বাংলা হান্ট ডেস্কঃ তৃণমূল বিজেপির হাড্ডাহাড্ডি টক্করে রীতিমতো যুদ্ধক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল একুশের বিধানসভা নির্বাচন। সামনে এসেছিল বিভিন্ন রাজনৈতিক সংঘর্ষ চিত্র, একদিকে যেমন বাংলায় ২০০ আসন জয়ের স্বপ্ন দেখছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। তেমনি অন্যদিকে দু’শোর বেশি আসন পেয়ে ক্ষমতায় ফেরার ডাক দিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেস। ২ মে প্রকাশিত হয়েছে ভোটের ফলাফল, বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ফের একবার ক্ষমতায় ফিরেছে তৃণমূল কংগ্রেস। একশোরও কম আসনে আটকে গিয়েছে বিজেপি।
আর তারপর থেকেই বাংলা জুড়ে শুরু হয় ভোট পরবর্তী রাজনৈতিক হিংসা। আক্রান্ত হন, দুই দলের একাধিক কর্মী। বহু বিজেপি কর্মী এখনো বাড়ি ছাড়া, কেউ পালিয়ে গিয়েছেন অসমে। কেউবা আশ্রয় নিয়েছেন ঝারখন্ড এলাকায়। কিছুদিন আগেই আট বিজেপি কর্মীর পরিবারকে ঘরে ফিরে বীরভূমের ময়ূরেশ্বর সম্প্রীতির ছবি তুলে ধরেছিল তৃণমূল কংগ্রেস।
কিন্তু এবার সামনে এলো ঠিক তার উল্টো ছবি। জানা গিয়েছে, বীরভূমের দোর্দণ্ডপ্রতাপ অনুব্রতর গড়ে এখনো ঘর ছাড়া প্রায় ৭০০ বিজেপি কর্মীর পরিবার। এখন ফসলের মরসুম, কিন্তু বাড়ির পুরুষরা সকলেই ঘরছাড়া হওয়ায় মাঠেই নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল। কেউ কেউ তৃণমূলের পতাকা হাতে নিয়ে ঘরে ফিরেছেন দায়ে পড়ে। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দিতে হচ্ছে বড় জরিমানা এমনই অভিযোগ বিজেপি নেতৃত্বের। আর সেই কারণেই ঘরে ফিরতে পারছেন না প্রায় ৭০০ বিজেপি কর্মীর পরিবার।
স্থানীয় নেতৃত্বের দাবি, নির্বাচনের আগে যেমন প্রার্থীদের গাড়ি ভেঙ্গে দেওয়া, বিজেপি কর্মীদের মারধর ইত্যাদি একাধিক অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। তেমনি নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরেও শুরু হয় ভোট পরবর্তী হিংসা। আর তার জেরেই বীরভূম সাঁইথিয়া, বোলপুর, ময়ূরেশ্বরের একাধিক পরিবার পালিয়ে গিয়েছিলেন ঝাড়খন্ড, মুর্শিদাবাদ, তারাপীঠের বিভিন্ন এলাকায়। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যেটা এখনো ঘরে ফিরতে পারছেন না তারা।
পুলিশ প্রশাসনকে বলেও কোন লাভ হয়নি বলেই দাবি করেন জেলা বিজেপি নেতা কালোসোনা মন্ডল। তিনি বলেন, “আমরা এর আগেও একটি তালিকা জেলা পুলিশ সুপার এবং জেলা শাসকের কাছে জমা দিয়েছিলাম। তারপরও বহু কর্মী সমর্থক এখনো বাড়ির বাইরে রয়েছেন। আমরা আরো একটি তালিকা দেব। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে নিজেরাই পথে নামবো।”
বীরভূম জেলার সুপার নগেন্দ্র ত্রিপাঠী অবশ্য বলেছেন, “আমাদের কিছু তালিকা দেওয়া হয়েছিল। তাদের ঘরে ফেরানো হয়েছে। আমাদের হাতে বাকি ঘরছাড়াদের তালিকা দেয়া হলে তাদেরও ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা হবে।” সবমিলিয়ে রাজনৈতিক ছবিটাতে মোটেই ভালো নয়, তা বলাই বাহুল্য।