বাংলাহান্ট ডেস্কঃ করোনাকে (corona) কেন্দ্র করে কেন্দ্রীয় সংস্থা আইসিএমআর-নাইসেড এবং রাজ্য সরকারের মধ্যে টানাপড়েন চলছিলই। কিট নিয়ে তরজার দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়ে গেল রবিবার। আইসিএমআর-নাইসেডের বিরুদ্ধে টুইট করে নিম্ন মানের কিট সরবরাহের অভিযোগ তুলল রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর।
সম্প্রতি, করোনা সংক্রমণে নমুনা পরীক্ষার হার নিয়ে প্রকাশ্যে মন্তব্য করেছিলেন নাইসেড-প্রধান শান্তা দত্ত (Shanta Dutta)। তা নিয়ে কম হইচই হয়নি। তার পরে আরও বেশি নমুনা পরীক্ষা করানোর জন্য রাজ্যের উপরে চাপ বাড়তে শুরু করে। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার ফল পেতে কেন দেরি হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে আইসিএমআর-নাইসেডকে নিশানা করে এ দিন স্বাস্থ্য দফতরের তরফে পরপর চারটি টুইট করা হয়। প্রথম টুইটে বলা হয়েছে, দু’সপ্তাহ আগে আইসিএমআর-নাইসেড থেকে যে-সব কিট দেওয়া হয়েছে, সেগুলি ব্যবহার করে বিপুল সংখ্যক নমুনার রিপোর্ট অসম্পূর্ণ এসেছে। এই প্রেক্ষিতে পুনরায় পরীক্ষা করে চূড়ান্ত রিপোর্ট পেতে দেরি হয়েছে।
টুইটের জবাবে নাইসেড অধিকর্তা লিখিতভাবে জানান, “সমস্যাটি আইসিএমআর গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। তারা এটা জানে। ইউএস থেকে স্ট্যান্ডার্ড কিটের সরঞ্জাম আসত পুনের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব ভাইরোলজি অর্থাৎ এনআইভি-তে। এনআইভি সেই কিটগুলোকে অ্যাসেম্বল করত বিভিন্ন রিএজেন্ট ও কন্ট্রোলের মাধ্যমে। তারপর বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে কিটগুলি সরাসরি তারা সরবরাহ করত। এখন দেশে প্রচুর পরিমাণ কিট দরকার। ফলে এনআইভি সেই কাজ করে উঠতে পারছে না। কার্যত সেটা অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখন আইসিএমআর রেডিমেড কিট সংগ্রহ করছে। তারপর তা দেশের ২৬টি সেন্টারে বা ডিপোতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন ল্যাবরেটরিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য। এই কিটগুলি সঠিক রেজাল্ট দিচ্ছে না। তা আইসিএমআর ইতিমধ্যেই সব রাজ্যকে জানিয়ে দিয়েছে। কিটগুলি ডিফারেন্ট এবং ইনকনক্লুসিভ রেজাল্ট দিচ্ছে। কিটগুলিকে পরীক্ষার জন্য উপযুক্ত করতে বিশেষ দক্ষতা দরকার। পরীক্ষার উপযুক্ত করে তুলতে বেশ কিছু পরিবর্তন প্রয়োজন। সেটা নাইসেড করতে পারে। মেডিক্যাল কলেজগুলির ল্যাবরেটরিগুলির পক্ষে তা একটু কঠিন। তাদের সেই ব্যাপারটা নেই।”
একদিকে দেশে যখন Covid-19-এর সংক্রমণ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে, সেইসময় এই তথ্য যথেষ্ট চাঞ্চল্যকর ও নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক। বেশ কিছু কিটে ত্রুটি, পরীক্ষার ফল সঠিক আসছে না! তাহলে দেশে বা রাজ্যে করোনায় আক্রান্তের সঠিক ছবিটা কী? স্বাভাবিকভাবেই এবার সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। ছড়াচ্ছে আতঙ্ক। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গে (West Bengal) ১০,০০০ Random Testing Kit এসে পৌঁছেছে। ওইসব কিট দিয়ে সোমবার থেকেই রাজ্যে শুরু হচ্ছে র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্ট। রাজ্যের হটস্পট এলাকা, ক্লাস্টার এলাকায় ওই কিট দিয়ে পরীক্ষা চালাবে রাজ্য সরকার। র্যাপিড কিট দিয়ে হাওড়া, কলকাতা, উত্তর ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় পরীক্ষা শুরু হয়ে যাবে। আসলে সব কোম্পানির কিট এক হয় না।’’ তিনি জানান, এক-একটি সংস্থার কিট স্ট্যান্ডার্ডাইজ় করার পদ্ধতি আলাদা। স্ট্যান্ডার্ডাইজ় করার পদ্ধতি সোজা নয়। যাদের এ কাজে অভিজ্ঞতা কম, তাদের পক্ষে খুবই অসুবিধার। ‘‘আমাদের সমস্যা হচ্ছে না। আইসিএমআর সমাধানসূত্র খুঁজছে,’’ বলেন শান্তাদেবী।