বাংলা হান্ট ডেস্ক : চিন্ময়কৃষ্ণ দাস (Chinmay Krishna Das) —ইসকনের প্রাক্তন সাধু, বর্তমানে বাংলাদেশ হিন্দু মহাজোটের মুখপাত্র। সেই চিন্ময়কেই খুনের মামলায় প্রধান অভিযুক্ত করল বাংলাদেশ পুলিশ। মঙ্গলবার চট্টগ্রাম মহানগর আদালতে জমা দেওয়া চার্জশিটে তাঁর নাম রয়েছে প্রথমে। সঙ্গে রয়েছে আরও ৩০ জনের নাম। খুনের সময় তিনি ছিলেন পুলিশ হেফাজতে, তাও তাঁকেই দায়ী করায় উঠছে বহু প্রশ্ন।

আদালত চত্বরে আইনজীবীর খুন, সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু
ঘটনাটি ২০২৩ সালের ২৬ নভেম্বরের। জাতীয় পতাকার অবমাননার অভিযোগে চিন্ময় তখন চট্টগ্রাম জেলে বন্দি ছিলেন। সেদিন তাঁকে আদালতে হাজিরা দিতে আনা হয়। সেই সময় আদালতের বাইরে তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাঁধে। বিশৃঙ্খলার মধ্যেই খুন হন সরকারি প্যানেলের তরুণ আইনজীবী শাইফুল ইসলাম। তাঁর বাবা এরপর চিন্ময়সহ ৩১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন। চিন্ময়ের সমর্থকদের দাবি, শাইফুলের মৃত্যু অনিচ্ছাকৃত দুর্ঘটনা হলেও, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে চিন্ময়কে ‘বলি’ দেওয়া হচ্ছে।
পাঁচটি মামলা, একটি বিস্ফোরক আইনে
চিন্ময়ের বিরুদ্ধে ইতিমধ্যেই পাঁচটি মামলা রুজু হয়েছে। জাতীয় পতাকার অপমান, বিস্ফোরক দ্রব্য আইন, উসকানিমূলক মন্তব্য—সব মিলিয়ে পুলিশের চোখে ‘বিরাট বিপজ্জনক’ হয়ে উঠেছেন এই প্রাক্তন সাধু। তিনি একাধিকবার জামিনের আবেদন করলেও, সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত তা খারিজ হয়েছে। হিন্দু সংগঠনগুলির অভিযোগ, এক জন প্রভাবশালী হিন্দু ধর্মীয় নেতাকে চুপ করাতেই এই সাজানো মামলা। তাঁরা বলছেন, চিন্ময়কে রাজনৈতিক কারণে টার্গেট করা হচ্ছে।
আরও পড়ুনঃ কসবা কাণ্ডের মূল অভিযুক্ত ‘ভাইপো গ্যাং’-এর সদস্য! এবার সরাসরি অভিযোগ শুভেন্দুর

ষড়যন্ত্র না কি বাস্তব দোষ?
পুলিশ দাবি করেছে, চিন্ময়ের উপস্থিতিতেই তাঁর অনুসারীরা উগ্র হয়ে ওঠেন। তাঁদের হিংসাত্মক আচরণেই প্রাণ যায় শাইফুলের। তবে চিন্ময় নিজে তখন পুলিশের জিম্মায় ছিলেন, তাই কীভাবে তিনি দায়ী, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিশ্লেষকরা। চট্টগ্রামের আদালতে পুলিশের জমা দেওয়া চার্জশিটকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তুমুল বিতর্ক। চিন্ময়কৃষ্ণ দাস কি সত্যিই ষড়যন্ত্রের শিকার, না কি তাঁকে আড়াল করতে চাইছে একটি সংগঠিত গোষ্ঠী? সেই উত্তরই খুঁজছে এখন গোটা দেশ।