বাংলা হান্ট ডেস্কঃ পাকিস্তানে(Pakistan) মূল্যবৃদ্ধির কারণে ক্রমশ অগ্নিমূল্য হয়ে উঠেছে জিনিসপত্রের দাম। যা নিয়ে এখন যথেষ্ট ব্যাকফুটে ইমরান সরকার(Imran government)। জানা গিয়েছে পাকিস্তানে প্রতি কেজি চিনির দাম এখন প্রায় ১১০ টাকা। এমনকি রমজানের মাসেও প্রতি কেজি ময়দার দাম ছিল ৯৬ টাকা। কিন্তু কেন হঠাৎ এই মূল্যবৃদ্ধি, অনেক বিশ্লেষকের মতেই ২০১৯ সালের আগস্ট মাসের আগে মূল্যবৃদ্ধির পরিস্থিতি এতটা খারাপ ছিল না। তাহলে হঠাৎ এই মূল্য বৃদ্ধির কারণ কি?
কারণ একটাই, ভারতের সঙ্গে সমস্ত ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ করে দেওয়া। ২০১৯ সালের ৫ আগস্ট কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা (article 370) এবং অনুচ্ছেদ ৩৫ এ বাতিল করে ভারত। যার জেরে ভারতের সঙ্গে সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক রদ করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। বারবারই দেখা গিয়েছে সীমান্তে উত্তেজনা বাড়লেই তার প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়েছে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্কে। তা পুলওয়ামা কান্ডই হোক বা উড়ির ঘটনা।
যদিও ভারতের বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ততখানি প্রভাব পড়েনি যতটা মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তান ভারত থেকে আমদানি করে মূলত চিনি, কার্পাস এবং ওষুধপত্র। যার জেরে সমস্ত বাণিজ্যিক সম্পর্ক রদ হওয়ায় রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয়েছিল পাকিস্তানকে। ভারতের যেহেতু আমদানি তুলনায় রপ্তানি অনেকটাই বেশি, তাই যতটা ভুগতে হয়েছে পাকিস্তানকে ভারতের পরিস্থিতি ততখানি খারাপ হয়নি।
ভারত-পাক বাণিজ্য সম্পর্ক পুরোপুরি রদ হয়ে গেলে বেড়ে যায় নিত্য প্রয়োজনীয় ঔষধের দ্রব্যমূল্য। মূলত অ্যান্টি রেবিজ, পোলিও ভ্যাকসিন, টাইফয়েড প্রভৃতি রোগের ওষুধ ভারত থেকে আমদানি করে। যার জেরে বাণিজ্য বন্ধ হওয়ায় বেড়ে গিয়েছিল ওষুধের দাম। শেষপর্যন্ত তাই নিত্য প্রয়োজনীয় ওষুধের বাণিজ্যকে ছাড় দিতে হয় পাকিস্তানকে।
সাধারণত ভারত পাকিস্তানের চিনি ও কার্পাস রপ্তানি করে হাজার মিলিয়ন ডলারেরও বেশি। কিন্তু বর্তমানে তা বন্ধ হলেও ওষুধ এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত কেমিক্যাল রপ্তানি হয়েছে প্রায় ১৮২.২৬ মিলিয়ন ডলার। যার বদলে ভারত মূলত আমদানি করে বিভিন্ন ফল, বাদাম, সন্দক লবন, খনিজ দ্রব্য এবং তেল। যার মোট পরিমাণ ৩২৬ মিলিয়ন ডলার মত।
যার ফলে স্বাভাবিকভাবেই বেশি ক্ষতি হয়েছে পাকিস্তানের। এই মুহূর্তে মুদ্রাস্ফীতির পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২%। এমনকি পাকিস্তানের অর্থমন্ত্রীরা বারবার বাণিজ্য পুনরায় চালু করার কথা বললেও তা মানতে নারাজ ইমরান সরকার। যার জেরে এ পর্যন্ত বদল হয়েছে প্রায় চার জন অর্থমন্ত্রী। কিন্তু বর্তমান অর্থমন্ত্রী শওকত তারিনও একই কথা বলছেন।
কিন্তু কেন মানতে নারাজ ইমরান সরকার? পাকিস্তানি সাংবাদিকদের মতে দেড় বছর বাদেই রয়েছে নির্বাচন। আর এই সময়ে মৌলবাদী শক্তিকে কোনভাবেই অখুশি করতে রাজি নন ইমরান। এই কারণেই এই মুহূর্তে এ ধরনের বড় সিদ্ধান্ত
নিতে পারছে না পাকিস্তান। অন্যদিকে ভারত ৩৭০ পুনরায় বহাল করতে নারাজ। যার জেরে দু’দেশের বাণিজ্যিক সম্পর্ক আপাতত বিশবাঁও জলে।