শুভেন্দু অধিকারী না দিলীপ ঘোষ পাল্লা ভারী কার? হচ্ছে ওজন

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ একুশের বিধানসভা নির্বাচনে কেমন ভাবে আশা পূরণ হয়নি বিজেপির। রাজ্যে দুশো জয়ের স্বপ্ন দেখলেও শেষ পর্যন্ত মাত্র সাতাত্তরেই থামতে হয়েছে তাদের। তবে একদিকে যখন বিজেপির আশা ভঙ্গ হয়েছে, তখনও অন্যদিকে স্বমহিমায় উজ্জ্বল ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। নন্দীগ্রাম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে রাজ্যের বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরাজিত করেছিলেন তিনি। তারপর এই মুহূর্তে তিনি রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও বটে। সেই সূত্র ধরেই এবার সামনে এসেছে একটি নতুন প্রশ্ন, শুভেন্দু অধিকারীর আগে অব্দি রাজ্য বিজেপির সবথেকে বড় মুখ ছিলেন দিলীপ ঘোষ। আর তারপরেই ছিলেন মুকুল রায়। কিন্তু ধীরে ধীরে শুভেন্দুর কাঁধ কি দীলিপবাবুর থেকেও বেশি চওড়া হচ্ছে বিজেপিতে? বিশেষত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দিল্লিতে সরাসরি বৈঠকের পর সামনে আসছে এমনই বেশকিছু জল্পনা।

Dsuvendu dilip 1

একথা যদিও ঠিক যে অনেকেই মনে করেন দিলীপ পন্থী নেতারা প্রথমে বেশ খুশি হয়েছিলেন শুভেন্দুর আগমনে। কারণ তাতে মুকুল রায়ের গুরুত্ব কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল। দিলীপ মুকুল দ্বন্দ্ব কারোরই অজানা নয়। কিন্তু বিশেষত নির্বাচনের পর থেকে ক্রমশ প্রতিযোগীর মুখ বদলেছে বলেই ধারণা রাজনৈতিক মহলের। অনেকের মতে এখন দীলিপবাবুর প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠেছেন শুভেন্দু অধিকারী। যদিও দিলীপ পন্থী নেতারা একথা মানতে মোটেই রাজি নন, তাদের মতে, রাজ্য বিজেপির সবচেয়ে সফল সভাপতি দিলীপ ঘোষ। তার পরিশ্রমের ফলেই দল আজ এই জায়গায় এসে পৌঁছেছে। এটা সবাই জানেন যে দিলীপদা বৈঠকের রাজনীতি করেন না। তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে ভালোবাসেন।

IMG 20210608 132845

একদিকে যখন দিলীপ পন্থী নেতারা এ ধরনের বক্তব্য রাখছেন তখন শুভেন্দুর সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর বৈঠক নিয়ে স্বয়ং দিলীপ ঘোষের গলাতেও ছিল হালকা অভিমানের সুর। তিনি বলেছিলেন, ‘‘শুভেন্দু কেন দিল্লি গিয়েছেন সেটা দিল্লির নেতারাই বলতে পারবেন।’’ অর্থাৎ তার কাছে এই বিষয়টি যে স্পষ্ট নয়, একপ্রকার জানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। একথা ঠিক যে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে দিলীপ ঘোষের জোরেই রাজ্যে ১৮টি সিট দখল করেছিল বিজেপি। কিন্তু বিধানসভা নির্বাচনে আশাভঙ্গ হয়েছে। একমাত্র শুভেন্দু ছাড়া তেমন উল্লেখযোগ্য জয় খুঁজে পাওয়া বেশ দুষ্কর। আর সেই কারণে অনেক নেতাই মনে করছেন বিজেপিতে কাঁধ অনেকটাই চওড়া হয়েছে শুভেন্দুর।

অনেকে এও বলেন, “মুকুল রায় দলে থাকবেন কিনা তা নিয়ে কেন্দ্রীয় নেতারাও চিন্তিত। এই অবস্থায় বাংলার রাজনীতিতে দিলীপের তুলনায় অভিজ্ঞ শুভেন্দুর উপর ভরসা রাখেন উচিত বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।” তবে একথা ঠিক যে সংঘ পরিবারের সমর্থন অনেকটাই দিলীপের দিকে। আর সেটাই তার বড় জোর বলে মনে করছেন অনেকে। কিন্তু বিজেপির অনেক রাজনৈতিক নেতার মতে, অনেক সাংসদই সেভাবে পছন্দ করেন না দিলীপ ঘোষকে। নির্বাচনের আগে এ নিয়ে ভাবার সুযোগ ছিল না ঠিকই, কিন্তু এখন এই বিষয়ে মাথা ঘামাতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

এমতাবস্থায়, কোন পক্ষের কথা ঠিক তা বলা খুব দুষ্কর। তবে সাম্প্রতিক কালে শুভেন্দুর গুরুত্ব যে অনেকটাই বেড়েছে এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। একদিকে যেমন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সরাসরি দিল্লিতে বৈঠক করেছেন তিনি। তেমনি অন্যদিকে বৈঠক করেছেন সর্বভারতীয় সম্পাদক ভূপেন্দ্র যাদব এবং অনির্বাণ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। এমনকি মোদি ঘনিষ্ঠ নেতাদের সঙ্গেও এই সফরে কথা বলেছেন শুভেন্দু। যার জেরে তার গুরুত্ব যে দিলীপ পন্থীদের কাছে কিছুটা আশঙ্কার কারণ হয়ে উঠবে এ নিয়ে বোধহয় কোনো সন্দেহ নেই।

Abhirup Das

সম্পর্কিত খবর