রহস্যজনক ঘটনা: ঠিক ১০০ বছর অন্তর অন্তর বিশ্বে ফিরেছে মহামারী

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয় তা মহামারী হলে। বর্তমানে নতুন করোনাভাইরাসকে (corona virus) বিশ্বব্যাপী মহামারী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এমন সংক্রামক রোগের ইতিহাস বেশ দীর্ঘ। প্রাচীন যুগে মানুষ যখন বেঁচে থাকার জন্য শিকারের ওপর নির্ভরশীল ছিল, তখন থেকেই সংক্রামক রোগের অস্তিত্ব দেখা যায়।

২০২০ (2020) সাল পড়তে না পড়তেই গোটা বিশ্ব এ এক মহামারীর আকার ধারণ করেছে করোনাভাইরাস। কিন্তু অদ্ভুত ভাবেই প্রকৃতি খেলা দেখিয়েছে ১০০ বছর অন্তর অন্তর। কি করে ঠিক ১০০ বছর অন্তর এই মহামারী বারবার ফিরে এসেছে এর কোন উত্তর বিশেষজ্ঞরা দিতে পারেননি।

corona index 2003171712

১৭২০(1720) সালে ইউরোপে (Europe) ছড়িয়ে পড়েছিল বিউবনিক প্লেগ। এই রোগের উৎস ছিল মার্সেইল। সেখান থেকে ধীরে ধীরে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। এটি মহামারীর আকার ধারণ করে। নাম দেওয়া হয়েছিল ‘গ্রেট প্লেগ অফ মার্সেইল’ (Great Plague of Marseille)। এর আরেকটি নাম ও দেওয়া হয় যা হল ‘ব্ল্যাক ডেথ’। পাঁচিল তুলে দেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায় যাতে এই রোগটি আর না ছড়াতে পারে।
১৮২০ (1820) সাল, ঠিক ১০০ বছর পরে মহামারীর আকার ধারণ করল কলেরা। গোটা বিশ্বে মৃত্যু হয় প্রায় ৪ কোটি মানুষের। মৃত্যুর মিছিল চলে চীন রাশিয়া এবং ভারতে।
এবার সালটা ১৯২০(1920)। আবারও ঠিক ১০০ বছর পরে। এবার থাবা বসালো স্প্যানিশ ফ্লু। দু’বছর ধরে এই ফ্লুতে যেখানে মৃত্যু হয় ৪ কোটি মানুষের। তবে হু জানায় সংখ্যাটি ৫ কোটি। অনেক মানুষ মারা গেলেও ২০ থেকে ৪০ বছর বয়সী মানুষের ওপর বেশি পরিমাণে থাবা বসিয়েছিল এই স্প্যানিশ ফ্লু। উত্তর আমেরিকা, ইউরোপের দেশগুলো এর থাবা থেকে রেহাই পায়নি। ট্রলিতে বোঝাই করে মৃতদেহ নিয়ে গিয়ে একসঙ্গে সৎকারের ব্যবস্থা করা হচ্ছিল।
Capture mari

এবার সালটা ২০২০ (2020), আবারো ফিরে এসেছে মহামারী। এবারে রোগটির উৎস করোনাভাইরাস। যার উৎস স্থল চীন (china) এর উহান (uhana)। তবে চীন এখন খানিকটা কাটিয়ে উঠেছে। এখনো সামলে উঠতে পারছে না ইতালি। ইতালিতে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপরে সেখানকার দেশের মানুষের এতোটাই আস্থা ছিল যে, সরকারের নির্দেশনাকে অগ্রাহ্য করে তারা দিনের পর দিন কাটিয়েছে। সিনেমা দেখেছে, শপিংমলে গেছে, পার্টি করেছে। যার ফলে ইতালিতে করোনাভাইরাস মহামারীর আকার ধারণ করেছে। ক্রমশ বেড়েই চলেছে মৃত্যু-মিছিল। একসময় যে শহরগুলো জনমানবের পদধ্বনিতে গমগম করত, সেই শহর কার্যত এখন ‘ভুতুড়ে শহরে’ পরিণত হয়েছে। প্রিয়জনের মৃত্যুর পর শেষ দেখা টুকু দেখতে পাচ্ছেন না মানুষ। অসহায় অবস্থা।

হয়তো আবারো ১০০ বছর পরে নতুন কোন রোগ নিয়ে দেখা দেবে মহামারী। তখন ইতিহাসের পাতায় ২০২০ সালে এই কোন ভাইরাসের আক্রমণও লেখা থাকবে। প্রতিবার মহামারী দেখিয়ে দিয়েছে সে কোনরকম ধনী-গরীব, উচ্চ নীচ ভেদাভেদ করে না। বিপদে পড়লে সবাই এক। কাল পর্যন্ত হয়তো যে মানুষটা তার চাকরি টিকিয়ে রাখার জন্য অথবা প্রেমকে টিকিয়ে রাখার জন্য সদাব্যস্ত হয়ে উঠেছিল, আজকে সেই মানুষটাই শুধু বাঁচতে চায়।

সম্পর্কিত খবর