বাংলা হান্ট ডেস্ক: সম্প্রতি হিন্দি দিবসের দিন ‘এক রাষ্ট্র, এক ভাষা’- এর সওয়াল তুলেছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, তিনি বলেন, ভারতের মতো দেশে বহু রাজ্যে বহু ভাষা রয়েছে। তাদের প্রত্যেকটির গুরুত্ব রয়েছে। কিন্তু দেশের একটি ভাষা থাকা আবশ্যক, যে ভাষার জন্য আমাদের দেশকে বিশ্ব স্বীকৃতি দেবে ভারতীয় ভাষা হিসেবে। যদি কোনও ভাষা দেশকে বাঁধতে পারে, তা হল হিন্দি।’ অমিত শাহের এই মন্তব্যের পর এই সাড়া পড়ে গিয়েছে গোটা দেশে, তুলকালাম শুরু করেছেন বিরোধীরা, তাদের একটাই নিশানা দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। শুধু তাই নয়, সমগ্র দেশের বহু সাধারণ মানুষ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার এই প্রচেষ্টার তীব্র নিন্দা করেছেন।
এই বিরোধিতার সূত্র ধরেই এবার কলকাতায় বিক্ষোভে নামল একটি সংগঠন। ‘সে নো টু হিন্দি ইমপোজিশন’, প্ল্যাকার্ড হাতে বহু মানুষ এদিন জমায়েত হন কলেজ স্ট্রিটে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হিন্দি আগ্রাসনের মন্তব্য নিয়ে তীব্র কটাক্ষ করেছেন সকলে। শুধু তাই নয় ঘটনাচক্রে দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যের জন্যে তাঁর ছবিও পোড়ানো হয়। এই বিক্ষোভ মিছিলে শুধু বাঙালিরাই ছিলেন না, বরং ভিন্ন ভাষার বহু মানুষও তাতে যোগ দেন।
কলকাতার এই ঘটনার পাশাপাশি, রানীগঞ্জের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হিন্দি আগ্রাসন নিয়ে দেখানো হয় বিক্ষোভ। বাংলা ভাষার জন্যে কাজ করা ‘বাংলা পক্ষ’-র তরফে নামা হয় আন্দোলনে। রানীগঞ্জ গার্লস স্কুলে বাংলা পক্ষের তরফে একটি সভা করা হয়। সেখানে অভিযোগ তোলা হয় যে গোটা জেলায় যথেষ্ট শিল্প থাকলেও স্থানীয়দের কাজে নেওয়া হয় না, শ্রমিক বা কর্মচারী নিয়ে আসা হয় মূলত হিন্দি বলয়ের রাজ্য থেকে।
শুধু তাই নয় রানীগঞ্জের এই বিক্ষোভ আরো ভয়ঙ্কর রূপ নেয় ক্রমে ক্রমে, নেতাজী সুভাষচন্দ্রের মূর্তির পাদদেশে ‘হিন্দি ভারতের রাষ্ট্রভাষা’, ‘হিন্দি একতার ভাষা’, ‘এক দেশ, এক ভাষা’ লেখা কাগজ পুড়িয়ে ও স্লোগান দিয়ে হুংকার তোলা হয়। এ সংগঠনের তরফ থেকে স্পষ্ট দাবি জানানো হয়, ‘ভারতের কোনও রাষ্ট্রভাষা নেই, হবে না৷ বাংলা পক্ষ তা হতে দেবে না৷ গোটা বাংলা জুড়ে আন্দোলনের আগুন ছড়িয়ে পড়বে৷ হিন্দি সাম্রাজ্যবাদী সাবধান।’