বাংলা হান্ট ডেস্কঃ সম্প্রতি হাগিয়া সোফিয়া (Hagia Sophia) মিউজিয়ামকে মসজিদ বানানোর জন্য তুর্কি (Turkey) শিরোনামে উঠে এসেছে। যদিও, এই দেশ আরও অন্যান কারণে হামেশাই চর্চায় বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। আর সেই বিষয় গুলোর মধ্যে একটি হল, তুর্কির একটি মন্দির, যেখানে কেউ গেলে সে আর ফেরত আসে না। প্রাচীন শহর হেরাপোলিসে বানানো এই মন্দিরকে নরকের দ্বারও বলা হয়। বছর দুয়েক আগেই এই মন্দিরের রহস্যের উপর থেকে পর্দা উঠেছে।
এক সময় তুর্কির হেরোপোলিস শহর অ্যাডভেঞ্চারে রুচি রাখা মানুষের খুব পছন্দের জায়গা ছিল। দেশি, বিদেশি পর্যটকরা সেখানে গিয়ে এই রহস্যময় মন্দিরে যাওয়ার ইচ্ছে দেখাত। এই মন্দির নিয়ে বলা হত যে, এই মন্দিরের ছায়াও কেউ মারালে সে আর ফেরত আসে না। শোনা যেত যে, মন্দিরের আশেপাশে মানুষ কেন, পশু পাখিরা গেলেও মৃত্যু নিশ্চিত ছিল। সময়ের সাথে সাথে এই মন্দিরের রহস্য আরও বেড়ে যায়।
এই মন্দিরকে প্লুটোর মন্দির বলা হত। প্লুটো মৃত্যুর দেবতা ছিলেন। অনেক বছর পর্যন্ত মানা হত যে, মৃত্যুর দেবতার রোষের কারণে এই মন্দিরের আশেপাশে কেউ গেলে তাঁর মৃত্যু হয়ে যেত। প্রায় ঘটে যাওয়া ঘটনার পর সেখানকার মানুষ মন্দিরের আশেপাশে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছিল। পর্যটকেরা সেখানে যাওয়া চেষ্টা করলে, স্থানীয় মানুষেরা তাঁদের আটকে দিত।
হেরাপোলিস শহরের পাহাড়ি এলাকায় থাকা এই মন্দির প্রাচীন রোমান শহরের অংশ। কোন পর্যটক সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করলে এলাকাবাসী তাঁদের হাতে খাঁচায় বন্দি একটি পাখি দিয়ে দিত। ওই পাখি মন্দিরের সীমানায় যাওয়ার কয়েক মিনিট পর মারা যেত। আর সেটা দেখেই পর্যটকেরা মন্দিরে যাওয়ার ইচ্ছে ছেড়ে দিত।
২০১৮ এর ফেব্রুয়ারি মাসে জানা যায় যে রহস্যময়ী মন্দিরের নীচে একটি গুহা আছে। যেখানে প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাইঅক্সাইড গ্যাস মজুত আছে। এর সাথে সাথে অনেক রকম বিষাক্ত গ্যাস ওই গুহার মধ্যে আছে। ওই মন্দিরে প্রায় ৯১ শতাংশ কার্বন ডাই অক্সাইড গ্যাস আছে যার ফলে সেখানে যাওয়ার মাত্র ১০ মিনিটের মধ্যে মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে। কার্বন ডাই অক্সাইড মন্দিরের গুহার মধ্যে থাকে আর সেখান থেকে মন্দিরের ভিতরে গ্যাস ছড়িয়ে যায়। আর এই গ্যাসের সংস্পর্শে আসলেই মানুষ কেন, যেকোন প্রাণীর মৃত্যু অনিবার্য।