বাংলা হান্ট ডেস্ক : রাত যত বেড়েছে ততো বেড়েছে ঝড়ের তান্ডব। সঙ্গে দমকা হাওয়ায় সেই তান্ডবলীলা কে আরো কয়েক গুন বাড়িয়ে দিয়েছে। বাড়ির টিনের চাল থেকে বড় বড় গাছ সবাই এই তাণ্ডবের মধ্যে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সাগর দ্বীপ, কাকদ্বীপ, বকখালি সহ বিভিন্ন জায়গার পাশাপাশি সবচেয়ে ব্যপক ক্ষয় ক্ষতি হয় পাথর প্রতিমা বিধানসভার জি প্লট গোবরধন পুর এলাকায়। এখানে বহু কাঁচা বাড়ি ধুলিসাত হয়ে গেছে, এমনকি বিদ্যুৎ এর উচু স্তম্ভ গুলি নিমেষে মাটিতে মিশে গিয়েছে। নিমেষের বিভিন্ন জনপদ পরিণত হয়েছে ধ্বংসস্তূপে।
বুলবুল ঝড়ের সর্তকতা জারি করেছিল আবহাওয়া দপ্তর। সেইমতো বিভিন্ন রকম প্রস্তুতি নিয়েছিল প্রশাসনের তরফ থেকে। তার সত্বেও আটকানো যায়নি ক্ষয়ক্ষতি। বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এই ঝড়ের প্রভাবে। গোসাবা ব্লকের কুমিরমারি ,সাতজেলিয়া, লাহিরিপুর পাখিরালায় ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। লাইন দিয়ে রাস্তার ধারে লাগানো সমস্ত কাজ গুলো উপরে ও ভেঙে পড়েছে। বহু মাটির বাড়ি ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে সুন্দরবন সংলগ্ন বিভিন্ন দ্বীপ এলাকা থেকে। নদীতে থাকা বহু টুরিস্ট নৌকা ভুটভুটি ও লঞ্চও ঝড়ের তান্ডব চলছে। ভেঙে গেছে সেই সব জলযান গুলি।রাস্তাজুড়ে প্রচুর পরিমাণে গাছ পড়ে থাকার কারণে মানুষের যাতায়াত প্রায় বন্ধ হতে বসেছে। থেমে গেছে জনজীবন। তার উপর নদীতে খেয়া-পারাপার না হয় সমস্যা বেড়েছে আরও কয়েকগুণ।
শুধু তাই নয় ঝড়ের তাণ্ডব শুরু হতেই এলাকার বিদ্যুৎ পরিস্থিতি একেবারে ভেঙে পড়েছে।
পরিস্থিতি সামাল দিতে ইতিমধ্যে বিদ্যুৎ দপ্তর এর বহু কর্মী নেমে পড়েছেন কাজে। সুন্দরবনের ক্যানিং, গোসাবা ,বাসন্তী ও জিবনতলা এলাকাতেই প্রায় পাঁচ হাজারের উপর পোস্ট ভেঙে পড়ার খবর পাওয়া গেছে বিদ্যুৎ দপ্তর এর তরফ থেকে। কোনরকম ভাবেই বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হচ্ছে। তবে স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে বলে বিদুৎ দপ্তর এর তরফ থেকে জানানো হয়েছে।
প্রবল বুলবুল ঝড়ের প্রভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধান চাষের। হেক্টর পর হেক্টর জমি জলের তলায় চলে গেছে।প্রচুর পরিমাণে ধান সেই জলের মধ্যে ডুবে থাকায় আদৌ সেই ধান মানুষ ঘরে তুলতে পারবে কিনা বুঝতে পারছে না। কারণ ধান পাকতে এখনো বেশ কিছুটা সময় দিতে হবে। আর এতদিন জলের তলায় থাকলে সব ধান পচে যাবে। বহু মানুষ চেষ্টা করছেন দ্রুত জল সরিয়ে ধান বাঁচানোর। শুধু ধান নয় শীতের মরসুমে সমস্ত সবজির এই প্রবল ঝড় বৃষ্টিতে মাটির সঙ্গে মিশে গেছে।