দেবাঞ্জন কাণ্ডে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে পরস্পরকে দুষছেন তৃণমূলের দুই প্রভাবশালী নেতা

বাংলা হান্ট ডেস্কঃ ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে ধরা পড়েছে ভুয়ো IAS অফিসার দেবাঞ্জন দেব। আর গ্রেফতারির পরই একাধিক তৃণমূল নেতা-মন্ত্রী এবং পুলিশ কর্তার সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। বিজেপির তরফ থেকে বারবার অভিযোগ করা হচ্ছে যে, ভুয়ো IAS অফিসার দেবাঞ্জনের সঙ্গে তৃণমূলের যোগাযোগ ছিল। আর এই কারণে তাঁকে বারবার রাজ্যের একাধিক তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের সঙ্গে দেখা গিয়েছে। আর এবার সেই দায় ঝাড়তেই তৃণমূলের মধ্যে প্রকাশ্যে অন্তর্দ্বন্দ্ব দেখা দিল। শাসক দলের নেতারা নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে একে অপরের উপর কাঁদা ছোড়াছুঁড়ি করছেন।

ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন কাণ্ডে নাম জড়িয়েছে তালতলা তৃণমূলে শ্রমিক সংগঠনের নেতা অশোক চক্রবর্তী এবং তৃণমূলের ওয়ার্ড কো-অর্ডিনেটর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। আর এই কাণ্ড থেকে দায় ঝাড়তে তাঁরা একে অপরকে দোষারোপ করা শুরু করেছেন। অশোকবাবু জানিয়েছেন, ২০২০-এর কালীপুজোর সময়ে একটি রক্তদান শিবিরে দেবাঞ্জনের সঙ্গে তাঁর আলাপ হয়েছিল। যেই ক্লাবের তত্ত্বাবধানে ওই রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল, সেই ক্লাব কমিটির সদস্য তৃণমূল কংগ্রেস কো-অর্ডিনেটর ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়। অশোকবাবু জানান, ইন্দ্রাণীদেবীর মাধ্যমেই তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জনের যোগাযোগ হয়।

768 512 12277628 419 12277628 1624784696665

অশোকবাবু এও বলেন যে, ইন্দ্রাণীদেবীর এলাকায় একটি শেড তৈরি করতে টাকা দিয়েছিল দেবাঞ্জন। যদিও, অশোকবাবুর সমস্ত অভিযোগ খারিজ করে দেন ইন্দ্রাণী সাহা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি পরিস্কার জানিয়েছেন যে, ওনার সঙ্গে দেবাঞ্জনের কোনও ব্যক্তিগত সম্পর্ক বা যোগাযোগ নেই। তিনি বলেন, ‘আমি ওকে কোনদিনও দেখিই নি। আমার মোবাইল ঘাঁটলে ওঁর সঙ্গে কোনও কথা হয়নি কোনদিনও সেটা জানা যাবে। তবে আমার কিছু ছেলেদের চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল দেবাঞ্জন। আমি এর থেকে বেশি আর কিছুই জানিনা।”

ইন্দ্রাণীদেবী অভিযোগ করে বলেন যে, ব্যক্তিগত শত্রুতার কারণে অশোকবাবু তাঁর সঙ্গে দেবাঞ্জনের সম্পর্ক বের করার চেষ্টা করছেন। ইন্দ্রাণী জানান, ভুয়ো ভ্যাকসিন কাণ্ডে উচিৎ তদন্ত করে দোষীদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া দরকার। ইন্দ্রাণীদেবী পুলিশকে সবরকম তদন্ত করারও আশ্বাস দিয়েছেন। আরেকদিকে, তৃণমূলের শ্রমিক নেতা অশোকবাবু এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হওয়ারও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।

দেবাঞ্জন কাণ্ডে প্রকাশ্যে তৃণমূলের অন্তর্দ্বন্দ্ব আসার পর বিজেপির নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, এই কাণ্ডে শুধু ওঁরা দুজন নয়, আরও অনেক তৃণমূল নেতাই জড়িত রয়েছে। কান টানলে মাথা আসবে। কিন্তু রাজ্য পুলিশ সেই কান টানার ক্ষমতা রাখে না। ওঁরা সবকিছু ধামাচাপা দিয়ে দেবে। তাই প্রকৃত তদন্তের জন্য সিবিআই ডাকা হোক। সিবিআই তদন্ত হলেই দোষীরা উপযুক্ত সাজা পাবে।


Koushik Dutta

সম্পর্কিত খবর