বাংলা হান্ট ডেস্কঃ বাংলা দৈনিকে পাত্র-পাত্রী বিজ্ঞাপন খুবই সাধারণ একটি বিষয়। রোজই বহু পাণী প্রার্থী এ ধরনের বিজ্ঞাপন দিয়ে থাকেন। তবে ৭০ বছর বয়সী প্রবীণের বিবাহের জন্য বিজ্ঞাপন সাধারণভাবেই কম দেখা যায়। এখন যদি বলা হয়, এই পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি অন্তত ৭০ জন, এবং তাদের মধ্যে রয়েছেন ২৪-২৫ বছরের যুবতীরাও, তাহলে কিছুটা অবাক হওয়াই স্বাভাবিক। তবে এমনটাই ঘটেছে বাগুইআটির বাসিন্দা মিস্টার গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে।
গত ৩১ অক্টোবর একটি বাংলা দৈনিকের বিবাহের জন্য পাত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দেন তিনি। বিজ্ঞাপনে স্পষ্ট উল্লেখ করে দেওয়া হয় বয়স। “৭০ / ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি, অবসরপ্রাপ্ত RBI-ম্যানেজার, কলিতে নিজস্ব দোতলা বাড়ি, পেনশন হোল্ডার। ৫০-এর মধ্যে পাত্রী চাই”। তারপর সেই বিজ্ঞাপন দেখেই অবিশ্রাম ফোন শুরু পাত্রীপক্ষের তরফ থেকে। এখনো পর্যন্ত অন্তত গোটা ৭০ ফোন পেয়ে গিয়েছেন ওই প্রবীণ। কিন্তু এই বয়সে কেন তার বিবাহের ইচ্ছা?
তিনি জানান, সম্পূর্ণ পরিবারের ইচ্ছাতেই বিবাহ করতে চান তিনি। বছর সাতেক আগে তার স্ত্রী মারা গিয়েছেন। এক মেয়ে নিজের পরিবার নিয়েই থাকে। নাতি-নাতনিরাও পড়াশোনা করছে স্কুলে। কিন্তু এই বৃদ্ধ বয়সে তাকে পরিচর্যা করার জন্য তো একজন লোক দরকার। বৃদ্ধাশ্রমের নানা নিয়ম কানুন, আর সেই কারণেই সে পথে হাঁটতে চান না তিনি। অপরদিকে আবার কোন আয়া বা কাজের মহিলা রাখে নানান কটু কথা শুনতে হয় সমাজের পক্ষ থেকে। আর সেই কারণেই নতুন করে বিবাহ করে সামাজিক স্বীকৃতি দিতে চান তিনি।
তিনি বলেন, “বৃদ্ধাশ্রমের অনেক নিয়ম-কানুন। চিরকাল নিজের মতো করে বেঁচেছি। শেষ বয়সটা অন্যের অধীনে কাটাই কী করে? আর বিয়ে করা মানে তো আমার কাছে অন্য কিছু না। একজন সঙ্গিনীকে কাছে পাওয়া। সে আমায় যাতে দেখভাল করে একটু। বাড়িতে কাজের জন্য রাখলে তো মানুষ আরও কূট মন্তব্য করবে। তার থেকে বিয়ে করে সামাজিক স্বীকৃতি দেওয়াটাই তো ভাল।”
ইতিমধ্যেই গত রবিবার একটি পাত্রী পরিবার এসে দেখাও করে গেছে তাদের সঙ্গে। ওই প্রবীণ জানান, উপস্থিত ছিলেন তার মেয়ে জামাইও। তিনি কাউকে বঞ্চিত করতে চান না, সকলের জন্যই নিজের সম্পত্তি সমানভাবে ভাগ করে দেবেন। তাই আর কিই বা বাধা থাকতে পারে।