বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ২৬ কিংবা ২৭ মে ওড়িশা তথা বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে আছড়ে পড়তে চলেছে ঘূর্ণিঝড় ইয়াস। ইতিমধ্যেই কোভিডের সঙ্গে এই মহামারীকেও পাল্লা দিতে যথেষ্ট তৎপর রাজ্যগুলি। পশ্চিমবঙ্গেও এরমধ্যেই কন্ট্রোল রুম খুলেছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রায় ৬৫ টি বিশেষ দলকে পাঠানো হয়েছে উপকূলবর্তী এলাকাগুলিতে। কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে, রয়েছে কুড়িটি স্ট্যান্ডবাই দলও।
বাতিল করা হয়েছে জরুরী পরিষেবা সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মীদের ছুটি। চরম সর্তকতা জারি করা হয়েছে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, হাওড়া হুগলি সহ একাধিক রাজ্যে। আবহাওয়া দপ্তরের আশঙ্কা অনুযায়ী ইতিমধ্যে বৃষ্টিপাতও শুরু হয়ে গিয়েছে দক্ষিণবঙ্গের বেশ কয়েকটি জেলায়। পরিস্থিতি যখন ভীষণ রকম জটিল, তখন ফের একবার সামনে এল কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত।
সোমবার ইয়াসের মোকাবিলার জন্য বেশকিছু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। বৈঠকে জানানো হয় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় অগ্রিম বরাদ্দ হিসেবে ওড়িশা এবং অন্ধপ্রদেশকে দেওয়া হবে ৬০০ কোটি টাকা করে। একই ঝড় ইয়াসকে মোকাবিলা করার জন্য বাংলা পাবে অগ্রীম ৪০০ কোটি।
এই ঘটনার পরেই ফের একবার প্রশ্ন তোলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বৈঠকের পর সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “কেন্দ্র সহযোগিতা করবেন বলেছেন অমিত শাহ। ওড়িশা ৬০০ কোটি টাকা পাচ্ছে। অন্ধ্রপ্রদেশও ৬০০ কোটির বেশি পাচ্ছে। সেখানে বাংলার জন্য শুধু ৪০০ কোটি বরাদ্দ করা হয়েছে। আমি প্রশ্ন তুলেছি, আয়তন এবং জনসংখ্যার নিরিখে ওড়িশার থেকে বড় হলেও, আমাদের কেন বঞ্চিত করা হচ্ছে। বুলবুল, আমফান এবং কোভিডে আগেও কিছু পাইনি। আবার ইয়াস আসছে।”
যদিও এই প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্য, “এর পিছনে সায়েন্স আছে।” এদিনের এই মন্তব্যকে কটাক্ষ করে তৃণমূল নেত্রী বলেন, “আমি একটু-আধটু পলিটিক্যাল সায়েন্স বুঝি, সায়েন্স টা ঠিক বুঝি না।” সাথে সাথেই এদিন ইয়াস সম্পর্কেও মানুষজনকে সচেতন করেন তিনি। তিনি বলেন, “অযথা আতঙ্কিত হবেন না। তবে সতর্ক থাকতে হবে। জানলা দিয়ে উঁকিঝুঁকি নয়। ঝড়ে টিন উড়ে আসতে পারে। আগের বার যেমন অভিযোগ সামনে এসেছিল, এ বার সিইএসসি আরও তৎপর। কেন্দ্রীয় বাহিনী, বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী প্রস্তুত। আমরা তৈরি আছি।”
ইতিমধ্যে একাধিক নির্দেশ জারি করলেও ১০ লক্ষ মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে আসাই এখন সরকারের একমাত্র লক্ষ্য বলেও জানান মমতা। তার বার্তা, ইতিমধ্যেই ওষুধের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ সময় ডায়রিয়া, জ্বর প্রভৃতি নানা রোগ হয়। ঝড় কেটে গেলেও তাণ্ডবটা থেকে যাবে। তাই সকলকে একযোগে কাজ করতে হবে। তবে প্রেস কনফারেন্সে একযোগে কাজ করার বার্তা দিলেও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বৈঠকে একবার কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাতের ছবিটাই যে সামনে এলো তা বলাই বাহুল্য।