বন্ধুদের ম্যাসেজ করে চীনের প্রোডাক্ট ব্যবহার করতে বারণ করেছিলেন রাজেশ

বাংলাহান্ট ডেস্কঃ বাঁধ ভাঙ্গা হাহাকার, গুমরে কাঁদছে শহিদের গ্রাম। রাজেশ যে আর নেই তা বিশ্বাসই যেন করতে চাইছে না কেউ। ভারত-চীন (india-china) সংঘর্ষে যে ২০ জন জওয়ান শহিদ হয়েছেন তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের (Birbhum) রাজেশ ওরাং নামে এক জওয়ান। জওয়ানের এক বন্ধু ভারাকান্ত মন নিয়ে দুঃখের সুরে বলেছেন যে, ” ওর বাড়ি ফেরা মানেই বন্ধুদের সঙ্গে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলত আড্ডা। আমি ওকে জানিয়েছিলাম যে ভারত-চীন সীমান্তে যখন পরিস্থিতি খারাপের দিকে তখন চিনের জিনিস ব্যবহার করতে না করেছিল রাজেশ ৷ রাজেশের চলে যাওয়ায় অনেক কষ্ট পেলাম।”

জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন রাজেশ ওরাং ৷ সরস্বতী পুজোর সময় শেষবারের মতো বাড়ি এসেছিলেন ৷ বাড়ি আসার কথা থাকলেও,  লকডাউনে কারনে আর আসতে পারেনি বাড়ি। মাঝে শুরু হয়ে যায় ভারত-চীন সীমান্তে মুখোমুখি সংঘর্ষ ৷ সোমবার রাতে লাদাখের ভারত-চিন নিয়ন্ত্রণরেখায় নতুন করে উত্তেজনা তৈরি হয় ৷ যার জেরে শহিদ হন তিন ভারতীয় সেনাকর্মী। গুরুতর জখম হয়েছিলেন ১৭ জন ৷ পরে তারাও শহিদ হন ।

lo 6

ভারতীয় সেনার তরফে জানানো হয়েছিল, অতিরিক্ত ঠান্ডার কারণে ওই জখম ১৭ জনের শহিদ হয়েছেন ৷ মোট ২০ জওয়ান শহিদ হয়েছেন । তাঁদের মধ্যে রয়েছেন বীরভূমের রাজেশ ওরাং। রাজেশের শহিদ হওয়ার খবর প্রথম পান বোন শকুন্তলা ওরাং ৷ প্রধানমন্ত্রীর কাছে এর বদলা চাইবেন বলে জানায় শহিদ রাজেশের পরিবার ৷

 রাজেশের বন্ধু সূত্র থেকে জানা গিয়েছে, হোয়াটসঅ্যাপে রাজেশের বন্ধুদের একটা গ্রুপ ছিল ৷ রাজেশ সেখানে সীমান্ত থেকে সুন্দর সুন্দর ছবি তুলে পাঠাতেন ৷ প্রতিদিন সবার খবর নিতেন ৷ বাড়ি ফেরা মাত্রই বন্ধুদের সঙ্গে গল্প করতে যেতেন। ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলত তাদের আড্ডা ৷ আর আজ রাজেশের মৃত্যু খবরে গাছতলায় বসে রয়েছে তারই কয়েকজন বন্ধু ৷ চেহারায় শোকের ছাপ ৷ বন্ধুকে শেষ দেখার অপেক্ষা ৷ সেই গ্রুপে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ছবি পাঠাত ৷ মজার মেসেজ করত ৷ আর আসবে না রাজেশের মেসেজ ৷ চিন সীমান্তে উত্তেজনা বাড়ায় রাজেশ বলেছিল চীনের জিনিস ব্যবহার করতে না ৷ চিনের সফটওয়্যার ব্যবহার করতে না ৷” আমরা আর কেউ রাজেশকে দেখতে পাব না, আড্ডা মারতে পারব না।


সম্পর্কিত খবর