দ্বিতীয় স্বর্ণপদক জয় করেছিলেন। অমিত কেরিয়ারে প্রথমবার কমনওয়েলথ গেমসে সোনা জিতেছেন। শেষবার তিনি ২০১৮ গোল্ড কোস্টে কমনওয়েলথে দেশকে রৌপ্য পদক এনে দিয়েছিলেন। এরপর ২০১৮ সালের জাকার্তা এশিয়ান গেমসেও সোনা জিতেছেন তিনি।
• নায়েব সুবেদার অবিনাশ সাবলে (স্ট্রিপল চেজ): কেনিয়ার ২৪ বছরের সাম্রাজ্যে থাবা বসিয়ে কমনওয়েলথে একটি ঐতিহাসিক রৌপ্যপপদক জিতেছে ভারত। স্টিপলচেজার অবিনাশ সাবলে কমনওয়েলথ গেমস ২০২২-এ পুরুষদের ৩০০০ মিটার স্টিপলচেজ ইভেন্টে একটি ঐতিহাসিক পদক জয় করেছেন। তিনি এই রুপোটি জিততে ৮:১১.২০ সময় নিয়েছেন যা একটি নতুন জাতীয় রেকর্ড। এর আগে অবিনাশ নিজেও কোনওদিন এত ভালো টাইমিং করতে পারেননি। পদক জয়ের গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তে নিজের সেরাটা বার করে আনেন তিনি। ১৯৯৪ সালের পর প্রথম কমনওয়েলথ গেমসে প্রথম কেনিয়ার বাইরের অন্য কোনও দেশের প্রতিযোগী হিসাবে এই খেলায় পোডিয়ামে উঠেছেন অবিনাশ।
• নায়েব সুবেদার জেরেমি লালরিননুঙ্গা (ভারোত্তোলন): ইনার স্বর্ণপদক ছিল ভারতের এবারের প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় সোনা জয়। মিরাবাঈয়ের মতোনই তিনি কমনওয়েলথে নয়া রেকর্ড গড়েছেন। স্ন্যাচ ইভেন্টে ১৪০ কেজি ওজন তুলে ইতিহাস গড়ার পাশাপাশি জেরেমি ক্লিন এন্ড জার্ক বিভাগে ১৬০ কেজি ওজন তুলেছেন। সব মিলিয়ে মোট ৩০০ কেজি তুলে পুরুষ বিভাগে পদক জয় তার। কিন্তু দুর্ভাগ্যের ব্যাপার যে এদিনে ১৬৫ কেজি তুলতে গিয়ে নিজের কুনুইয়ে আঘাত পান জেরেমি। ফলে ১৬০ কেজিতেই থামতে হয় তাকে।
• হাবিলদার অচিন্ত্য শিউলি (ভারোত্তোলন): অচিন্ত্যও রেকর্ড গড়ে সোনা এনে দেন ভারতকে। গেমসের তৃতীয় দিনে ভারতীয় ক্রীড়াঅনুরাগীরা তার পারফরম্যান্সের দিকে চোখ রেখেছিল। প্রথমেই স্ন্যাচে তিনি ১৪৩ কেজি ওজন তোলেন যা ৭৩ কেজি বিভাগে কমনওয়েলথ রেকর্ড। এরপর ক্লিন এন্ড জার্কে তিনি তুলেছেন ১৭০ কেজি। দুটি মিলিয়ে তিনি মোট ৩১৩ কেজি ওজন তুলেছেন। এটিও একটি কমনওয়েলথ রেকর্ড।
এরা ছাড়াও কুস্তিতে ৮৬ কেজি ক্যাটাগরিতে পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ মুহম্মদ ইনামকে ৩:০ ফলে হারিয়ে দেশকে স্বর্ণপদক এনে দিয়েছেন দীপক পুনিয়া। তিনি হয়তো সকলের কাছে এতটা অপরিচিত ছিলেন না কিন্তু অনেকেই জানতেন না তিনি একজন ভারতীয় সেনাকর্মী এবং সুবেদার পদে রয়েছেন।
‘ভারত আজ পর্যন্ত অলিম্পিকে সোনা পায়নি …’ ভরা মঞ্চে বেফাঁস মমতা