বাংলাহান্ট ডেস্ক: বিনোদন তথা সাহিত্য জগতে নক্ষত্র পতন। প্রয়াত বিশিষ্ট পরিচালক ও সাহিত্যিক বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত (buddhadeb dasgupta)। বৃহস্পতিবার ভোর ৬টা নাগাদ নিজের দক্ষিণ কলকাতার বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৭ বছর। পরিচালক সাহিত্যিকের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ বিনোদন ও সাহিত্য জগৎ।
বহুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন পরিচালক। কিডনির সমস্যা ছিল তাঁর। ডায়ালিসিস হত নিয়মিত। এমনকি এদিনও হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সে সুযোগ আর দিলেন না তিনি। বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের স্ত্রী সোহিনী দাশগুপ্ত জানান, ভোরবেলা তিনি দেখেন পরিচালকের শরীর ঠাণ্ডা। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় তাঁর। বুদ্ধদেব বাবুর দুই মেয়েই প্রবাসী। মুম্বইতে থাকেন তাঁরা। লকডাউনের মধ্যে দ্রুত কলকাতায় আসা সম্ভব নয় বলে আজই যত শীঘ্র সম্ভব প্রয়াত পরিচালক সাহিত্যিকের শেষকৃত্যের ব্যবস্থা করা হবে।
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের অকস্মাৎ প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমেছে সাহিত্য ও বিনোদন দুই মহলেই। বিশিষ্ট সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমি ওঁকে কবি হিসাবেই বেশি চিনতাম। আমার গল্প ‘দূরত্ব’ দিয়ে ওঁর পরিচালক হিসাবে সফর শুরু হয়। খুবই শক্তিমান কবি ছিল। বছর কয়েক আগে দেখা হয়েছিল। শরীর অসুস্থ ছিল তখন।”
বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের আত্মার শান্তি কামনা করে পরিচালক গৌতম ঘোষ জানান, দুজনে একই সঙ্গে ফিল্মি কেরিয়ার শুরু করেছিলেন। তাঁকে জোর করে ছবিতে অভিনয়ও করিয়েছিলেন বুদ্ধদেব বাবু। তাঁর মৃত্যুতে চলচ্চিত্র জগতের একটা বড় ক্ষতি হয়ে গেল বলে মন্তব্য করেন গৌতম ঘোষ। পরিচালক অনীক দত্তের কথায়, কলেজ জীবনে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের কাজ তাঁকে অনুপ্রাণিত করত। পরিচালকের প্রয়াণে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও।
চলচ্চিত্র জগতে বুদ্ধদেব দাশগুপ্তের পথচলা শুরু হয় একটি দশ মিনিটের তথ্যচিত্র দিয়ে, নাম ‘The Continent of Love’। তাঁর পরিচালিত পাঁচটি ছবি পেয়েছে জাতীয় পুরস্কার। এই তালিকায় রয়েছে লাল দরজা, চরাচর, মন্দ মেয়ের উপাখ্যান, বাঘ বাহাদুর ও কালপুরুষ। পরিচালক হিসাবেও দুবার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। সাহিত্য জগতেও তাঁর অবদান উল্লেখযোগ্য। কফিন, সুটকেস, রোবটের গান, হিমযোগ তাঁর শ্রেষ্ঠ কবিতাগুলির মধ্যে অন্যতম।